অল্পদিনে মোটা হওয়া ও নিজেকে ফিট এবং হেলদি রাখতে যা করবেন
মোটা হলে যেমন নিজের কাছে খুব অস্বস্তি লাগে এবং দেখতে খারাপ লাগে একই সাথে চিকন হলেও দেখতে খারাপ লাগে । আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা মোটা হওয়ার জন্য অনেক পরিশ্রম করে থাকে। প্রিয় বন্ধুরা, আজকে আমরা জানবো অল্প দিনেই কিভাবে মোটা হওয়া যায় এবং নিজের শরীরকে ফিট এবং হেলদি রাখা যায়। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
নিজের বয়স এবং উচ্চতার তুলনায় শরীরের ওজন কম বা বেশি হওয়া খুবই সমস্যার একটা ব্যাপার। এতে করে অনেকেরই অনেক রকম কথা শুনতে হয়। কেউবা আনফিট বলে বিভিন্ন চাকরি থেকেও বঞ্চিত হয়ে যায়। তাই নিজেকে ফিট রাখা খুবই জরুরী।
ভূমিকা
মোটা হবো কিভাবে মোটা হওয়ার ওষুধের নাম কি কিভাবে স্থায়ীভাবে মোটা হওয়া যায় এসব লিখে আমরা প্রতিনিয়ত গুগলে সার্চ করে থাকি। google আমাদের অনেক সল্যুশন দিয়ে থাকে। কিন্তু সব ক্ষেত্রে সব সল্যুশন কিন্তু সঠিক হয় না। আমাদের বয়স এবং বি এম আই অনুযায়ী সঠিক খাদ্য তালিকার মাধ্যমে আমাদের শরীরকে ফিট রাখা জরুরী।
অল্প দিনে মোটা হওয়ার উপায়
সমস্যা যখন রয়েছে তখন সেটা সমাধান অবশ্যই রয়েছে। অল্প সময়ে মোটা হব কিভাবে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ব্যায়াম করা
ব্যায়াম আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী । এখন অনেকেই হয়তো ভাবতে পারেন যে ব্যায়াম করলে তো শরীরের ওজন কমে যায়। কিন্তু এই ধারণা একদম সঠিক নয়। নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম আছে যেগুলোর মাধ্যমে শরীরের ওজন বাড়ানো যায়। ফলে আমাদের শরীরকে মোটা এবং ফিট দেখায়। অনেকে জিম করতে পারেন। জিমের ট্রেনাররা আমাদেরকে বলে দিবেন যে কোন ব্যায়াম আমাদের শরীরের জন্য পারফেক্ট ।
বারবার খাবার গ্রহণ
কি আছে আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা একসাথে অনেকগুলো খাবার খেয়ে ফেলে। কিন্তু একসাথে অনেকগুলো খাবার না খেয়ে প্রতি দুই ঘণ্টা অন্তর অন্তর খেতে হবে। এতে করে আপনার শরীরের পুষ্টির পাশাপাশি ওজন বৃদ্ধি পাবে। ফলে আপনি মোটা হতে পারবেন।
খাবারের রাখুন কার্বোহাইড্রেট
মোটা হওয়ার জন্য প্রতিদিন খাবারের তালিকায় কার্বোহাইড্রেট রাখার কোন বিকল্প নেই। এখন অনেকেই মনে প্রশ্ন আসতে পারে কার্বোহাইড্রেট আসলে কি। ভাত ও রুটি কার্বোহাইড্রেট এর প্রধান উৎস । তাই প্রতিদিন অন্তত দিনে দুইবার কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাবেন।
দ্রুত ওজন বাড়াবে এরকম খাবার
আমরা যারা অতিরিক্ত চিকন তারা ওজন বাড়ানোর জন্য বা মোটা হওয়ার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে থাকি। অনেকে অনেক রকম খাবার খেয়েও কোন সুফল পায় না। তবে নিয়ম করে এই কয়েকটি খাবার খেলে অবশ্যই খুব কম সময়ে আপনার শরীরের ওজন বাড়বে ।
পনির বা চিজ
পনিরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে চর্বি। দুধ দিয়ে তৈরি হওয়ায় এই খাবারটির মধ্যে রয়েছে উচ্চ প্রোটিন ক্যালসিয়াম এবং কোলেস্টেরল। এই উপাদান গুলো আমাদের শরীরে ওজন বাড়তে সহায়তা করে। তাই মোটা হতে চাইলে পনিরের কোন বিকল্প নেই।
কলা
কমবেশি অনেকেরই প্রিয় ফল কলা। শরীরের ওজন বাড়ানোর জন্য ডাক্তারেরা কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। কলায় রয়েছে বিভিন্ন রকম অধিক পরিমাণে পটাশিয়াম এবং বিভিন্ন ভিটামিন। তাই ওজন বাড়াতে চাইলে নিয়মিত কলা খান।
ডিম
প্রোটিনের উৎস হল ডিম। শরীরের ওজন বাড়ানোর জন্য প্রোটিন খুবই দরকার। তাই মোটা হতে চাইলে সকাল বিকাল ডিম খাওয়া দরকার ।
আলু
খুবই কমন একটি সবজি আলু । আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট। কার্বোহাইড্রেট পেশীকে বাড়াতে সাহায্য করে।তাই মোটা হতে চাইলে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আলুর তরকারি রাখুন।
রুটি
এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার। প্রতিদিনের সকালের নাস্তায় রুটি রাখলে সারাদিন শরীরে প্রচুর ক্যালোরি পাওয়া যায়। তাই ওজন বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় রুটি রাখা দরকার।১০০ গ্রাম রুটিতে আছে 170 ক্যালোরি।
নিজেকে ফিট এবং হেলদি রাখার উপায়
আমরা যারা স্বাভাবিক কাজকর্মের মধ্যে থাকি আমার সবসময় ব্যায়ামের দিকে খুব একটা নজর দিতে পারি না। কিন্তু শরীরকে তো ফিট রাখা চায় তাই না। শরীরের বাড়তি মেয়ের ঝরাতে আপনার পরিশ্রম দরকার। আপনি চাইলেই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন শরীরের অতিরিক্ত ওজন পোড়াতে হবে ক্যালরি। আমরা যে পরিমাণ ক্যালরি গ্রহণ করি সে পরিমাণ ক্যালরি যদি ভাঙতে পারি,
তাহলে আমাদের শরীরকে ঠিক রাখা যাব। ফিট রাখা মানেই যে ব্যায়াম করা বা জিম করা বিষয়টা এরকম না। বরং দৈনন্দিন জীবনে কাজের ফাঁকে একটু বুদ্ধি করে চললেই আপনি আপনার শরীরে ফেটে রাখতে পারবেন । চলুন তাহলে একটু চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক কিভাবে আমরা আমাদের শরীরে ফিট রাখতে পারিঃ
- প্রতিদিন মর্নিং ওয়াক করুন
- লিফট ব্যবহার না করে পায়ে হেঁটে দিয়ে উঠানামা করুন।
- প্রতিদিন গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
- খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাবেন।
- নিয়মিত ঘুমাবেন।
- চিনি খাওয়ার অভ্যাস বাদ দেন।
- নিজের কাজগুলো যেমন কাপড় ধোয়া, ঝাড়ু দেওয়া্, কাজগুলো নিজেই করবেন।
- প্রতিবেলায় খাবারের সঙ্গে সালাদ খাবেন।
প্রচুর খাওয়ার পরেও স্বাস্থ্যবান না হওয়া
সর্বপ্রথম আমাদের মনে রাখতে হবে আমাদের সকলের বডি স্ট্রাকচার একরকম নয়। আমাদের শরীরের ওজন আমাদের খাদ্যের পরিমাণের ওপর নির্ভর করলেও আরো অনেক বিষয় আছে যার ওপর নির্ভরশীল ।
জেনেটিকস
আমাদের অনেক ফ্যামিলি আছে যারা সকলেই জন্মসূত্র মোটা। সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির মোটা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। আবার অনেক ফ্যামিলি আছে যাদের জন্মসূত্রই বেশিরভাগ রোগা । তারা অনেক চেষ্টা করার পরেও মোটা হতে পারে না। এ বিষয়টা পুরোপুরি আমাদের হাতের বাইরে।
হরমোন
আমাদের এক একজনের দেহে হরমোনের পরিমাণ একেক রকম। বয়স ও ব্যক্তিবিশেষে হরমোনের পরিমাণ কম বেশি হয়ে থাকে। থাইরয়েড হরমোন, ইস্ট্রোজেন, প্রজেস্টেরন ইত্যাদি হরমোনের তফাতের কারণে আমাদের শরীরের রোগা বা মোটা হওয়া নির্ভর করে ।
ঘুম
ঘুম আমাদের শরীর খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যারা বেশি বেশি দুশ্চিন্তা করে তাদের ওজন বাড়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। আর তুই চিন্তা করলে ঘুম না হওয়াটাই খুব স্বাভাবিক। দুষ্টিতা করলে আমাদের শরীরের এড্রেনাল ক্লান্ড হতে কটি স্যার হরমোন বের হয়। যার ফলে পেটে ফ্যাট জমতে থাকে ।
এছাড়াও আরো অনেক বিষয় আছে যেমন আমরা দীর্ঘদিন ধরে কোন ওষুধ খাই কিনা বা আমাদের দেহের ভেতরে কোন ইনফেকশন আছে কিনা, আমরা কতক্ষণ পরপর ভাত খাচ্ছি, কতক্ষণ পরপর পানি পান করছি ইত্যাদি। আরেকটি বিষয় আপনাদের জানিয়ে রাখি যারা খাবার খুব বেশি চিবিয়ে খায় তারা মোটা খুব সহজে হয় না।
এর কারণ যারা ধীরে ধীরে খাবার চিবিয়ে খায় তাদের পরিপাক নালি থেকে এক ধরনের পদার্থ বের হয় যা আমাদের মস্তিষ্ককে জানিয়ে দেই যে যথেষ্ট খাওয়া হয়েছে। অন্যদিকে তাড়াহুড়ো করে ভাত গিলে খেলে হরমোন গুলো যেমন বের হয় কম, তেমন মস্তিষ্ক ওই সময় সন্তুষ্ট হয় না । ফলে আমরা মোটা হয়ে যাই বা আমাদের শরীর অতিরিক্ত বেড়ে যায়।
শেষ কথা
নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য যেটুকু ওজন বাড়ানো বা কমানোর দরকার আমাদের ঠিক সেটুকুই করা উচিত। অতিরিক্ত ওজন বা অতিরিক্ত চিকন হওয়া কোনটাই ভালো দেখায় না। আবার অনেকে মোটা হওয়ার জন্য বিভিন্ন রকম ওষুধ সেবন করে থাকে। এগুলো থেকে একদমই বিরত থাকা দরকার। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়া যাবে।
প্রিয় বন্ধুরা আমরা আজকের এই আর্টিকেল থেকে জানতে পারলাম কিভাবে খুব কম সময়ে মোটা হওয়া যায় এবং নিজেকে ফিট এবং হেলদি রাখা যায়। আশা করি আপনারা সকলেই আমার পোস্টটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন। যদি এই পোস্টটি আপনার উপকারে এসে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। আজকে এই পর্যন্তই । সকলে ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন এতক্ষণ আমার সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url