রান্নাতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা কতটুকু স্বাস্থ্যকর চলুন জেনে আসি

রান্না করার ক্ষেত্রে তেল খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। রান্নায় কোন তেল ব্যবহার করবেন এটি নিয়ে অনেকেই খুব চিন্তিত থাকেন। প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আলোচনা করব রান্নাতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা আমাদের স্বাস্থ্যর জন্য কতটুকু উপকারী।
রান্নাতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা কতটুকু স্বাস্থ্যকর চলুন জেনে আসি
তেল খাবারের গুণগত মান নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিবিদদের মতে সঠিক তেল বাছাই করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনি সঠিক পরিমাণে রান্নাতে তেল ব্যবহার করাটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।

ভূমিকা

বাজারে বিভিন্ন রকম তেল থাকার কারণে অনেকেই অনেক দ্বিধার মধ্যে ভুগেন। কারণ তৈলাক খাবার থেকে শুধু ওজনই বাড়ে না এতে করে আমাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। কোন তেলে কতটুকু পুষ্টি রয়েছে এবং কোন তেলে কি কি উপকারিতা রয়েছে এ বিষয়ে অনেকেই জানেন না। আজকে আমরা জানবো আমাদের রান্নায় কেন আমরা অলিভ অয়েল ব্যবহার করব।

রান্নায় কোন তেল ব্যবহার করবেন

সূর্যমুখী তেল

সূর্যমুখী তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অলিক এসিড। এই তেল ভাজা পড়ার জন্য খুব ভালো বলে মনে করা হয়। তবে যে কোন উদ্ভিজ্জ তেল বারবার গরম করলে এর পুষ্টিগুণ আগুন নষ্ট হয়ে যায়। তবে সব ধরনের রান্নায় সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করতে পারেন।
আমেরিকার জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষায় দেখা গেছে যে তেলের পরিবর্তে রান্নায় সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করা ভালো। রান্নায় সূর্যমুখী তেল বাবহারের ফলে আমাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে।

সরিষার তেল

মুলত সরিষার বীজকে পিষে এই তেল বের করা হয়।সুস্বাদু খাবার থেকে সুরু করে আমাদের শরীর মাসাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে এই তেল।এতে অমেগা৩ ও অমেগা৬ ফ্যাটি এসিড থাকে। এবং এতে ফ্যাট কম থাকে। এই তেল শুধু খাবারের গন্ধ এবং স্বাদ বাড়াই না বরং এটি ত্বক ও জয়েন্টের ব্যথা নিরাময় করে।

বাদামের তেল

বাদামের তেলে উপকারি অমেগা৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে।যা আমাদের হৃদপিণ্ডর স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। তবে আমাদের মধ্যে যাদের এলারজি সমস্যা রয়েছে তাদের এই তেল না খাওয়ায় ভাল।

তিলের তেল

তিলের তেল ভাজাভাজির জন্য খুবই ভাল একটি তেল। এতে রয়েছে পলিউন ফ্যাটি এসিড যা আমাদের সাস্থের জন্য ভীষণ উপকারি।

নারকেল তেল

নারকেল তেল স্বাস্থ্যকর রান্নার তেল। এতে রয়েছে মাঝারি ফ্যাটি এসিড। এটি শরীরের ফ্যাট ঝরিয়ে দ্রুত শক্তি উৎপাদন করতে সহায়তা করে। তাছারাও রান্নায় এই তেল ব্যবহার করলে খাবার হজম হয় খুব সহজেই। এছারাও নারকেল তেল আমাদের বিপাক ক্রিয়া উন্নত করে।রান্না ছাড়াও চুল ও ত্বকের জন্য এই তেল বেশ উপকারি।

চীনাবাদাম তেল 

চীনাবাদাম তেলে রয়েছে উপকারী ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড যা আমাদের হার্ট কে স্বাস্থ্যকর রাখে। তবে আমাদের মধ্যে যাদের এলারজি সমস্যা রয়েছে তাদের এই তেল না খাওয়ায় ভাল।

ঘি

যাদের শরীরে অনেক বেশি পরিমান পুষ্টির দরকার এবং সাস্থের অবনতি ঘটছে তাদের জন্য রান্নার ক্ষেত্রে তেলের পরিবর্তে ঘি ব্যবহার করা উচিত। রান্নায় ঘি বাবহারের ফলে আমাদের শরীরের দুর্বলতা কাটে।

রান্নায় কেন অলিভ অয়েল ব্যবহার করবেন

অলিভ অয়েল সর্বপ্রথম ব্যবহার শুরু হয় ভূমধ্যসাগরীয় সভ্যতায়।এর মধ্যে বলা যায় রোমান এবং গ্রীকদের নাম।বহু শতাব্দী ধরে তারা অলিভ অয়েল ব্যাবহার করে আসছেন। রান্নায় অলিভ অয়েল ব্যবহার অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদরা। কেন রান্নায় অলিভ অয়েল ব্যবহার করবেন চলুন জেনে নেইঃ
  • অলিভ অয়েলে আছে জিরো ক্যালরি। ফলে অলিভ অয়েল খেলে আমাদের শরীরের ওজন কমে।
  • অলিভ অয়েল আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায়।
  • অলিভ অয়েলে রয়েছে এক ধরনের ফ্যাট যা আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
  • এটি শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়।
  • স্কিন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে অলিভ অয়েল।
  • মস্তেস্কের টিস্যুকে রক্ষা করে।
  • অলিভ অয়েল আমাদের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • ঔষধের দৈনিক ডোজ কমাতে পারে অলিভ অয়েল।
সম্প্রীতি রান্নার তেল হিসাবে সবথেকে অস্বাস্থ্যকর তেল হিসাবে বেছে নিয়েছেন সয়াবিন তেলকে।এছারাও আরও অনেক ক্ষতিকর তেল শনাক্ত করেছেন তারা।তাই বিজ্ঞানীরা রান্নায় সেরা তেল হিসাবে বেছে নিয়েছেন অলিভ অয়েলকে।

অলিভ অয়েলের প্রকারভেদ

তাহলে আপনি কি সুসাস্থের জন্য অলিভ অয়েল ব্যাবহারের কথা ভাবছেন! তাহলে আপনাকে জেনে নিতে হবে অলিভ অয়েল নিয়ে খুঁটিনাটি সবকিছু। প্রিয় পাঠক এতক্ষন আমরা অলিভ অয়েল নিয়ে অনেক কিছু জানলাম। এখন জানবো অলিভ অয়েল কত রকমের হতে পারে সে বিষয়ে। চলুন তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাকঃ

এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল

অলিভ অয়েলের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত অলিভ অয়েল হল এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল।মাখনের বিকল্প হিসাবে এই অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।

ক্লাসিক অলিভ অয়েল

হালকা ভারতীও রান্নায় স্বাদ বাড়িয়ে দেয় এই তেল।এছারাও পাস্তা, ফ্রাইড রাইস রান্নাতে এই তেল ব্যবহার করা যায়। শুধু রান্না নয় ত্বক ও চুলের জন্য এই তেল ব্যবহার করা যায়।
লাইট ফ্লেভার অলিভ অয়েল
হাল্কা রং ও মৃদু গন্ধের জন্য এটি জনপ্রিয় একটি তেল। প্রতিদিনের রান্নায় অনায়াসে এটি ব্যবহার করতে পারেন।

শেষকথা

প্রিয় পাঠক আজকে আমরা জানলাম অলিভ অয়েল নিয়ে অনেক বিষয়। রান্না তে অলিভ অয়েল কতটুকু সাস্থম্মত তা নিয়ে আমরা বিস্তারিত জানলাম। আশা করি আমার আর্টিকেলটি পড়ে সবাই উপকৃত হয়েছেন। আজকে এই পর্যন্তই। এতক্ষণ আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url