হঠাৎ ভূমিকম্পের সময় আপনার আমার করনীয় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

হঠাৎ ভূমিকম্পের সময় আপনার আমার করনীয় কি সে সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই জানি।বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিনিয়ত ভূমিকম্প হয়ে থাকে।হঠাৎ এরকম ভূমিকম্প থেকে বাঁচতে তাৎক্ষণিকভাবে কি করা যায় সেটা আমাদের মধ্যে অনেকেই বুঝে উঠতে পারে না। প্রিয় পাঠক আজকে আমি আপনাদের জানাবো হহঠাৎ ভূমিকম্পের সময় আপনার আমার করনীয় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।
হঠাৎ ভূমিকম্পের সময় আপনার আমার করনীয় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাওয়া খুব জটিল একটি বিষয়। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ভূমিকম্প হলে কি কি করতে হবে আমাদের।

ভূমিকা

হঠাৎ ভূমিকম্পের সময় আপনার আমার করনীয় কি সে সম্পর্কে জানতে হলে আমার পোস্টের সাথেই থাকুন।বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আবহাওয়াবিদের মতে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া আসলে খুবই জটিল একটি বিষয়। নির্দিষ্ট ভূমিকম্পকে সরাসরি নির্ণয় করা যায় না তাই আমাদের সব সময় পূর্ব প্রস্তুতি থাকা দরকার। এছাড়াও আজকে আমরা জানবো ভূমিকম্প কি, কেন হয় সেগুলো সম্পর্কে।

হঠাৎ ভূমিকম্পের সময় আপনার আমার করনীয় কি

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভূমিকম্প হলে কিছু করণীয় নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। সেগুলো হলঃ
  • প্রথমত ভূমিকম্প হলে কখনো আতঙ্কিত হবেন না।
  • ভূমিকম্পের সময় বিছানায় শুয়ে থাকলে বিছানায় থাকা বালিশ বা কোলবালিশ দিয়ে অবশ্যই মাথা ঢেকে নিবেন।
  • আশেপাশে কোন টেবিল বা শক্ত কোন জিনিস থাকলে তার নিচে আশ্রয় নেবেন।
  • রান্নাঘরে থাকলে অবশ্যই গ্যাসের চুলা বন্ধ করে দিয়ে বাইরে চলে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
  • হঠাৎই ভূমিকম্প শুরু হয়ে গেলে ঘরের বিম ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকুন।
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থাকলে বের হয়ে যেতে পারলে খুব ভালো হয় তবে বের হওয়ার মতো কোনো সুযোগ না পেলে নিজের ব্যাগ দিয়ে মাথা রক্ষা করার চেষ্টা করুন এবং চেয়ার বা টেবিলের নিচে আশ্রয় নিন।
  • বাড়ির বাইরে থাকলে অবশ্যই ফাঁকা জায়গায় অবস্থান করবেন।
  • উপরতলায় থাকলে অবশ্যই তাড়াহুড়া না করে ঘরের ভেতরে কোথাও একটা আশ্রয় নিবেন।
  • ভুলেও লিফট ব্যবহার করবেন না বা ছাদ থেকে লাফানোর চেষ্টা করবেন না।
  • ভাঙা দেওয়ালের নিচে চাপা পড়ে গেলে বেশি নড়াচড়া না করে নিজের কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন। এবং হাত দিয়ে নিজের মাথা রক্ষা করার চেষ্টা করুন।
  • গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি বা অফিস আদালতে থাকলে তাড়াহুড়ো করে বের হওয়ার চেষ্টা না করে দুহাতে মাথা ঢেকে রাখুন।
  • ভূমিকম্প থেমে গেলে দ্রুত বেরিয়ে পড়ুন এবং ফাকা স্থানে আশ্রয় নিন।
  • একবার ভূমিকম্প হওয়ার পরে পরের বার আবার হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। তাই এদিকে নিজেকে সতর্ক রাখবেন।
  • ভূমিকম্পের মুহূর্তে গাড়িতে থাকলে ওভারব্রিজ, ফ্লাইওভার, বড়গাছ ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন। তবে চেষ্টা করবেন গাড়ির ভেতরে থাকার।

ভূমিকম্প কি 

হঠাৎ ভূমিকম্পের সময় আপনার আমার করণীয় কি সে সম্পর্কে জানার আগে জানা দরকার ভূমিকম্প আসলে কি।ভূমি অর্থ হল মাটি। আর ভূমিকম্প অর্থ হলো মাটির কম্পন। ভূমিকম্প অর্থাৎ পৃথিবীর পৃষ্ঠ যখন অল্প সময়ের জন্য কেঁপে উঠে তখন সেটাকে আমরা ভূমিকম্প বলে থাকি। ভূমিকম্প পৃথিবীর যে স্থানে উৎপন্ন হয় তাকে আমরা ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল বলে থাকি।

 অর্থাৎ মাটির ভিতরে যখন একটি ছিল অন্য একটি শিলার উপরে উঠে আসে এবং ধাক্কা খায় তখন পৃথিবীর অংশের হঠাৎ একটি পরিবর্তন হয়। আর এই ধরনের পরিবর্তনই হল ভূমিকম্প। যখনই হঠাৎ করে পরের জিনিসপত্র সব তুলতে থাকে তখন আমরা বুঝতে পারি যে ভূমিকম্প শুরু হয়েছে। অর্থাৎ এক কথায় তখন সারা পৃথিবী কিছুক্ষণের জন্য কেঁপে ওঠে।

 সারা পৃথিবীতে ঘরে প্রায় ছয় হাজারের বেশি ও ভূমিকম্প হয়ে থাকে। কিছু ভূমিকম্প খুব মৃদু আচে হয়তো আমরা বুঝতে পারি না, আবার কিছু ভূমিকম্প অনেক জোরালোভাবে হয়ে থাকে যার কারণে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। প্রচন্ড মাঝারি এবং মিতু এই তিন ধরনের ভূমিকম্প হয়ে থাকে। আবার ভূমিকম্প হচ্ছে উচ্চতা অনুযায়ী কম্পিউটারে ভাগ করা যায়। 

গভীর ভূমিকম্প, মধ্যবর্তী ভূমিকম্প এবং অগভীর ভূমিকম্প। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল সাধারণত 70 কিলোমিটারের মধ্যে হলে সেটিকে অগভীর ভূমিকম্প ধরা হয়। একইভাবে ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে সেটিকে মধ্যবর্তী ও ৩০০ কিলোমিটারের বেশি হলে তাকে গভির ভুমিকম্প হিসাবে ধরা হয়।

ভূমিকম্প কেন হয়

ভূমিকম্প হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। প্রধানত তিনটি কারণে ভূমিকম্প হয়ে থাকে। ভূপৃষ্ঠের হঠাৎ পরিবর্তন জনিত কারণে, আগ্নেয়গিরির কারণে এবং শিলার কারনে।আমাদের ভূপৃষ্ঠ অনেকগুলো প্লেটের সমন্বয় গঠিত এটা আমরা অনেকেই জানি। এবং এই প্লেট গুলো একটি আরেকটি থেকে আলাদা। এই প্লেটগুলোকে টেকটনিক প্লেট বলা হয়।

 আমাদের এই গোটা পৃথিবীকে প্রায় ১৫ টা টেকটনিক প্লেটে ভাগ করা হয়। যখন একটি আরেকটি প্লেটের সাথে ধাক্কা লাগে তখনই আসলে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়ে থাকে। আবার ভূপৃষ্ঠের গ্যাস যখন ভূপৃষ্ঠের ফাটল বা আগ্নেয়গিরির মুখ দিয়ে বের হয়ে আসে তখন গ্যাসের ওয়েজ স্থানটি ফাঁকা পড়ে যায়।

 আর পৃথিবীর ওপরের উপরের চাপ ওই ফাঁকা স্থানে যে ভারসাম্য বজায় রাখে। তখনই ভূপৃষ্ঠে প্রবল কোম্পন মনে হয় যা ভূমিকম্প নামে পরিচিত।

অন্যপ্রানিরা ভুমিকম্পের আভাস পায় কিনা

আমরা অনেকে এ বিষয় নিয়ে অনেক চিন্তায় থাকি যে ভূমিকম্পের সময় মানুষ ছাড়া অন্য কোন প্রাণী বুঝতে পারে কিনা? এই বিষয়টি পুরোপুরি সত্য। মানুষ ছাড়া ভূমিকম্পের সম্ভাবনা প্রাণীরাও এটা বুঝতে পারে। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে পশু পাখি সেটা আগে থেকেই বুঝতে পারে।

 পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় পশু পাখিদের কিছু অস্বাভাবিক আচরণের প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং তারপরেই ওই জায়গায় খুব বড়সড়োভাবে ভূমিকম্প হয়েছে বলে দেখা গেছে। টোকিও শহরের এক এলাকায় হঠাৎ করে কিছুদিন যাবত হাঁস মুরগির ডিম দেওয়া একদমই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। হাস মুরগীরা যেন তাদের খাচার মধ্যে ঢুকতে চাইতো না। তারা সব সময় চাইত যে জায়গা থেকে পালিয়ে যেতে।

 তার কিছুদিন পরে ওই এলাকায় একটি বড়সড়ক ভূমিকম্প হয়েছিল। অন্যদিকে ইতালির জেনোয়া শহরে একদম সব কবুতরগুলো হারিয়ে গেছিল। পুরো এলাকার কবুতর শূন্য হয়ে গেছিল। যে শহরে যাকে যাকে পায়রা উড়ে বেড়াতো সেই শহর পুরো খালি হয়ে গেছিল। তার কিছুদিন পরে ওই এলাকায় দেখা যায় এক ধরনের বড় ভূমিকম্প।

 জানা গেছে প্রায় ৯০ দশকে চীনের এক শহরে সমস্ত সাপ বেজি ইঁদুর রাস্তায় বের হয়ে এসেছিল। এবং তার কিছুক্ষণ পরেই এক বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। আবার চীনের এক শহরে চিড়িয়াখানায় থাকা সব প্রাণীগুলো একসঙ্গে খুব চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছিল। 

তারা যেন খাঁচার মধ্যে থাকতেই চায় না। তার কিছুদিন পরে ওই শহরে ভূমিকম্প হয়েছিল।এ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে মানুষ ছাড়া পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণীরা ভুমিকম্পের আভাস পেয়ে থাকে।

প্রাণীরা কিভাবে ভূমিকম্প বুঝতে পারে

পশু পাখিরা কিভাবে ভূমিকম্পের আবাস বা এটা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে অনেক গবেষণা এখনো চলছে। আবার অনেক বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন রকম যুক্তি ও দাঁড় করিয়েছেন। তবে বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে যে, কবুতরের মধ্যে ভূমিকম্প বুঝতে পারার এক বিশাল ক্ষমতা রয়েছে। আবার কুকুর২০ হার্জ এর কম্পাঙ্ক অনুভব করতে সক্ষম।

শেষকথা

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম হঠাৎ ভূমিকম্পের সময় আপনার আমার করণীয় কি সে সম্পর্কে।এছারাও ভুমিকম্প কেন হয়, ভুমিকম্প কি সেগুলা নিয়ে বিস্তারিত ধারনা পেলাম। আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন।
সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। আমার আজকে এই পর্যন্তই। দেখা হবে পরের কোন পোস্টে। আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url