ডায়াবেটিস রোগীদের নিষিদ্ধ খাবারগুলোর তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

ডায়াবেটিস রোগীদের নিষিদ্ধ খাবারগুলোর তালিকা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। ডায়াবেটিস একটি হরমোন সংশ্লিষ্ট রোগ। আমাদের অগ্নাশয় যথেষ্ট মাত্রা ইনসুলিন তৈরি করতে না পারলে বা শরীরে ইনসুলিন ব্যবহারে ব্যর্থ হলে যে রোগ হয় সেটাই ডায়াবেটিস। এ রোগের মূল দিকগুলো ইনসুলিনের ঘাটতি। একে নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে নানা রকম দুটি পাতা দেখা দিতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের নিষিদ্ধ খাবারগুলোর তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
রোগা হওয়ার পাশাপাশি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো বিকল হয়ে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হল খাদ্য তালিকা নিয়ন্ত্রণ করা। এই রোগে প্রতিষেধক না থাকলেও আপনি নিজেদের খাবারের তালিকা পরিবর্তনের মাধ্যমে এই রোগটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারেন।
প্রিয় পাঠক আজকে আমার আর্টিকেলের বিষয় হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগীদের নিষিদ্ধ খাবার গুলোর তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত এবং ডায়াবেটিস সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু তথ্য নিয়ে। জানতে হলে আমার পোস্টের সাথেই থাকুন।

ভূমিকা

ডায়াবেটিস রোগীদের নিষিদ্ধ খাবারগুলোর তালিকা সম্পর্কে আমাদের প্রত্যেকের জানা উচিত কেননা ডায়াবেটিস কুই মারাত্মক একটি রোগ। বর্তমানে বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগীর পরিমাণ অনেক। এই যুগে কোন পরিবারের ডায়াবেটিস রোগী নেই এরকম পরিবার খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ডায়াবেটিস হলে কিডনি, লিভার, স্নায়ু, চোখ ইত্যাদি শরীরের কিছু অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।ভারতে প্রায় ৬১ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসের শিকার।

ডায়াবেটিস রোগীদের নিষিদ্ধ খাবার গুলোর তালিকা

ডায়াবেটিস মানে যে আপনার খাদ্য তালিকা থেকে পছন্দের খাবার গুলো বাদ দিতে হবে বা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে বিষয়টা এমন না। প্রথম কথা হল আপনাকে বুদ্ধি করে খাবার বাছাই করে নিতে হবে।চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিষিদ্ধ কোন খাবার নেই। কিন্তু যেসব খাবার খেলে রক্তে যে পরিমাণ বেড়ে যাবে সেসব খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
আমাদের শরীরে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা ডায়াবেটিস চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য। ডায়াবেটিস রোগীদের পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খেতে হবে সবসময়। ডায়াবেটিস রোগীদের এমন সব খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে যেটা খেলে তার শরীরে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিচে ডায়াবেটিস রোগীদের কিছু নিষিদ্ধ খাবার তালিকা নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
  • প্রথমেই মিষ্টির কথায় আসি। মিষ্টি নামটাই আসলে লোভনীয় যা সামনে থাকলে লোভ সামাল দেওয়া খুবই মুশকিল। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি একটি বিষ। কারণ বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে জানিয়েছেন অতিমাত্রায় চিনি জাতীয় কিছু যেমন জুস,মিষ্টি,জ্যাম ইত্যাদি মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ বেড়ে যাওয়ার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া দিতে হবে।
  • আরেকটি বিষয় হলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কার্বোহাইড্রেট কিংবা শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ার নিষেধ নয় কিন্তু খেলেও সেটা শরীরের সুগার লেভেল কত আছে তার ওপর নির্ভর করে খাওয়া উচিত। বিশেষ করে মাটির নিচে উৎপন্ন খাবার গুলো যেমন আলু গাজর প্রভৃতি কম খাওয়া উচিত। কারণ ওজন বৃদ্ধি পাওয়া ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপদজনক।
  • চর্বিযুক্ত ও তেল জাতীয় খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের একদম পরিহার করে দিতে হবে। চর্বিযুক্ত খাবার বলতে যেমনঃ গরুর মাংস, ডিমের কুসুম, হাঁসের মাংস, ননিযুক্ত দুধ ইত্যাদি এবং তেলেভাজা বিভিন্ন ধরনের খাবারগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, যেকোনো ধরনের চর্বি জাতীয় এবং তৈলাক্ত খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভীষণ রকম ক্ষতিকর।
  • অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। আর যদি সেটা লবণ হয় তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। সাধারণত ডাক্তাররা সবাইকে সুস্থ থাকতে কাঁচা লবণ খেতে নিষেধ করেন। আর ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কাঁচা লবণ তো আরো বেশি ক্ষতি করে। এছাড়াও কাঁচা লবণ খেলে উত্তর রক্তচাপ বেড়ে যায় এমনকি শরীরের সুগার লেভেলও বেড়ে যায়।
  • আমরা সকলেই জানি কলা অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি ফল। কিন্তু এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি। পাশাপাশি রয়েছে পটাশিয়ামও। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে যে ডায়াবেটিসের রোগীদের বা সুগার বেশি এমন রোগীদের এই ফল খাওয়া খুব একটা স্বাস্থ্যকর নয়। এই ফল খেলে আমাদের শরীরে সুগারের মাথাটা একটু বাড়তে পারে। তাই অবশ্যই ডায়াবেটিস রোগীদের কলা খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
  • গ্রাম বাংলার একটি সুপরিচিত ফল সফেদা। যারা গ্রামের দিকে বসবাস করে থাকে তাদের কমবেশি সকলের বাড়িতে এই ফলটি হয়ে থাকে। মাথায় রাখতে হবে এই ফল এমনিতেই খুব ভালো কিন্তু বেশি খেলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে পারে। এই ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স হল ৬৫।কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এর খাবার গুলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ভালো।  এর জন্য এই ফল খাওয়ার ব্যাপারে একটু সচেতন হতে হবে।
  • আমরা সকলেই জানি খেজুর খুবই পুষ্টি গুনাগুন সমৃদ্ধ একটি খাবার। এই খাবারটি এমনিতেই খুব ভালো। বিভিন্ন রকম খনিজ এবং ভিটামিনের ভরপুর এই ফল। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খেজুর খুব একটা স্বাস্থ্যকর নয়। কেননা খেজুরে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ১১২। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের খেজুর খাওয়ার ব্যাপারটা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে তারপর খেতে হবে।
  • কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল এবং একই সাথে কাঁঠাল খুবই সুস্বাদু একটি ফল।গ্রীষ্মে এই ফল পাওয়া যায়। এই ফল খেতে দারুন হলেও ডায়াবেটিস রোগীদের এই ফল খাওয়া থেকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এছাড়াও কিসমিস তরমুজ এগুলো থেকেও ডায়াবেটিস রোগীদের দূরে থাকা উচিত। কেননা এই ফলগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের সুগার লেভেল কে বাড়িয়ে দেয়।
  • সকালের নাস্তায় অনেকেই ফলের রস খেতে খুবই বেশি পছন্দ করে। কারণ ফলের রস আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য ফলের রস বিপদজনক হতে পারে। কারণ ফলের রসে চিনির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। যার কারনে ফলের রস খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের সুগার লেভেল বাড়তে পারে।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের চিনি দিয়ে চা কফি খাওয়া নিষেধ। কারণ চিনি দিয়ে চা বা কফি খেলে আমাদের সুগার লেভেল বেড়ে যেতে পারে। আর ডায়াবেটিস রোগীদের সুগার বেড়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা এবং ঝুঁকিপূর্ণ পরিচিতি হতে পারে। যার কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের সবসময় সচেতনতা অবলম্বন করে সব খেতে হবে। চিনি ছাড়া চা বা কফি খেতে পারলে সেটা শরীরের জন্য উপকারী।
  • এছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদের বিভিন্ন ধরনের চকলেট, কেক, আইসক্রিম, মাখন এবং অতিরিক্ত চিনি দেওয়া কোমল পানীয় খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা এসব পানীয়তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সুগার। যার কারণে এসব খাবার খেলে আমাদের দেহে সুগার বেড়ে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
  • যেসব রোগীদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তাদের অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকতে হবে। অ্যালকোহল বলতে আমরা সাধারণত মদ, বিয়ার ইত্যাদিকে বুঝি। এগুলো পান করলে শরীরের কোলেস্টেরল বাড়ে এবং রক্তচাপ হবার সম্ভাবনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। এমনকি যে রক্তনালীর মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ হয় সেখানে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে।

দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়

আমরা ইতিমধ্যে জেনে এসেছি যে ডায়াবেটিস রোগের কোন প্রতিষেধক নেই। সেক্ষেত্রে আমাদের এমন খাবার গ্রহণ করতে হবে যেটাতে আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ ক্ষেত্রে অনেকের হুট করে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়। তাদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করার কয়েকটি উপায় সম্পর্কে আজকে আপনাদের ধারণা দেবো। চলুন তাহলে জেনে নেই কিভাবে দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়ঃ
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে প্রচুর পরিমাণে হাঁটাহাঁটি করতে হবে। যদি আপনার হাঁটার অভ্যাস না থাকে তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।যার কারণে প্রতিদিন আপনাকে সর্বনিম্ন ৪০ মিনিট হাঁটতে হবে। শুধু হাঁটা নয় হাঁটার পাশাপাশি যদি আপনি ব্যায়াম করতে পারেন তাহলে আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসবে। এজন্য প্রতিদিন ৪০ মিনিট করে হাঁটার অভ্যাস করুন।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের অবশ্যই বাইরের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আমরা জানি বাইরের সব খাবার গুলো অনেক মুখরোচক হয় বা সবারই খেতে ভালো লাগে। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগ ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।কেননা ফাস্টফুড আমাদের শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেই। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর জন্য পাসপোর্ট পরিহার করতে হবে।
  • আপনার শরীরের ওজন যত বেড়ে যাবে তত আপনার শরীরে রোগ ব্যাধি বাসা বাঁধবে। এজন্যই আপনার ওজন সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে। দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে আপনার শরীরের ওজন সর্বপ্রথম কমাতে হবে এবং নিয়মিত ব্যায়াম এবং হাটার অভ্যাস করতে হবে।
  • পাকা পেঁপে আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। আপনি যদি খুব দ্রুত সময়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাহলে প্রতিদিন পাকা পেঁপে খেতে হবে। কেননা পাকা পেঁপের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন সি ও ইউরিক এসিড কমাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এই ফল।তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল এটি।
  • আপনার যদি ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে একবাটি সালাত খাওয়ার অভ্যাস করুন। সালাদের মধ্যে থাকবে গাজর, শসা,লেটুস পাতা, টমেটো,পেঁয়াজ ইত্যাদি। দুপুরে ভারি খাবার খাওয়ার আগে এই সালাদ খেতে পারেন। এছাড়াও এই সালাদের মধ্যে এক চা চামচ ভিনেগার যুক্ত করলে আপনার শরীরের জন্য এটি আরো বেশি উপকারী হয়ে উঠবে। তার পাশাপাশি রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমবে।
  •  প্রতিদিন সর্বনিম্ন চিনি ছাড়া দুই কাপ কফি পান করলে ডায়াবেটিস টু কমে আসে। তবে আপনি যদি চিনি দিয়ে কফি খান তাহলে বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এজন্য অবশ্যই চিনি ছাড়া চা বা কফি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাদের জন্য তো আরো ভালো। গ্রিন টি আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকার করে থাকে পাশাপাশি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • ডায়াবেটিস করতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে ভীষণভাবে সাহায্য করে থাকে।এছাড়াও মেথি খেলে আমাদের হজম শক্তি বাড়ে এবং রক্তে সুগার ঠিকভাবে চুষে নেই। এটি টাইপ ওয়ান এবং টাইপ টু ডায়াবেটিস উভয় নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। ডায়াবেটিস দ্রুত সময় নিয়ন্ত্রণে আনতে এটি একটি ঘরোয়া পদ্ধতি। রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস পানিতে কয়েকটি মেথি ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে উঠে খালি পেটে সেই পানি পান করুন। দেখবেন কিছুদিনের মধ্যেই আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
  • পুষ্টিবিদরা মনে করেন ডায়াবেটিস রোগীদের ওপর দারুন প্রভাব ফেলে ডুমুর। ডুমুরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ডুমুরের মধ্যে রয়েছে হাইপোগ্লাইসেমিক নামক এক ধরনের উপাদান যা আমাদের ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে পারে। এজন্য আপনি যদি নিয়মিত ডুমুর খান বা খেতে পারেন তাহলে আপনার ডায়াবেটিস খুব দ্রুত সময়ে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
  • এছাড়াও খুব দ্রুত সময় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে তেতো করলা খেতে হবে। কেননা তেতো করলা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারে।
  • নিম এবং তুলসী পাতা খুবই উপকারী ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য। সকালে খালি পেটে নিম এবং তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • এছাড়াও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আপনি নিয়ম করে কালোজাম খেতে পারেন। কালো জাম খুবই পুষ্টিকর একটি ফল। এটি আমাদের শরীরের রক্তের শর্করার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে এবং দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে।
  • ঢেঁড়স খুবই উপকারী একটি সবজি।ঢেঁড়স ভেজা পানি পান করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস পানিতে কয়েকটি ঢেঁড়স কেটে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকাল বেলা উঠে রেলস্টি পানিতে ধুয়ে সেই পানি খেতে পারেন। এতে করে খুব দ্রুত সময়ে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। 

ডায়াবেটিস কি এবং কত প্রকার

মানবদেহের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে যখন বেড়ে যায় তখন তাকে ডায়াবেটিস বলা হয়।অন্যভাবে যদি বলি তাহলে আমরা যখন খাবার খাই তখন আমাদের প্যানক্রিয়াস থেকে ইনসুলিন নিঃসৃত হয়।ইনসুলিনের কাজ হল যে খাবার খাচ্ছে সেটার অতিরিক্ত গ্লুকোজ কমিয়ে দেওয়া।
যখন ইনসুলিনের উৎপাদন কমে যায় অথবা উৎপাদন হওয়ার পরও যখন কাজ করতে পারে না তখন শরীরের অতিরিক্ত গ্লুকোজ বেড়ে যায়। তখন যদি খালি পেটে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাদ আর খাবার খাওয়ার পরে যদি ১১ এর বেশি থাকে তখন সে অবস্থাকে আমরা ডায়াবেটিস বলে বিবেচনা করতে পারি।ডায়াবেটিস কি সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যথাঃ

টাইপ-১ ডায়াবেটিস

টাইপ-১ডায়াবেটিস সাধারণত ১০ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে হয়ে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের অগ্নাশয় এর ইনসুলিন নিঃসরণকারী কোষগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। এজন্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রোগীকে অবশ্যই ইনজেকশন বা ইনসুলিন নিতে হয়।টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীদের কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। যেমনঃ ঘন ঘন ক্ষুধা লাগা, তৃষ্ণা পাওয়া, ক্লান্তি বোধ হওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা, বমি বমি ভাব লাগা, পেট ব্যথা, চুলকানি হওয়া ইত্যাদি।

টাইপ-২ ডায়াবেটিস

টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে কিছু ইনসুলিন তৈরি হয় যেটা প্রয়োজন এর তুলনায় যথেষ্ট নয় বা শরীরে ইনসুলিন তৈরি হলেও সেটা কার্যকর ভাবে ব্যবহৃত হয় না। এ ধরনের রোগীদের শরীরে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হিসেবে কাজ করে থাকে। এই ডায়াবেটিস সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের হয়ে থাকে।এ রোগে আক্রান্ত রোগীদেরপ্রাথমিক অবস্থায় উপসর্গ বা কোন লক্ষণ দেখা দিতে নাও পারে।
তবে এটি শরীরে বহু বছর ধরে বিকাশ করে এবং বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতিসাধন করে। তাই মাঝেমধ্যেই আমাদের ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা খুবই জরুরী একটি বিষয়। টাইপ-২ ডায়াবেটিস এর লক্ষণ গুলো সাধারণত মানব দেহে খুব ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সাথে টাইপ-১ ডায়াবেটিসের লক্ষণ গুলোর অনেক মিল রয়েছে।
যেমনঃ ক্ষতস্থান সহজে ভালো হতে চায় না, তৃষ্ণা পায়, ঘন ঘন প্রস্রাব চাপে, দ্রুত ওজন কমে যায়, হাত-পা ঝিম ধরে আসে, দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা ইত্যাদি সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে। টাইপ-২ ডায়াবেটিস সাধারণত ৩৫ বছরের পরে প্রকাশ পায়। কিন্তু অনেকের কম বয়সেও দেখা দিচ্ছে আজকাল।

গর্ভকালীন ডায়বেটিস

গর্ভকালীন অবস্থায় অনেক সময় প্রসূতি মায়ের ডায়াবেটিস দেখা দেয়। আবার বাচ্চা প্রসবের পরে ডায়াবেটিস থাকে না। এ ধরনের ডায়াবেটিসকে বলা হয় গর্ভকালীন ডায়াবেটিস।গর্ভকালীন ডায়াবেটিস গর্ভবতী নারী এবং সদ্যোজ সন্তানের উভয়ের জন্য বিপদজনক হতে পারে। এজন্য এই ধরনের ডায়াবেটিস হলে ইনসুলিন দেয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীকে বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং পাশাপাশি গর্ভকালীন মায়ের শরীরের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে হবে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম ডায়াবেটিস রোগীদের নিষিদ্ধ খাবারগুলোর তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য। এছারাও আরও জানলাম কিভাবে খুব দ্রুত সময়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে আনতে হয়। আর দেরি কেন? আপনারা সকলেই এই টিপস গুলো ফলো করার চেষ্টা করবেন।আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।
যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। আমার আজকে এই পর্যন্তই। দেখা হবে পরের কোন পোস্টে। আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url