বৃষ্টির জলের ব্যবহার ও উপকারিতা এবং জাদুকরী সব কার্যকারিতা জানুন

বৃষ্টির জলের ব্যবহার ও উপকারিতা এবং জাদুকরী সব কার্যকারিতা জানুন আজকের আর্টিকেলে। বৃষ্টির পানিতে ভিজতে কার না ভালো লাগে! তবে আমাদের মধ্যে অনেকেরই ধারণা যে বৃষ্টির পানিতে ভিজে গোসল করলে ঠান্ডা লাগার সমস্যা হবে। কিন্তু এই ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়। প্রিয় পাঠক আজকে আমি আপনাদের জানাবো বৃষ্টির জলের ব্যবহার ও উপকারিতা এবং জাদুকরী সব কার্যকারিতা জানুন সম্পর্কে।
বৃষ্টির জলের ব্যবহার ও উপকারিতা এবং সংরক্ষন নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানুন
বৃষ্টির পানি রয়েছে অনেক ধরনের উপকারিতা। কিভাবে বৃষ্টির পানি দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগাতে পারেন সে বিষয়গুলো নিয়ে আজকে আলোচনা করব। চলুন তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাক।

ভূমিকা

বৃষ্টির জলের ব্যবহার ও উপকারিতা এবং জাদুকরী সব কার্যকারিতা জানুন এবং জানতে হলে আমার আর্টিকেলের সাথেই থাকুন। বৃষ্টির জল প্রকৃতির সবচেয়ে বিশুদ্ধ একটি জল। প্রাকৃতিক এই জলে অশুদ্ধ কোন কিছুই নেই। তবে বৃষ্টির জল পান করা এবং বিভিন্ন কাজে লাগানোর আগে সেগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে পরিষ্কার করে নেওয়া দরকার। বৃষ্টির জলে রয়েছে প্রাকৃতিক খনিজ পদার্থ যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী।

বৃষ্টির জলের ব্যবহার ও উপকারিতা এবং জাদুকরী সব কার্যকারিতা জানুন

বৃষ্টির জলের ব্যবহার ও উপকারিতা এবং জাদুকরী সব কার্যকারিতা জানুনঃ

চুলের সুস্বাস্থ্য

বৃষ্টির জলে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যালকাইম যা আমাদের মাথার ত্বকের ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে এবং মাথার ময়লাকে দূর করতে সাহায্য করে। এবং একইসাথে চুলের গোড়া মজবুত করে তুলে।
 তাই বৃষ্টির জল ব্যবহার করলে আমাদের চুলের রূপকথা কমে যায় এবং অধিক উজ্জ্বল ও ঝলমলে দেখায়। এছাড়াও বৃষ্টির জল ব্যবহার করলে আমাদের মাথার খুশকি সমস্যা দূর হয়ে যায়।

কানের সমস্যা

বৃষ্টির জলের আরেকটি অন্যতম উপকারিতা হচ্ছে কানের সমস্যা দূর হওয়া। কানের ব্যথা এবং ইনফেকশন দূর করতে বৃষ্টির জলের কোন বিকল্প নেই।

চর্ম রোগের সমাধান

বৃষ্টিতে ভিজলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের চর্ম রোগের সমস্যা দূর হয়ে যায়। বিশেষ করে শরীরের চুলকানি বা ঘামাচির সমস্যা থাকলে নিমিষেই দূর করে দেয় বৃষ্টির জল। এছাড়াও শরীরের চামড়া খসখসে হয়ে থাকলে বৃষ্টির পানি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কাজ করে।

ত্বকের সৌন্দর্য

ভারী বৃষ্টির পর যে জলীয়বাষ্প উৎপন্ন হয় তা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য এবং ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী একটি উপাদান। এই ধরনের জলীয় বাষ্প উৎপন্ন হওয়ার ফলে পরিবেশে থাকা ক্ষতিকর জীবাণুদের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং ত্বক উজ্জ্বল ও নমনীয় করে তোলে। বৃষ্টির জলে আমাদের ত্বকের ঘামাচি দূর হয়ে যায়। ত্বকের কোন জ্বালা পোড়া থাকে না। 

শরীরের বিষাক্ত উপাদান

বৃষ্টির জল পান করার ফলে আমাদের দেহে থাকা বিষাক্ত উপাদান গুলো বের করে দেয়। এবং আমাদের হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। এই পানি রক্তের পি এইচ লেভেলকে স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে আসে ফলে আমাদের অ্যাসিডিটি সমস্যা দূর হয়ে যায়।

পেটের সমস্যা

বৃষ্টির জলের মধ্যে থাকা অ্যালকালাইল এসিডিটি কমায় এবং হজম শক্তি বাড়ায়। এছাড়াও এটি আমাদের ক্যান্সারের প্রচুর বৃদ্ধি রুখে দাঁড়াতে সাহায্য করে। এটি রোগীদের ক্ষেত্রে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মত কাজ করে থাকে। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে সংরক্ষণ করে রাখা বৃষ্টির পানি দুই থেকে তিন চামচ খেতে পারলে আমাদের পাকস্থলীর সব সমস্যা দূর হয়ে যায়।

ভিটামিন বি-১২

বৃষ্টির পানি খুব হালকা এবং অ্যালকালাইল সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে কিছু অনুজীব রয়েছে যারা আমাদের বিপাক ক্রিয়ার মাধ্যমে ভিটামিন বি-১২ তৈরি করতে পারে। সুতরাং আপনার দেহে যদি ভিটামিনের অভাব থাকে তাহলে নিয়মিত 10 থেকে 15 মিনিট বৃষ্টির পানিতে ভিজতে পারেন। মনে রাখবেন অবশ্যই বৃষ্টির পানিতে ভেজার পর সাবান দিয়ে ভালো মতো গোসল করে নিতে হবে।

শ্বাস প্রশ্বাস প্রক্রিয়া উন্নত করে

বৃষ্টির সময় অনেক হাওয়া বাতাস বইতে থাকে। আর এই সময়ে দেহের বায়ুর প্রবেশ করে আমাদের শ্বাস প্রশ্বাস এর উন্নতি ঘটাতে পারে। সেই সঙ্গে দূর হয় আমাদের শরীরে অবস্থান করা বিভিন্ন ধরনের দূষিত পদার্থগুলো। এজন্য আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকারিতার কারণে আমরা বৃষ্টির পানিতে গোসল করতে পারি।

মানসিক অবসাদ কমায়

আচ্ছা বৃষ্টির সময় মাটি থেকে যে গন্ধ বের হয় তা কখনো নাকে এসেছে? নিশ্চয়ই এসেছে। এই গন্ধটা যতটা পারেন মন প্রাণ ভরে শরীরের ভেতরে নেই দেখবেন আপনার মন প্রাণ ভালো হয়ে যাবে। গবেষকদের ভাষায় এই গন্ধকের সাধারণত বলা হয় পেট্রিকোর। বৃষ্টি যখন মাটিতে পড়ে তখন মাটিতে উপস্থিত এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া বিশেষ করে এক ধরনের কেমিক্যাল ছড়িয়ে দেই। যার ফলে এমন গন্ধ বের হতে থাকে। আর এই গন্ধ আমাদের মানসিক অবসাদ কমাতে সাহায্য করে।

মন খুশি হয়

বৃষ্টিতে ভিজলে দেখবেন আমাদের মন ভালো হয়ে যায়। আমরা খুব প্রশান্তি অনুভব করি। বৃষ্টিতে ভিজলে শরীরে এন্ডোরফ্রিন ও সেরাটনিন নামক এক ধরনের হরমোনের নিঃস্ব হয়ে যা আমাদের আনন্দের অনুভূতি দেয়। এ কারণে বৃষ্টিতে ভিজলে আমাদের মন ভালো হয়ে যায়। তাই সুযোগ পেলেই আপনি ভুল বুঝতে আপনার মন খুশি করে নিতে পারেন।

বৃষ্টির জল সংরক্ষণ এবং শোধন প্রক্রিয়া

প্রিয় বন্ধুরা এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম বৃষ্টির জলের ব্যবহার ও উপকারিতা এবং জাদুকরী সব কার্যকারিতা সম্পর্কে। চলুন এখন জেনে নেই এই বৃষ্টির জল কিভাবে সংরক্ষণ এবং শোধন করবেন সে সম্পর্কে।বর্ষার মৌসুমে আমাদের প্রত্যেকেই জানা জরুরী বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ এবং কারণ শোধন পদ্ধতি সম্পর্কে। কারণ সরাসরি বৃষ্টির জল খাওয়া সঠিক নয়।, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ধুলাবালি এবং ব্যাকটেরিয়া। তাই আমাদের খাওয়ার উপযোগী করে তুলতে হবে।

 বৃষ্টির জল সংরক্ষণ প্রক্রিয়া বা রেইন ওয়াটার কালেকশন সিস্টেম স্থাপন করে আপনি বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন দীর্ঘদিন। এ প্রক্রিয়া সাধারণত মাটির নিচে দীর্ঘ একটি ট্যাঙ্ক স্থাপন করা হয়। আর যখন বৃষ্টি শুরু হয় তখন সরাসরি ট্যাংকে পানি জমা হয়। ঠিক এর সাথে ফিল্টার এবং পাম্প যন্ত্র থাকবে। সেই পানি ফিল্টার এবং পাম্প হয়ে আমাদের কাছে চলে আসবে।

 বৃষ্টির জলের এ ধরনের সংরক্ষণ প্রক্রিয়া খুবই ব্যয়বহুল হতে পারে। তাই অভিজ্ঞ লোকের মাধ্যমে এ ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত।আবার অল্প পরিমানে বৃষ্টির জল সংরক্ষন করতে বড় বালতি বা ড্রাম ব্যবহার করতে পারেন।তবে এই পানি খুব কম সময়ের মধ্যে ব্যবহার করে শেষ করে ফেলতে হবে।কারন বেশি সময় ধরে জমিয়ে রাখলে এই পানিতে বিভিন্ন রকম মশা বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমন ঘটে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক বৃষ্টির জলের আরো কিছু উপকারিতা সম্পর্কে

বৃষ্টির জলের প্রচুর উপকারিতা রয়েছে যা আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেনা। আরো কি কি কাজে বৃষ্টির জল ব্যবহার করা যায় এ নিয়ে আরো কিছু টিপসঃ
  • বৃষ্টির জল শুধু মানুষের জন্য নয়, বিভিন্ন ধরনের প্রাণী চারা গাছ এসবের জন্য অনেক উপকারী।
  • বৃষ্টি হলে আমাদের বাড়ির গাছপালা শক্তিশালী হয়ে যায়।
  • এছাড়াও মাটিতে যখন বৃষ্টির জল পড়ে তখন বিভিন্ন রকম চারা গাছ হয়ে থাকে, ফলে দেখতে সুন্দর লাগে।
  • জীবজন্তু যেমন বিড়াল কুকুর ইত্যাদি প্রাণী গুলো যখন বৃষ্টির জলে ভিজে তখন তাদের স্বাস্থ্যের অনেক উপকার হয়। এটা তাদের শরীরে প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়।
  • এছাড়াও পাখির ও কীটপতঙ্গ বৃষ্টির পানি পান করতে পারে যা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকার।
  • বৃষ্টির জল দিয়ে কাপড়চোপড় ধুয়ে দিলে কাপড়ের উজ্জ্বলতা বেড়ে যায়। এবং তার পাশাপাশি স্বাভাবিক জলের তুলনায় বৃষ্টির জলে সাবান এবং তিলে অনেক বেশি কাজ করে।
  • বৃষ্টির জলে গোসল করলে আমাদের শরীর এবং চুল, ত্বক দুটোই অনেক ভালো থাকে।
  • বৃষ্টির জল দিয়ে জিনিসপত্র ধুয়ে দিলে বা পরিষ্কার করলে সেগুলো নতুনের মত চকচকে হয়ে যায়।
  • বৃষ্টির পানি ফসলে পড়লে ফসলের প্রচুর উপকার হয় এবং ফসলের পতঙ্গ গুলো সব মরে যায়।
বর্তমানে ভালো জল পাওয়াটা অনেক কঠিন একটি বিষয় হয়ে গেছে। তাই বৃষ্টির জল আমরা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক উপকার হবে। আসুন আমরা আজকে থেকে বৃষ্টির জল আর নষ্ট না করে সংরক্ষণ করে আমাদের কাজে লাগায়।

শেষকথা

এতক্ষণ ধরে আমরা বৃষ্টির জলের ব্যবহার ও উপকারিতা এবং জাদুকরী সব কার্যকারিতা জানুন সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম। তাহলে আর দেরি কেন, আপনারা সকলেই এই টিপস গুলো ফলো করার চেষ্টা করবেন।আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন।
সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। আমার আজকে এই পর্যন্তই। দেখা হবে পরের কোন পোস্টে। আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url