দাঁতে ভীষণ যন্ত্রণা?ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে সমাধান করবেন বিস্তারিত জানুন

চারপাশের সবই ঠিক ছিল। কিন্তু হঠাৎই শুরু হয়ে গেল দাঁতের যন্ত্রণা। ব্যাস সবকিছু হয়ে গেল এলোমেলো। প্রিয় পাঠক আজকে আমি আপনাদের জানাবো হঠাৎ করে দাঁতের ভীষণ যন্ত্রণা শুরু হয়ে গেলে কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে সেগুলো সমাধান করবেন।

খাওয়া তো দূরের কথা কথা বলাও যাচ্ছে না বসাও যাচ্ছে না ঘুমানো যাচ্ছে না এরকম অবস্থাতে ওষুধের দোকানে বলে কিনে আনা হয় বিভিন্ন রকম পেইন কিলার।

আসলে দাঁতে ব্যাথা হওয়ার কোন বয়স নেই। পাঁচ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৬০ বছরের বৃদ্ধ পর্যন্ত সকলেরই এ ধরনের দাঁতের ব্যথা হতে পারে যে কোন সময়। দাঁতের গোড়া বা স্নায়ও ক্ষতিগ্রস্ত হলে মারাত্মক ধরনের যন্ত্রণা বা ব্যথা শুরু হয়। শুধুমাত্র দাঁতেই নয় মাথাব্যথা চোখেও ব্যথা শুরু হয়।

 তবে সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে যে পেইন কিলার না খেয়ে ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করেও দাঁতের ব্যথা নিরাময় করা যায়। আজকে আমরা দাঁতের ব্যথা কমানোর জন্য ঘরোয়া কিছু উপায় নিয়ে কথা বলব। তাহলে দেরি কেন চলুন শুরু করা যাক।

আরও পড়ুনঃ রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গেলে কি করনীয় এবং কি খাওয়া জরুরি জানুন

অবশ্যই আপনার রান্নাঘরে আলু রয়েছে। রান্নাঘর থেকে আলু হতে পারে আপনার দাঁতের সমস্যায় কার্যকরী। আলু কেটে দাঁতে লাগান দেখবেন ম্যাজিক এর মত কাজ করছে কমছে ব্যথা।

লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে দারুণ কিছু ব্যথা নিরাময়কারী উপাদান। তাই দাঁতের যন্ত্রণায় লবঙ্গের কোন বিকল্প হয় না। ব্যথা জায়গায় লবঙ্গ লাগিয়ে দেখতে পারেন। দেখবেন কিছুক্ষনের মধ্যে আপনার দাঁতে ব্যথা চলে গেছে।

কমবেশি আমাদের সবার বাড়িতে পেয়ারা পাতা রয়েছে। তাহলে দেরি কেন আপনার এই সমস্যা যদি কমাতে চান তাহলে পেয়ারা পাতা মুখে করে কিছুক্ষণ নিয়ে থাকুন। একটু পরে আপনি আপনার রেজাল্ট দেখতে পাবেন। পেয়ারা পাতাতে রয়েছে এন্টি ইনফ্লেমেন্টারি যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

দাঁতের যন্ত্রণা কমাতে চাইলে আপনি দাঁতের গোড়ায় লাগাতে পারেন খাঁটি সরিষার তেল। এক্ষেত্রে তেলের সঙ্গে সামান্য লবন নিতে পারেন। তেল আর লবনের মিশ্রণ হতে পারে আপনার দাঁতে ব্যথার হাতিয়ার।

যেকোন ব্যথা কমানোর জন্য কাঁচা রসুন দারুন রকম কাজ করে। তাই দাঁত ব্যথা কমাতে চাইলে আপনি সামান্য রসুন কেটে দাঁতে লাগাতে পারেন দেখবেন দারুন রকম কাজ হয়েছে। রসুন দাতে থাকা ্যাক বিভিন্ন রকম ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে।

আরও পড়ুনঃ ভুড়ি কমানোর জন্য কি খেতে হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

অ্যালোভেরা তে থাকে বিভিন্ন রকম অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যাদের বিভিন্ন রকম জীবাণুকে নষ্ট করে দেয়। এলোভেরা জেল নিয়ে ব্যথার জায়গায় লাগাতে পারেন।

তাতে ব্যথা কমানোর জন্য হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের কোন বিকল্প নেই। বিভিন্ন রকম ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে দাঁতের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়। শুধু তাই নয়, দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত পড়াও বন্ধ করে দেই। কিছু পরিমাণ পানি এবং হাইড্রোজেন পার অক্সাইড নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। সেই মিশ্রণ দিয়ে কুলি করুন। তারপর পরিষ্কার পানিতে মুখ ধুয়ে নেন।

নুন এবং গোলমরিচ সহ পানি দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। দাঁতের ওপর ওই পেস্ট লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। দাঁতে ব্যথা হলে এটি কয়েক দিন পর পর করে দেখুন দাঁতে ব্যথা অনেকটা কমে যাবে।

পেঁয়াজের অ্যান্টিসেপটিক গুন যা আমাদের কোন ক্ষত বা ব্যথা সারাতে চমকের মত কাজ করে। দাঁতের ব্যথা হলে এক টুকরো কাটা পেঁয়াজ নিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন। পেঁয়াজের ঝাল লাগলে সেটি দাঁতের জন্য বেশি উপকারী।

এক চিমটি হিং বা আধা চামচ হিং গুঁড়ো নিয়ে তার সঙ্গে লেবুর রস মিশে পেস্ট করুন। এবং সেটি দাঁতে লাগিয়ে রাখুন। এতে আপনার দাঁতে ব্যথা খুব তাড়াতাড়ি কমে যাবে।

দাঁত মাড়ি এবং গলা ব্যথাতে গরম পানির কোন জুড়ি নেই। এক গ্লাস গরম পানিতে এক চামচ লবণ মিশিয়ে কুলি করুন। কিছুক্ষণ ভালোভাবে কুলি করার পর ফ্রেশ পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। কয়েক দিনের রেগুলার করলে দেখবেন আপনার দাঁতের ব্যথা অনেক কমে গেছে।

দুর্বা ঘাসের রসে দাঁতে ব্যথা কমে যায় এটি কম বেশি অনেকেই জানেন। দাঁতের স্বাস্থ্য ও মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রতিদিন সকালে দূর্বা ঘাসের রস দাঁতে লাগিয়ে রাখুন।

তুলই মুড়ো এক টুকরো আইস কিউব নিয়ে যেখানে দাঁতের ব্যথা হচ্ছে সে জায়গায় কিছুক্ষণ চেপে রাখুন। দেখবেন কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার ব্যথা অনেক কমে গেছে। এছাড়াও মারি ফোলা অথবা ইনফ্লামেশন করতে সাহায্য করে আইসক্রিম বা কোল্ড কম্প্রেস।

হলুদ কে প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। হলুদ লবণ এবং সরিষার তেল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে সেটি দাঁতে লাগিয়ে রাখুন। দেখবেন দাঁতের ব্যথা খুব তাড়াতাড়ি চলে গেছে।

আমাদের অনেকের মধ্যেই রয়েছে দাঁতে পোকা লাগার সমস্যা। তবে ছোটদের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যায়। কিন্তু শুধুমাত্র ছোট নয় বড়দেরও দাঁতে পোকা লাগার অনেক ধরনের সমস্যা রয়েছে। সেক্ষেত্রে মাঝেমধ্যে খুব ভয়ানক রকম ব্যথা শুরু হয়ে যায়। 

দাঁতে পোকা লাগার কারণে ব্যথা হয়ে থাকলে আমলকির রসের মধ্যে একটু কর্পূর যোগ করে নিন এবং দাঁতে লাগিয়ে রাখুন। এছাড়াও কর্পূরের মধ্যে তেল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে আপনার লাগিয়ে রাখুন। কম সময়ে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে খুব দ্রুত।

আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। আমার আজকে এই পর্যন্তই। দেখা হবে পরের কোন পোস্টে। আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।