ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে গেছে বুঝবেন যেভাবে বিস্তারিত জানুন

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে গেছে বুঝবেন যেভাবে সেটা নিয়েই মূলত আজকের আর্টিকেল। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন সুস্থ শরীর এবং শান্ত মন সুস্থতার লক্ষণ। যখনি শরীর সুস্থ থাকে তখন তার প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কে।
ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে গেছে বুঝবেন যেভাবে বিস্তারিত জানুন
আর যখন কোন ব্যক্তির শরীর অসুস্থ হয় বা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে যায় তখন তার শরীরে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। জীবন যাপনে কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমে আমরা চাইলে ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করতে পারি। তাই আমাদের শরীরকে সুস্থ সবল রাখতে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলা জরুরী দরকার।

ভূমিকা

ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে গেছে বুঝবেন যেভাবে সেটা নিয়ে বিস্তারিত সকল তথ্য নিচে দেওয়া হল।রোগ প্রতিষেধন নয় বরং প্রতিরোধ করাই সঠিক পন্থা। অর্থাৎ কোন রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলে চিকিৎসার নেওয়ার টাইটেল রোগের আক্রমণকে পরাস্ত করার ক্ষমতা জোরদার করাই বেশি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি আমাদের। আর এই কাজ করতে সবচেয়ে কার্যকর হলো আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলা।

ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে গেছে বুঝবেন যেভাবে

আমাদের শরীরকে যে সিস্টেম বা বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে তাকে ইমিউন সিস্টেম বলা হয়। এই সিস্টেমকে বাংলায় রোগ প্রতিরোধ তন্ত্র বলা যেতে পারে। ইমিউন সিস্টেম যে সুরক্ষা দেয় তাকে ইমিউনিটি বলা হয়ে থাকে। মানুষ একদিন ধরনের ইমিউনিটি রয়েছে। যথাঃ ইনেট, এডাপটিভ এবং প্যাসিভ।
যে ব্যক্তির ইমিউন সিস্টেম যত বেশি শক্তিশালী হবে তার রোগব্যাধি বা অসুস্থতার ঝুঁকি তত কমবে। আপনার নিত্যদিনের জীবনযাপনের অসঙ্গতি এই সিস্টেমকে দুর্বল করতে পারে বা রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতাকে কমিয়ে ফেলতে পারে। তাই এমন সিস্টেমকে সর্বোচ্চ কার্যকর রাখতে আপনাদের নিজেদের জীবন যাপনের ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখা জরুরী দরকার। আপনার ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে গেছে বুঝবেন যেভাবেঃ
  • কোন ব্যক্তি যদি প্রায়ই অসুস্থ হয়ে যায় এবং তার সেরে উঠতে বেশি সময় লাগে তার মানে তার ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন বছরে যদি কারো তিনবার সর্দি লাগে আর সেটা যদি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি সময় লাগে তাহলে বুঝে নিতে হবে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে গেছে।
  • কোন কাঁটা ছেড়া বা ক্ষত সারতে দেরি হওয়া দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার লক্ষণ। এরকম সমস্যা শরীরে দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।
  • পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম নেওয়ার পরেও যদি কারো ক্লান্ত বোধ হয় তবে সেটা তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাওয়ার লক্ষণ। যেহেতু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল তাই দেহে সাধারণ কার্যক্রম চালিয়ে যেতে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি শক্তির প্রয়োজন হয়। ফলে আপনি সবসময় অবসাদগ্রস্ত থাকেন।
  • বিশেষজ্ঞদের মতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার একটি বড় অংশ থাকে মানুষের অন্ত্রে। যদি কোন ব্যক্তির বারবার পেটের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে বুঝতে হবে তার শরীরে ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে গেছে।
  • অনেক সময় জিব্বা বাগানের ভেতরে অংশে কামড় লাগলে সেখান থেকে ঘা বা বিভিন্ন রকম সংক্রমণ হতে পারে। এ ধরনের সংক্রমণ হলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে ইমিউন সিস্টেম দুর্বল বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে।
  • এক বছরের মধ্যে চার বারের বেশি যদি কানের সংক্রমণ হতে দেখা যায় বা এক বছরের দুইবার নিউমোনিয়ার সমস্যা দেখা দেয় তাহলে বুঝতে হবে শরীরে কোনরকম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই।
  • আপনার যদি পেটে ঘন ঘন ডায়রিয়া বা গ্যাস অথবা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা 70% কমে গেছে। এরকম সমস্যাতে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
  • যদি আপনার শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা থাকে তাহলে এটি হতে পারে আমাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে।
  • আমাদের হারের জয়েন্টগুলোর অভ্যন্তরে আস্তরণটি যখন স্ফীত হয়ে ওঠে তখন এর চারপাশের অঞ্চলটি ফোলা এবং ব্যথা হতে পারে এবং এটি হতে পারে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার জন্য।
  • কখনো কখনো দুর্বলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য আমাদের চুলের ফলিকলগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। এবং যার ফলে অতিরিক্ত চুল পড়া সমস্যা দেখা যায়।
  • অতিরিক্ত ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে গেলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি প্রতি অনেকেরই এলার্জি সমস্যা হতে পারে। দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য রোদে থাকার কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ফুসকুড়ি,ঠান্ডালাগা,মাথাব্যথা সহ বমি বমি ভাব হতে পারে।
  • খাদ্য ভাষা পরিবর্তন না হলেও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য অস্বাভাবিকভাবে ওজনের পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।
  • আবার অনেক সময় কিছু রক্তের ব্যাধি দুর্বল ইমিউন সিস্টেমকে নির্দেশ করে। যেমনঃ অ্যানিমিয়া, হিমোফিলিয়া, রক্তের ক্যান্সার, রক্ত জমাট বাধা, লিউকেমিয়া ইত্যাদি।

যেসব অভ্যাস আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করে

চারপাশে নানান সংক্রমণ রোগের প্রকোপ যেখানে সেখানে আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করা জরুরি দরকার। স্বাস্থ্যকর খাদ্যবাস এবং নিয়মিত শরীরচর্চা এসব আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী রাখে। কিন্তু এমন কিছু বিষয় আমরা নিজেদের অজান্তেই করে থাকি যেগুলোর কারণে আমাদের ইমিউন সিস্টেম আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কেঃ
  • আমাদের মধ্যে অনেকেরই মদ পান করার অভ্যাস রয়েছে। কিন্তু আমরা হয়তো জানি না যে অ্যালকোহলে থাকা টক্সিন বা বিষ আমাদের শরীরে প্রবেশ করে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আস্তে আস্তে ধ্বংস করতে থাকে। তাই সবসময় অ্যালকোহল জাতীয় দ্রব্য এড়িয়ে চলার অভ্যাস করতে হবে।
  • আজকাল যেন দুনিয়াটা ঘুরে দেখা একটি রীতিতে পরিণত হয়ে গেছে কিন্তু এত ঘন ঘন ভ্রমণ যে আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগব্যাধি টেনে আনছে সেটা আমরা অনেকেই বুঝতে পারছি না। আপনি যদি অতিরিক্ত ঘন ঘন ভ্রমণ করতে থাকেন তাহলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়বে। কারো নতুন নতুন প্রাকৃতিক পরিবেশ, জলবায়ু, পানি এবং খাদ্য রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ওপর বিভিন্ন চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
  • দেহের অতিরিক্ত ওজন যখন বেড়ে যায় তখন কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যার সহ আরো বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও যখন আমাদের শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমে যায় তখন আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়।
  • আপনি যদি দীর্ঘমেয়াদি কোন মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন তখন আপনার স্ট্রেস হরমোন কটিসোল এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।তখন আমাদের রোগবালার সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।
  • এমন অনেকে আছেন যারা সারা জীবন নিঃসঙ্গ তাই বা একাকী থেকে কাটিয়ে দিয়েছেন বা কাটাতে পছন্দ করেন। এতে মস্তিষ্কে ডোপামিনের মাত্রা কমে যায়। কারণ একাকী থাকার ফলে আমাদের অবসাদ এবং নিঃসঙ্গতা এবং ডিপ্রেশন বেড়ে যায়। যার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যেতে পারে।
  • আপনি যদি এমন কেউ হন যিনি রাগ দুঃখ উত্তেজনা প্রকাশ না করে দমন করে নিজের মধ্যে চেপে রাখেন তাহলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আপনি নিজেই ধ্বংস করে দিচ্ছেন। কারণ এ ধরনের সমস্যাতে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আমরা নিজেরাই কমিয়ে ফেলে দিই।
  • রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে সব সময় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরী। আর আমরা যদি খাদ্যাভ্যাস মেনে না চলি তাহলে বিভিন্ন রকম অপুষ্টিতে ভুগতে পারি। তখন আমাদের শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখাতে এবং আমরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি। তাই সুস্থ থাকতে দরকার স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া।
  • আমাদের মধ্যে অনেকেই অভ্যাস আছে হালকা কোন সমস্যাতে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া। কিন্তু এ অভ্যাস আমাদের সারা জীবনের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে আসছে। অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক খেলে আমাদের শরীরের শ্বেত রক্তকণিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার ফলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হতে থাকে।
  • আপনি যদি প্রতিদিন অন্তত ২ লিটার পানি পান না করেন তাহলে আপনার দেহে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। যার ফলে নানা রকম রোগ বালাই আপনার শরীরে বাসা বাঁধবে এবং আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমিয়ে দিবে।
  • এছাড়াও যদি আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণ না ঘুমান এবং অতিরিক্ত সময় আপনার মোবাইল ল্যাপটপে কাটিয়ে দেন তাহলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আস্তে আস্তে দুর্বল হতে থাকে।
  • চিনিযুক্ত খাবার আমাদের ইমন সিস্টেমকে বিভিন্নভাবে আক্রমণ করতে পারে। ভুলে যাবেন না অতিরিক্ত লবণ খাওয়া আমাদের ইউনিয়ন সিস্টেমের সাথে আরও বিভিন্ন রকম সমস্যা সৃষ্টি করে আমাদেরকে অসুস্থ করে ফেলতে পারে।

ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করার কার্যকরী কয়েকটি উপায়

মানুষ কিভাবে সুস্থ থাকতে পারে এবং কোন উপায়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়াতে পারে সেটি নিয়ে নানা রকম গবেষণা হয়েছে বিশ্বজুড়ে। মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নির্ভর করে ভিটামিন এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট এর উপর। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি ভালো না হয় তাহলে অল্প কোন অসুখে আমরা বেশি কাতর হয়ে যেতে পারি। ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করার কয়েকটি উপায় নিচে তুলে ধরা হলোঃ

পুষ্টিকর খাবার খান

আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় নিয়মিত ফল শাকসবজি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে আপনি বিভিন্ন রকম ফলমূল আপনার দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় যোগ করবেন। এতে করে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরো বেশি শক্তিশালী হবে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম

ঘুমের সময় আমাদের শরীর নিরাময়ের শক্তি প্রকাশ ঘটায় যাকে প্রটেকটিভ সাইটোকিনস বলা হয়। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। তাই নিয়মিত ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরী। যাতে করে আমাদের শরীরে ইমিউন সিস্টেম আরো বেশি কার্যকর হতে পারে।

মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন

অস্বাভাবিক মাত্রার মানসিক চাপে আমাদের স্বাস্থ্য ভেঙে পড়াটা খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। মানসিক চাপ কমানোর জন্য আমাদের হাসিখুশি থাকা খুবই দরকার। তাই সবমিলিয়ে আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আমাদের মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

নিয়মিত শরীর চর্চা

শরীর চর্চা শুধু আমাদের হাড়কে মজবুত করেনা এটি আমাদের ইমিউন সিস্টেম কে আরো বেশি কার্যকর করে তোলে। এছাড়াও আমাদের শারীরিক সক্রিয়তায় যেমন ফুসফুস এবং শ্বাসনালির ব্যাকটেরিয়া বের হয়ে যায় নিয়মিত শরীরচর্চা করার ফলে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন

আমাদের রক্তের দুধ ক্ষমতা বাড়ানোর একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায় হল ব্যক্তিগতভাবে আমাদের স্বাস্থ্যবিধির পরিচর্যা করা। নিয়মিত হাত ধুয়ে খাবার খেতে হবে, টয়লেট ব্যবহারের পর ভালোভাবে হাত ধুতে হবে, হাঁচি কাশির সময় মুখ ঢাকতে হবে ইত্যাদি কার্যক্রম গুলো সব সময় মেনে চলা দরকার।

খাবারের তালিকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রাখুন

প্রচুর পরিমাণে ফল এবং শাকসবজি খেলে আমাদের শরীর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর উপকারিতা পাবে। এজন্য কিছু রঙিন সবজি এবং ফলমূল নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করার জরুরী। এছাড়াও নিয়মিত তরমুজ, পেঁপে, সবুজ শাকসবজি, ব্রকলি, কাঁচা মরিচ, গাজর ইত্যাদি খাবারের অভ্যাস করতে হবে। কারণ এই খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

ধূমপান এবং মদ পান ত্যাগ করুন

আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সাথে লড়াই করতে যে শক্তি দরকার সেটা ধূমপান এবং মদপানের কারণে কমে যায়। তাই এ ধরনের অভ্যাস থাকলে আজ থেকে পরিত্যাগ করার চেষ্টা করবেন।

মসলাযুক্ত পানীয়

আপনার দৈনন্দিন রুটিনে ভেষজ মসলাযুক্ত পানিয় যোগ করতে পারেন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী খাবার যেমন আদা,লেবু, তুলসী পাতা, পুদিনা পাতা ইত্যাদি দিয়ে এক ধরনের ডিটক্স ওয়াটার বানিয়ে সেগুলো পান করার চেষ্টা করবেন নিয়মিত। এগুলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়াতে সাহায্য করে।

ভিটামিন ডি নিশ্চিত করুন

ভিটামিন ডি এর সল্পতা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিতে পারে। তাই প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মিনিট শরীরে সূর্যের তাপ লাগান। এবং মাঝে মাঝে চশমাটি খুলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সূর্যের দিকে। এছাড়াও সম্ভব হলে সামুদ্রিক মাছ খেতে পারেন।

মেডিটেশন করুন

মেডিটেশন শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে যুক্ত একটি বিষয়। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। দিনে অন্তত ৫ মিনিটের জন্য মেডিটেশন করুন। এক ঘন্টা পর্যন্ত দীর্ঘ করতে পারেন। নিঃশব্দে এবং স্বাচ্ছন্দে বসে কিছু হালকা ব্যাকগ্রাউন্ড সংগীত দিয়ে আপনি নিঃশ্বাসের চর্চা করতে পারেন। এতে করে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং আমরা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবো।

দুগ্ধজাত খাবার

দুগ্ধজাত খাবার বিজ্ঞানের ভাষায় প্রবায়োটিক হিসেবে পরিচিত। যেমন দুধ, দই, ছানা ইত্যাদি। মানুষের পাকস্থলীতে যে আবরণ আছে সেটার ভিতরে বেশ কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। আর এই উপকারী ব্যাকটেরিয়া যখন কমে যায় তখন আমাদের শরীরে ক্যান্সার বাসা বাঁধতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে এবং আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমরা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় দুগ্ধ জাতীয় খাবার রাখতে পারি।

চা কফি কম খাবেন

একজন মানুষ দিনে সর্বোচ্চ দুই কাপ চা বা কফি খেতে পারবে বা এটা স্বাভাবিক। কিন্তু অনেকে সাত আট কাপ চা বা কফি খেয়ে ফেলেন। এতে আমাদের শরীরে ইমিউন সিস্টেম কমে যেতে পারে। তাই অতিরিক্ত চাপ কপি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে আজ থেকে অভ্যাসটি পরিবর্তন করে ফেলুন।

খালি পেটে রসুন খেতে পারেন

খালি পেটে রসুন খেলে এটি আপনাকে প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখে আপনার রক্তের শর্করার মাত্রার নিয়ন্ত্রণ করতে এবং হাটের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে রসুন। এছাড়াও রসুনের মধ্যে রয়েছে এন্টিবায়োটিক এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বিভিন্ন রকম উপাদান। তাই খালি পেটে গরম জলের সাথে দু এক কোয়া রসুন খেতে পারেন। এতে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।

খালি পেটে মধু

মধু অত্যন্ত কার্যকরী একটি প্রাকৃতিক উপাদান। মধু নিয়ে যা বলা হবে সেটাই যেন কম হয়ে যায়।মধুতে প্রাকৃতিক গ্লুকোজ এবং গ্লুকোজ থাকে যা দ্বারা আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। এছাড়াও মধু আমাদের শরীরের আরও বিভিন্ন রকম সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম। তাই খালি পেটে মধু খেতে পারলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পাবে।

ভিটামিন বি১২

রোগ থেকে মুক্তি পেতে ভিটামিন বি১২ বেশ কার্যকরী। এর পাশাপাশি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ভীষণ উপকারী ভিটামিন বি১২। ডিমের কুসুমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১২ পাওয়া যায়।

জিংক

জিংক আমাদের রক্তের শ্বেত রক্ত কণিকার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম। শ্বেত রক্তকণিকার ক্ষমতা হ্রাস পেলে আমাদের দেহের ইমিউন সিস্টেমের ব্যাঘাত ঘটে। আর যখন আমাদের স্ত্রীর রক্তিমার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে তখন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় চীনা বাদাম, কাজুবাদাম, সিমের বিচি, মাখন, পনির ইত্যাদি রাখতে হবে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে গেছে বুঝবো যেভাবে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।তাহলে আর দেরি কেন আপনারা সকলেই এই টিপস গুলো ফলো করার চেষ্টা করবেন।আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।
যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। আমার আজকে এই পর্যন্তই। দেখা হবে পরের কোন পোস্টে। আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url