ঘরে বসে প্রাকৃতিকভাবে মাথার চুল ঘন ও সিল্কি করার উপায় জানুন

 বিভিন্ন কারণে চুল উঠে যেতে পারে,কমে যেতে পারে চুলের ঘনত্ব। কিন্তু ঘন ও লম্বা চুল ফিরে পাওয়া মোটেও সহজ কাজ নয়। প্রিয় পাঠক আজকে আমরা জানবো ঘরোয়া উপায়ে চুল লম্বা ও ঘন করবেন কিভাবে।

ঘরে বসে প্রাকৃতিকভাবে মাথার চুল ঘন ও সিল্কি করার উপায় জানুন

ত্বক ও চুলের যত্নে আমরা বিভিন্ন রকম ঘরোয়া জিনিসপত্র ব্যবহার করে থাকে। এবং প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করার ফলে অন্যান্য উপাদান ব্যবহার করার তুলনায় আমরা বেশি ভালো ফলাফল পেয়ে থাকি।

ভূমিকা

প্রতিদিন আমাদের দেশে যে হারে ভীষণ বাড়ছে তাতে আমাদের শারীরিক এবং বাহ্যিক অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্যের মাত্রায় ঝুঁকিতে আছে। আমরা তারপরেও বাইরে থেকে দিন শেষে বাড়ি ফিরে আসলে হাতে মুখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলে। কিন্তু চুল ধোয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। প্রতিদিন বাইরের ধুলোবালি আমাদের চুলের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর।

চুলের যত্ন

অনেকেই আমরা প্রতিনিয়ত ইন্টারনেটে সার্চ করে থাকি কিভাবে চুল লম্বা করব কিভাবে চুল ঘন করব এগুলো বিষয় নিয়ে। তবে শীতকালে অনেকের চুল পড়ার সমস্যা অনেকটাই বেড়ে যায়। আবহাওয়ার পরিবর্তন ও বাতাসের আর্দ্রতার কারণে শরীরের ওপর অনেকটাই প্রভাব ফেলে আমাদের।

 এছাড়াও অনেকের খুশকির কারণে চুল পড়ে যায়। তবে ঘরোয়া কিছু উপাদান দিয়ে চুল লম্বা এবং ঘন করা যায় সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা হলোঃ

নিয়মিত তেল দেওয়া

তেলের কথা আসলে আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা নিয়মিত তুলে দেন না। কিন্তু আমাদের চুলে খুব সুন্দর ভাবে তেল ম্যাসাজ করা খুবই জরুরী একটি বিষয়। হাতে পরিমাণ মতো তেল নিন এবং সেটি স্কাল্পে ভালোভাবে মেসেজ করুন। নারকেল তেলের সাথে অলিভ অয়েল বা ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।

হেয়ার প্যাক ব্যবহার

আমাদের প্রত্যেকের উচিত সপ্তাহে একদিন হেয়ার প্যাক ব্যবহার করা। এতে করে আমাদের চুলের গোড়া পরিষ্কার থাকে। আর চুলের গোড়া পরিষ্কার রাখলে চুল ভালো থাকে। এছাড়াও পাশাপাশি আপনার চুলের গোড়ার প্রোটিন প্রয়োজন। তাই সপ্তাহে একদিন বিভিন্ন ধরনের হেয়ার প্যাক লাগানোর চেষ্টা করুন। হেয়ার প্যাকে কি কি লাগাবেন সে সম্পর্কে জানুনঃ

ডিম

ডিমে রয়েছে বিভিন্ন রকম পুষ্টি গুনাগুন। এর বিভিন্ন পুষ্টি গুনাগুন আমাদের চুল পড়া কমতে সাহায্য করে। একটা ডিম ভেঙে এর সাদা অংশ আলাদা করে নিন। তার মধ্যে মধু এবং কফি দিয়ে চুলে লাগিয়ে রাখুন। ৩০ মিনিট পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

মেথি

মেথিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং নিকোটিন অ্যাসিড। এক চামচ মেথি রাতে ঘুমানোর আগে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে সাথে একটি ডিম মধু দিয়ে পেস্ট বানিয়ে চুলে লাগান। কিছুক্ষণ পরে চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

গ্রিন টি

গ্রিন টিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। তাই দিনটি ভালোভাবে ফুটিয়ে ছেকে নিয়ে চুলের গোড়ায় এক ঘন্টা লাগিয়ে রাখুন। এক ঘন্টা পর নরমাল পানি দিয়ে চুল ধুয়ে শুকিয়ে নিন।

চাল

চালে রয়েছে বিভিন্ন রকম পুষ্টিগুণ। চালে থাকা বিভিন্ন পুষ্টিগুণ আমাদের চুল পড়া কমায় এবং চুল মজবুত করে। তাই কোন রকম খাটনি ছাড়া চুল সুন্দর করতে চাল ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমে চাল ভিজিয়ে রাখুন কয়েক ঘন্টা। তারপর চালের পানি দিয়ে ভালো ভাবে চুল ধুয়ে নিন। এক ঘণ্টা পরে শ্যাম্পু করে চুল শুকিয়ে নিন। চালের পানিতে রয়েছে খনিজ এবং ভিটামিন। এই পানি মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং কোষ বৃদ্ধি করে।

কলা

চুলের গোড়া মজবুত করতে কলা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। একটি কলা ভালো হবে ব্লেন্ড করে নিয়ে এক চা চামচ নারকেল তেল দিয়ে হালকা মধু দিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর সেটি চুলের গোড়ায় এবং পুরো চুলে ব্যবহার করুন। ৩০ মিনিট পর চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন।

স্ক্যাল্প পরিষ্কার

চুলের তেল দেওয়া এবং হেয়ার প্যাক দেওয়ার পাশাপাশি চুলের স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখা খুব জরুরী। গরমের সময় মাথা ঘামার ফলে অনেকেরই চুল পড়ে যায় অনেক বেশি। তাই নিয়মিত শ্যাম্পু করা প্রয়োজন। অন্তত সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন পর পর অবশ্যই শ্যাম্পু করুন। 

তাতে আমাদের চুলের গোড়া পরিষ্কার থাকবে। কাল যখনই ময়লা থাকবে তখনই চুলের গোড়ার দুর্বল হয়ে বেশি চুল পড়ে যাবে। তাই সবসময় আমাদের চুল এবং চুলের গোড়া পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি।

চুলে হিট দেওয়া যাবে না

আমাদের আমাদের চুল স্বাস্থ্যকর রাখতে কিছু কিছু বিষয় খেয়াল রাখা খুবই জরুরী। তার মধ্যে একটি হল চুলে হিট দেওয়া যাবে না। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা বেশি স্টাইলিশ হওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চুল ছোট করে এবং কমবেশি সবসময় চুলে হিট দিয়ে থাকে।

 যা আমাদের চুলের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। চুলে হিট দেওয়ার ফলে চুল পাতলা হয়ে যায় এবং চুল ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ে যায় ফলে চুল বড় হয় না। তাই আমরা যারা চুল লম্বা এবং ঘন করতে চাই তাদের চুলে হিট দেওয়া এড়িয়ে যেতে হবে।

পুষ্টিকর খাবার খাওয়া

চুল বড় করার জন্য শুধু চুলের যত্ন নিলেই হবে না এর জন্য খেতে হবে পুষ্টিকর খাবারও। অনেকে আছে যারা ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করে না এবং চুল বড় না হওয়ার জন্য বিভিন্ন রকম পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকেন।
 বিভিন্ন হোম রেমেডি থেকে শুরু করে পার্লারে যেয়ে চুল স্ট্রেট করা বা বিভিন্ন রকম স্পা করায়। যা আমাদের চুলের জন্য আরো বেশি ক্ষতির কারণ হয়ে যায়। তাই শুধুমাত্র চুলের যত্ন করলেই হবে না চুল বড় করার জন্য খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আমরা যারা আমাদের চুল নিয়ে অনেক বেশি টেনশনে থাকি তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি হয়তো খুব বেশি উপকারী। আজকে আমরা জানলাম কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে চুল লম্বা এবং ঘন করা যায়। 
আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা অনেক বেশি উপকৃত হয়েছেন। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আজকে এ পর্যন্তই। এতক্ষণ আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url