মিষ্টি খাওয়া আসলেই আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর কিনা জানুন বিস্তারিত

 আজকের আর্টিকেলের বিষয় হলো মিষ্টি খাওয়া আসলেই আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর কিনা সে সম্পর্কে। বাঙ্গালীদের মিষ্টির প্রতি ভালোবাসা চিরকালীন। কিন্তু এখনকার দিনে অনেকেই মোটা হওয়ার ভয়ে মিষ্টি খাওয়া বাদ দিয়ে দেন।মিষ্টি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর কিনা জানতে হলে আমার আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত থাকুন।

মিষ্টি খাওয়া আসলেই আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর কিনা জানুন বিস্তারিত
অনেকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। কিন্তু ডায়াবেটিসের আক্রান্ত রোগীদের মিষ্টি খাওয়া একদমই নিষেধ। তাই চাইলেই মিষ্টি খাওয়ার পরিবর্তে মিষ্টির বিকল্প হিসেবে অন্য কিছু খাবারও খেতে পারে। যেগুলো আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে।

ভূমিকা

অনেকেই মনে করেন মিষ্টি খাওয়া আসলেই আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।মিষ্টি একটি প্রক্রিয়াজাতকরণ খাদ্য। অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ডেকে আনতে পারে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ ব্যাধি এবং বৃদ্ধি হতে পারে ওজন। এমনকি যারা ডায়েট করেন তাদের খাবারের লিস্টে মিষ্টি বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়ে থাকে। মিষ্টি খেলে ওজন বেড়ে যায় বলেছে আপনি খাবারের তালিকা থেকে একদমই মিষ্টি বাদ দিয়ে দিবেন বিষয়টা কিন্তু এমন না।

মিষ্টি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর কি না 

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা মিষ্টি দেখলে আর নিজের লোভ সামলাতে পারেন না। যাদের এই ধরনের অভ্যাস রয়েছে তাদের আসলে জানা দরকার যে মিষ্টি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর একটি ধরনের সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নেই মিষ্টি খেলে আমাদের চেয়ে কি কি সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে সে সম্পর্কেঃ
  • গবেষকরা বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে মিষ্টি খেলে আমাদের শরীরে লিটোপ্রটিন লিপোজ তৈরি করতে থাকলে যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কেননা অতিরিক্ত মিষ্টি খেলে আমাদের ব্লাড প্রেসার বা কোলেস্টেরল বেড়ে যেতে পারে। আর হার্ট এটাকসহ স্ট্রোকের ঝুকিও বেড়ে যায়।
  • মিষ্টি জাতীয় খাবার খাবার ফলে আমাদের শরীরে কিছু নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে যার কারণে খুব অল্পতেই আমরা বিভিন্ন অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হতে পারে বা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
  • মিষ্টি আমাদের ব্লাড সুগার লেভেল কে বাড়িয়ে দেয় যার কারণে মিষ্টি খেলে আমাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • বেশি পরিমাণে মিষ্টি খাবার খেলে আমাদের যকৃতের বেশি পরিমাণে পরিশ্রম করতে হবে। ফলে লিভারের চাপ পড়ে শরীরে লিপিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফ্যাটি লিভারসহ দেখা দিতে পারে বিভিন্ন সমস্যা।
  • এছাড়াও খাবার পরে অনেক সময় মিষ্টি খেলে এসিডিটি, পেট ফোলা, বুক জ্বালার মত বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দেয়।

মিষ্টির বিকল্প খাবার গুলো 

মিষ্টির বিকল্প হিসেবে আপনি খেতে পারেন কিছু প্রাকৃতিক খাবার যেগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক কি সেই খাবারগুলোঃ

মধু

প্রাকৃতিক গুণাগুনে ভরপুর মধু। এছাড়াও বিভিন্ন ঘরোয়া সমাধানে মধুর কোন বিকল্প নেই। মধুর মধ্যে রয়েছে প্রোটিন ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান। মধু আমাদের শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মত কাজ করে থাকে। একটা চামচ মধুতে প্রায় 20 ক্যালরি থাকে। তাই মিষ্টির বিকল্প হিসেবে মধু খাওয়ার কোন জুড়ি নেই।

খেজুর

খেজুরের মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম কপার আয়রন ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি সিক্স। মিষ্টির চেয়েও বেশি স্বাদের হয়ে থাকে খেজুর। এছাড়াও আমাদের শরীরের রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে।

ফলের জ্যাম

মিষ্টি বিভিন্ন রকম ফল দিয়ে বানানো জ্যাম আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী। আম নাশপাতি আঙ্গুর ইত্যাদি বিভিন্ন রকম মিষ্টি ফল দিয়ে বানানো এর জ্যাম আপনি প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় মিষ্টির পরিবর্তে রাখতে পারেন।

আখের রস

আখের রস প্রাকৃতিক একটি উপাদান। এই পানীয়টি আমাদের শরীরের দারুন ভাবে শক্তি যোগান দেয়। এছাড়াও এটি আমাদের ত্বকের টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারি। আমাদের পরিপাক ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই ছাড়াতে আখের রসের কোন বিকল্প নেই।

স্টেভিয়া

এটি একধরনের ভেষজ পাতা। গবেষণায় জানা গেছে এই পাতা অনেকগুলো একসাথে নিয়ে মাখিয়ে খেতে মিষ্টি। এই পাতা আমাদের দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে। স্কিন কেয়ার হিসেবেও এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও সাদ বৃদ্ধি কারক হিসেবে স্টোভিয়ার চাহিদা প্রচুর। তাই এটি আপনি মিষ্টির বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন।

তাজা ফল

বেদনা আপেল আঙুর কলার মতো ফলগুলো এমনিতেই অনেক মিষ্টি। যাদের মিষ্টি খাওয়ার প্রচুর প্রবণতা রয়েছে তারা মিষ্টির পরিবর্তে এই খাবারগুলো খেতে পারেন।

গুড়

মিষ্টির চেয়ে অনেকটা কম প্রসেসড। মিষ্টির পরিবর্তে গুড় খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী এবং স্বাস্থ্যকর। গুড় দিয়ে জিনিসও মিষ্টির মতই কাজ করে থাকে।

কিসমিস

কিসমিস ব্যবহার করার বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতির রয়েছে। এবং কিসমিস খাবারও অনেকে অনেক পদ্ধতি বেছে নেন। এছাড়াও এটি সালাত ওটমিল দই এবং চিরার সাথে যোগ করে খাওয়া যেতে পারে। আপনি মিষ্টির বিকল্প হিসেবে কিসমিস খেতে পারেন। মিষ্টির চেয়ে বেশি পুষ্টিগুণাগুণ রয়েছে কিসমিসের মধ্যে।

ডার্ক চকলেট

চমচম আর রসগোল্লা না খেয়েও মিষ্টির স্বাদ পেতে চাইলে খেতে পারেন ডার্ক চকলেট। মন ভরে যাবে। আবার শরীরে যত্ন নেওয়া হবে। ডার্ক চকলেট আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তাই মিষ্টির পরিবর্তে খেতে পারেন ডার্ক চকলেট।

ম্যাপল সিরাপ

ম্যাপেল সিরাপ কে বেশিরভাগ মানুষই হয়তো চেনেন না। ম্যাপের সিরাপ বেশিরভাগ প্যানকেকের সাথে খাওয়া যায়। এই সিরাপটি খেতে যেমন ভালো ঠিক তেমনি মিষ্টি। এছাড়াও এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও পাওয়া যায়।তাই এটি আপনি মিষ্টির বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন।

অতিরিক্ত মিষ্টি খেলে ত্বকের সমস্যা হতে পারে

অনেকেই মিষ্টি খাওয়া এত বেশি পছন্দ করেন যে ক্ষুধা লাগলে ফ্রিজ খুলে মিষ্টি খেয়ে ফেলেন ইচ্ছামত। সুগার লেভেল সঠিকভাবে থাকলে মিষ্টি খাওয়ার কোন মানা নেই কিন্তু মিষ্টি খেলেও আমাদের ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা যেতে পারে। যেমনঃ
  • মিষ্টিতে রয়েছে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স। যার কারনে বেশি মিষ্টি খেলে আমাদের চেহারার মধ্যে বয়সের ছাপ পড়ে যায় খুব দ্রুত।
  • মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খেয়ে ফেললে মুখে বিভিন্ন ধরনের ব্রণজাতীয় কিছু বের হতে পারে।
  • ত্বকের যত্ন নেয়ার পরে অনেক সময় আমাদের ত্বক শুষ্ক এবং নিষ্প্রাণ দেখায়। অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে এ ধরনের সমস্যাটা হয়ে থাকে।
  • তাই সবসময় পরিমিত পরিমাণে মিষ্টি খাওয়া দরকার। আর যদি কারো সুগার লেভেলের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে একদমই মিষ্টি খাওয়া বাদ দেওয়া জরুরী। তবে অনুষ্ঠানে গেলে হালকা মিষ্টি খেতে পারেন।

মিষ্টির বিকল্প হিসেবে স্বাস্থ্যকর ডেজার্ট

যাদের ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা রয়েছে তারা নিশ্চয়ই পরিবর্তে অন্য কিছু খাওয়া বা মিষ্টি কি বাদ দেওয়া তাদের জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং একটা বিষয়। কিন্তু সুস্থ জীবন যাপন করতে হলে আমাদের খাদ্য তালিকা থেকে মিষ্টি লোক সামলাতে হবে। অর্থাৎ মিষ্টি খাওয়া বাদ দিতে হবে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকমের চ্যালেঞ্জিং এর মুখোমুখি হতে হয়।

 শরীর এবং মনকে সন্তুষ্ট রাখার জন্য এমন সব কাজ খাবার বাছাই করতে হয় যেগুলো সত্যিই আসলেই খুব কষ্টকর। সুস্থ থাকতে হলে মিষ্টি প্রতি লোভ সামলাতে হবে এটা প্রধান কথা। তবে মিষ্টির পরিবর্তে কিছু ডেজার্ট খাওয়া যায় যেগুলো আমাদের জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক মিষ্টির পরিবর্তে কি ধরনের ডেজার্ট খাওয়া যায় সে সম্পর্কেঃ

চিয়া সিডের পুডিং

সারারাত জলে ভিজিয়ে রাখার দেয়া সিট এবং ওটস ডেজার্ট এর জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর একটি উপকরণ। সকালের জন্য স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্টে মিষ্টির বিকল্প হিসেবে পুডিং রাখতে পারেন। পছন্দের দুধের মধ্যে দিয়ে জিয়া ছেলের পুডিং বানিয়ে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে ডেজার্ট হিসেবে রাখুন।

হট কোকো

চকলেটবার অনেক ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করা হয় না কিন্তু হট কোকো আপনি নিঃসন্দেহে খেতে পারেন। এজন্য আপনি চিনির পরিবর্তে মধু দিয়ে হট কুকুর বানিয়ে খেতে পারেন।

দই

মিষ্টির কথা বললে দইয়ের প্রসঙ্গ অবশ্যই চলে আসে। তবে দইয়ে কখনো চিনি বা মিষ্টি মেশাবেন না। সবচেয়ে ভালো চিনি বা কোন রকম মিষ্টি ছাড়া দই তৈরি করে সেটি ডেজার্ট হিসেবে খাবার তালিকায় রাখা।

বেরির শরবত

আইসক্রিম ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য না খাওয়াই ভালো। কিন্তু যারা আইসক্রিম খেতে অনেক বেশি পছন্দ করেন এবং তাদের একই সাথে ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা ফলের পপসিকলজ খেতে পারেন। অর্থাৎ ফলে শরবত বানিয়েছে এটি আইসক্রিম আকারে খেতে পারেন। মিষ্টির বিকল্প হিসেবে এই রেসিপিটি সত্যি খুব দারুন।

যেভাবে মিষ্টি খেলে মোটা হবেন না

যারা তাদের ওজন নিয়ে খুব সচেতন এবং ওজন সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান সেই মানুষগুলো সব সময় মিট জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে চান বা খাবার এড়িয়ে চলেন। কারণ মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে আমাদের শরীরের ওজন অনেকটাই বেড়ে যায়। এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করেন অনেকেই।

 কিন্তু আপনি কি জানেন যে কিছু মিষ্টি জাতীয় খাবার রয়েছে যেগুলো খাওয়ার ফলে আপনার মোটা হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই বা আপনার ওজন বাড়ার কোনো রকম সম্ভাবনা নেই। পুষ্টিবিদ এবং কিছু ডায়েটিশিয়ানরা এ ধরনের কিছু খাবারের কথা জানিয়েছেন। যেগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের কোন ক্ষতিকর দিক তো নেই বরং রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উপকার।

 চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেই কোন মিষ্টি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর অতিরিক্ত বাড়বে না বা আমরা মোটা হবো না সে সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্যঃ

ছোলার ডালের বরফি

 খাবারের মধ্যে ছোলার ডালের বরফি খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেকটা নিরাপদ। এই ধরনের মিষ্টি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে কোনরকম ক্ষতি হবে না।কারণ এই মিষ্টিতে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম বা নেই বললেই চলে। তাই আপনার মিষ্টির প্রতি খুব চাহিদা থাকলে এবং আপনার শরীরের ওজন পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে আপনি মিষ্টির পরিবর্তে এই ছোলার ডালের বরফি বানিয়ে খেতে পারেন।

নারকেলের নাড়ু

কম বেশি নারকেলের নাড়ু অনেকেই পছন্দ করেন। কিন্তু খেয়াল রাখবেন নারকেলের নরম বানাতে চিনির পরিমাণ কমাতে হবে। অর্থাৎ চিনি কম দিতে হবে।শুধু নারকেলের নাড়ু নয় পাশাপাশি আপনি তিলের নাড়ু ও বানিয়ে খেতে পারেন।এ ধরনের মিষ্টি খাওয়ার ফলে আপনার শরীরের ওজন বাড়বে না এবং আপনার শরীরের কোনরকম ক্ষতি করবে না।

গাজরের নাড়ু

যারা অতিরিক্ত গাজর খেতে পছন্দ করেন বা মিষ্টি লাড্ডু খেতে পছন্দ করেন তারা ঘরে বসেই বানিয়ে নিতে পারেন গাজরের নাড়ু। প্রথমে চুলায় একটি করায় বসিয়ে তার মধ্যে সামান্য সয়াবিন তেল সামান্য গিয়ে দারুচিনি এলাচ তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে তার মধ্যে সিদ্ধ করা গাজরের পেস্ট দিয়ে হালকা পরিমাণে খেজুরের গুড় দিয়ে ১৮ ভাব চলে আসলে বানিয়ে নিন গাজরের নাড়ু।

মিষ্টির ক্ষতিকর নেশা কাটানোর কার্যকরী উপায়

খাওয়ার শেষে ডেজার্ট বা মিষ্টি জাতীয় খাবার না খেলেই হয় না অনেকের। অথচ মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি রয়েছে আমাদের চরম নেশা।মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য আসলে অনেক ক্ষতিকর। তাই সবারই উচিত এ ধরনের অভ্যাস থাকলে ত্যাগ করা।বিশেষ করে যাদের মিষ্টি খাওয়ার প্রচন্ড নেশা রয়েছে তাদের এই বদ অভ্যাস ত্যাগ করার কথা বলে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।চলুন আমরা জেনে নেই কিভাবে মিষ্টির প্রতি আসক্তি কমানো যায় সে সম্পর্কেঃ
  • গবেষণায় জানা গেছে বেশি বেশি পানি খেলে আমাদের মিষ্টি খাওয়ার প্রতি আকর্ষণ অনেকটাই কমে যায়। এমনিতেও একজন মানুষের শরীরে প্রচুর পরিমাণে পানির দরকার। তাই যখন মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা হবে তখন আপনি মিষ্টির পরিবর্তে এক গ্লাস পানি খেয়ে নেবেন। দেখবেন আপনার মিষ্টি খাওয়ার প্রতি ইচ্ছা কমে গেছে।
  • সাধারণত চিনির মিষ্টি বা রসগোল্লা খাওয়াচ্ছে প্রাকৃতিক কোন মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। প্রাকৃতিক মিষ্টি বলতে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ফল কে বোঝানো হয়। তাই মিষ্টির পরিবর্তে আপনি ফল খেতে পারেন।
  • সবুজ বিভিন্ন শাকসবজি খাবারের তালিকায় নিয়মিত রাখুন। যখনই মিষ্টি খাইতে মন চাইবে ঠিক তখনই চোখ বন্ধ করে সবুজ শাকসবজি খাওয়ার কথা চিন্তা করবেন। কিছুদিনের মধ্যে দেখবেন আপনার মিষ্টি খাওয়ার চাহিদা কমে গেছে বা নেই বললেই চলে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলাধুলা এবং ব্যায়াম করুন। কেননা যখন আপনি খেলাধুলা এবং ব্যায়াম করবেন তখন আপনার দেহ এবং মনে একটি সুখানুভূতি অনুভব হবে এবং সেরাটনিন হরমোন নিঃসরিত হবে। আর আমাদের মস্তিষ্কে যখন শেরাটন ইন হরমন নিঃসৃত হয় তখন আমাদের মিষ্টি খাওয়ার প্রতি আগ্রহ কমে আসে।
  • বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাতকরণ খাবারকে না বলতে হবে। মিষ্টি জাতীয় খাবার যেখানে আমাদের মস্তিষ্কের নিউক্লিয়াস নামক অঞ্চলকে উত্তেজিত করে সেখানে প্রক্রিয়াজাত খাবার খুব সহজে আমাদের মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে তাই এটি থেকে দূরে থাকতে হবে।
  • দেহে খনিজের ঘাটতি পূরণ হলে আমাদের মিষ্টি খাওয়ার প্রতি আকর্ষণ কমে যায়। তাই বিশেষজ্ঞরা সবসময় পরামর্শ দিয়ে থাকেন সামুদ্রিক খাবার খেতে। কেননা সামগ্রিক খাবার খেলে আমাদের দেহে খনিজের ঘাটতি পূরণ হয়।
  • প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি বলে আচারের মতো খাবারের রয়েছে প্রবায়োটিক নামক এক ধরনের উপাদান। যা আমাদের দেহে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং আমাদের ক্ষতিকর খাবারের প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দেই। তাই আপনি মিষ্টি খাওয়া থেকে রক্ষা পেতে চাইলে মিষ্টির পরিবর্তে আচার খেতে পারেন।

টক দই নাকি মিষ্টি দই

দই প্রোটিন ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ একটি খাবার। যা আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণে সক্ষম। যারা দুধ খেতে পারে না বা দুধ খেলে হজম হয় না তারা নিয়মিত দই খেতে পারেন। টক দই এবং মিষ্টি দই এর গুনাগুন প্রায় একই রকমের। কিন্তু মিষ্টি স্বাদের কারনে অনেকেই মিষ্টি দই বেশি পছন্দ করে থাকেন।মিষ্টি দই খেতে ভালো হলেও টক দই আমাদের শরীরের জন্য বেশি উপকারী।

কেননা টক দই এ চিনি বা মিষ্টি কোন কিছুই থাকে না। আর মিষ্টি অতিরিক্ত চিনি যোগ করা হয়। আর আমরা সবাই জানি চিনি আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর। তবে যাদের ডায়াবেটিস এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রয়েছে অর্থাৎ একদম সুস্থ ব্যক্তি নিয়মিত মিষ্টি দই খেতে পারবেন। মিষ্টি যোগ করা হয় তখন সেটাতে ক্যালরির পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যায়।

তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মিষ্টি দই খাওয়া উচিত নয়। কেননা শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে গিয়ে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া আমার টক দই আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তারা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় অবশ্যই টকদই রাখবেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীরা মিষ্টি দই একদমই পরিহার করবেন। এমনকি শুধুমাত্র মিষ্টি দই না চিনি একদমই পরিহার করতে হবে।কেননা চিনি আমাদের ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ঘটায়।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম মিষ্টির বিকল্প হিসেবে হতে পারে যেসব খাবারগুলো এবং মিষ্টি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য আসলেই ক্ষতিকর কিনা সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।তাহলে আর দেরি কেন আপনারা সকলেই এই টিপস গুলো ফলো করার চেষ্টা করবেন।আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।

যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। আমার আজকে এই পর্যন্তই। দেখা হবে পরের কোন পোস্টে। আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url