তীব্র তাপপ্রবাহে শরবত খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

   তীব্র তাপপ্রবাহে শরবত খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে হয়তো অনেকেই জানেন। অতিরিক্ত গরমের ফলে শরীরে ঘামের সঙ্গে পানি বের হয়ে যায়। আবার অনেক সময় তীব্র গরমের কারণে বমি হয় যার কারণে শরীর থেকে অনেক পানি বের হয়ে যায়। অনেক পানি শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়ার কারণে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দেখা দেয়। যার কারণে শরীরে সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের পরিমাণের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। তীব্র তাপ প্রবাহে আমাদের খাবারের দিকে নজর দেওয়া জরুরী।

তীব্র তাপপ্রবাহে শরবত খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
আবার গরমের দিনে অনেক সময় অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ড্রিংকস খেয়ে থাকে। এছাড়াও তেলে ভাজাপোড়া এবং বেশি মসলা জাতীয় খাবার ও বাইরের তৈরি বিভিন্ন শরবত খেয়ে থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য একদম স্বাস্থ্যকর নয়। এজন্য আমাদের উচিত বাড়িতে বসেই কিছু শরবত বানিয়ে খাওয়া। এতে করে আমাদের শরীর থাকবে সুস্থ।

ভূমিকা

প্রিয় পাঠক তীব্র তাপপ্রবাহে শরবত খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আমার আর্টিকেলের সাথেই থাকুন। অতিরিক্ত গরমের সময় পেট ঠান্ডা রাখতে স্বাস্থ্যকর ফলের শরবত খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদরা। প্রচন্ড গরমে শরীর এবং মন উভয় ঠান্ডা রাখতে এক গ্লাস শরবত যথেষ্ট। এছাড়াও একজন প্রাপ্তবয়স্কের নারীর দিনে প্রায়৩-৩.৫ এবং পুরুষের৪-৪.৫ লিটার পানি খাওয়া উচিত।

তীব্র তাপপ্রবাহে শরবত খাওয়ার উপকারিতা

বছরের গ্রীষ্মকাল ঋতুটা আসলেই অনেক কষ্টের। গরমে শরীর মন একদম ঝলসে যায়। বাড়ি থেকে বের হতে মন চায় না। সব সময় গোসল করতে ইচ্ছা করে এবং এসির ঠান্ডা হাওয়াতে গা ভাষাতে ইচ্ছা করে। গা ঘেমে শরীর থেকে পানি বের হয়ে দেখা দেয় আবার ডিহাইড্রেশনের মতো সমস্যা। তবে আপনি কিছু শরবত খেয়ে আপনার গরমটা সুস্থ হবে কাটিয়ে ফেলতে পারেন। তাহলে চলুন জেনে নেই তীব্র তাপদাহে শরবত খাওয়ার উপকারিতা এবং কিসের শরবত খাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্যঃ
  • প্রথমেই বলি লেবুর শরবতের কথা। লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। লেবুর এক গ্লাস শরবত আমাদের শরীরের পানি স্বল্পতা দূর করে শরীরকে এনে দিবে প্রশান্তি। এছাড়াও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে লেবুর রয়েছে অসাধারন ক্ষমতা। তাই অতিরিক্ত গরমে আপনি খেতে পারেন লেবুর শরবত।
  • অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যাওয়ার লবণ শরীরকে আরো বেশি ক্লান্ত করে দেয়। সেই সময় কিন্তু বেলের শরবত খুব ভালো কাজে দিতে পারে। কারণ বেলের মধ্যে রয়েছে রাইবোফ্লাইবিন নামক এক ধরনের উপাদান এবং রয়েছে ভিটামিন বি। যার কারণে আমাদের শরীর ঘামলেও শরীরে শক্তির অভাব হতে দেয় না। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে আয়রন, সোডিয়াম, পটাশিয়াম যৌগ যা আমাদের হজম শক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
  • শরীরে পানির চাহিদা পূরণে পান করতে পারেন তরমুজের জুস। বিশেষ করে রোজার সময় ইফতারি করার পর তরমুজের জুস আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কেননা তরমুজে প্রায় 90% পানি। এবং আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের তরমুজের শরবত খুবই পছন্দের। এছাড়াও তরমুজের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন। তাই দেহে পানির চাহিদা পূরণে খেতে পারেন তরমুজের শরবত।
  • দইয়ের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের মসলা এবং লবণের মিশ্রণের মাধ্যমে তৈরি করতে পারেন ঘোল যা আমাদের শরীর ঠান্ডা করার জন্য আদর্শ। অতিরিক্ত ঘামে যদি ক্লান্তিবোধ করেন তাহলে দইয়ের সঙ্গে হালকা কিছু উপকরণ মিশিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন ঘোল।
  • আমরা সকলে জানি শসা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। শসা এমনিতেই ঠান্ডা। এর সঙ্গে যদি পুদিনা পাতা মিশিয়ে শরবত বানানো যায় এবং গরমের দিনে সেই শরবত খেলে আমাদের মন এবং শরীর দুটোই ঠান্ডা হবে। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের হজম সংক্রান্ত সমস্যা দূর করবে এবং শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
  • আখের রস একটি প্রাকৃতিক নির্যাস তার পাশাপাশি এটা ঠান্ডা। খেতেও বেশ মজা। তীব্র তাপদাহে আপনি বাইরে থেকে দুইটা আখ কিনে এনে বাসায় বসে বানিয়ে নিতে পারেন আখের শরবত। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এক কাপ আখের রসের রয়েছে ১৮০ ক্যালোরি এবং ত্রিশ গ্রাম চিনি। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই আমাদের শরীরের জন্য আখের রস অত্যান্ত পুষ্টিকর।
  • গরমের সময় ডাবের পানি হতে পারে আপনার জন্য উপযুক্ত একটি পানীয়। এক কাপ ডাবের পানির মধ্যে রয়েছে ৬০ ক্যালোরি, ১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৮ গ্রাম চিনি এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম। আমাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে শক্তি যোগাবে ডাবের পানি। তাই অতিরিক্ত গরমে আপনার জন্য একটি পারফেক্ট পানীয় হতে পারে এটি।
  • শরীর ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখতে এবং অনুভূতির জন্য খাওয়া হয় পুদিনা। যে কোন নাস্তার সাথেই কমবেশি পুদিনা সংযোজন করা হয়। পুদিনার মধ্যে রয়েছে ফসফরাস, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন সি, ডি, ই এবং এ। এজন্য পুদিনা শরবত গরমে আপনাকে ভেতর থেকে শীতল অনুভূতি দেবে।
  • কমলার গন্ধযুক্ত হীন শরবত আপনাকে শুধু প্রশান্তি দেয় না বরং আপনার কাজের শক্তিও যোগান দেয় এই শরবত। থেকে ঠান্ডা পানি বের করে তার মধ্যে কমলার রস দিয়ে সাথে একটু হালকা চিনি দিয়ে আপনি পানি নিতে পারেন আপনার পছন্দের কমলার জুস।
  • আঙ্গুরের রসের সাথে মধু আর বরফ মিশিয়ে আপনি পানি নিতে পারেন আঙ্গুরের জুস। পাবেন শরীরে প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান। এছাড়াও আপনার শরীরে ডি হাইড্রেশন দূর করতে এই শরবতের বিকল্প নেই।
  • নোনতা স্বাদযুক্ত জিরা পানি। জিরা পানি অনেকেরই পছন্দ আবার অনেকেই খেতে পারেন না। এক গ্লাস জিরা পানিতে রয়েছে৬৯ ক্যালোরি,১.৯ গ্রাম প্রোটিন এবং৫.৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং রয়েছে ফাইবার। গরমে আপনার জন্য আরামদায়ক একটি প্রাকৃতিক শরবত হতে পারে জিরা পানি।
  • আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকার পাশাপাশি আমাদের ত্বকের এবং চুলের জন্য ভীষণ উপকারী। গরম পানি পান করা খুবই উপকারী কারণ এটি আমাদের শরীরের অতিরিক্ত দূর করে আমাদের শরীরকে প্রশান্তি দেয়। এই মেথি ভেজানো পানি আপনাকে সারাদিন সতেজ রাখতে সাহায্য করবে।
  • অ্যালোভেরা আমরা সবাই চিনি। এটি আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও আমাদের শরীরের জন্য এটি ভীষণ উপকারী। এলোভেরার শআঁশ দিয়ে আপনি শরবত তৈরি করে খেতে পারেন। এটি আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
  • আনারস কুচি করে তার মধ্যে বিট লবণ,চিনি এবং গোলমরিচের গুঁড়ো এবং পরিমাণমতো পানি দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন আনারসের শরবত। এটি মানবদেহের পুষ্টির অভাব পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অনেক কম চর্বি থাকায় এটি আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও আনারস জ্বর এবং জন্ডিস রোগীদের জন্য ভীষণ কার্যকর।
  • পাকা আম কুচি করে তার মধ্যে স্বাদমতো চিনি এবং লবণ মিশিয়ে এবং পরিমাণমতো পানি দিয়ে তৈরি করে নিন আমের শরবত। আমি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং উচ্চ পরিমাণে আঁশ। যার কারণে এটি আমাদের কোলন ক্যান্সার স্তন ক্যান্সার রক্তস্বল্পতা এবং লিউকোমিয়া প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও আমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন যা অ্যাজমা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • খাবারের আগে বা নাস্তা হিসেবে কোকুম শরবত খান। এক গ্লাস কোকুম শরবত পান করার ফলে আপনার শরীর সারাদিন ঠান্ডা থাকবে। এছাড়াও এই শরবত আমাদের শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • ছোট কালো রঙের একটি বীজ তোকমা। যা মূলত বিভিন্ন মিষ্টি পানীয় কিংবা শরবত তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এটি জায়গা ভেদে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি গুনাগুন তাই বিভিন্ন শরবত তৈরিতে এটি আপনি ব্যবহার করতে পারেন।
  • আমরা সকলেই জানি খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস। খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরে ক্লান্তি ভাব দূর হয়ে যায়। অতিরিক্ত গরমে ঘাম হয়ে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে যায় অনেক সময়। তাই তখন খেজুর এবং কিসমিস দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন। আর এই শরবত আমাদের শরীরের শক্তি যোগাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
  • ইসবগুলের ভুষির শরবত আমাদের শরীরে পানির চাহিদা পূরণ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট পরিষ্কার, আমারশয়, উচ্চ রক্তচাপ এবং ইউরেনের বিভিন্ন সমস্যায় সমাধান দিয়ে থাকে। তাই অতিরিক্ত গরমে আপনি ইসবগুল ভিজিয়ে রেখে সেটার শরবত বানিয়ে খেতে পারেন।
  • তালশাঁস খেতে যেমন সুস্বাদু ঠিক তেমনি পুষ্টিকর। এই ফল দিয়ে তৈরি শরবত খেতে দারুন। তবে এর সাথে মিশিয়ে নিতে পারেন হালকা কয়েকটি বরফের টুকরো এবং লেবুর রস সাথে চিনি এবং আপনার পরিমাণ মতো পানি। তারপর ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিয়ে পরিবেশন করুন তালশাঁসের শরবত।
  • জাম আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। জাম থেকে বিচি আলাদা করে এর মধ্যে বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে এবং পরিমাণ মতো পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে নিয়ে তৈরি করতে পারেন জামের শরবত। গরমের দিনে এটি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী হবে। এছাড়াও লিভারের সমস্যার রোগীদের জন্য জাম খুবই উপকারী।
  • বাঙ্গি খেতে অনেকেই হয়তোবা পছন্দ করে না আবার অনেকেরই খুবই বেশি পছন্দের একটি ফল। কুচি কুচি করে বাঙ্গি কেটে তার মধ্যে প্রয়োজনীয় সব উপকরণ এবং পরিমাণ মতো পানি দিয়ে তৈরি করুন বাঙ্গির শরবত। এর সাথে হালকা কয়েকটি বরফ কুচি দিলে আপনি আরো বেশি টেস্ট পাবেন।
  • আপেল এবং মাল্টার শরবত আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আপেল এবং মালটা পরিমাণমতো কেটে নিয়ে এর মধ্যে অন্যান্য উপকরণ দিয়ে এবং প্রয়োজনমতো পানি দিয়ে তৈরি করে নিন আপেল এবং মাল্টার শরবত।তারপর পরিবেশন করুন।
  • এছাড়াও অতিরিক্ত গরমে স্বস্তি দেবে গুড়ের শরবত। অল্প একটু গুড় নিয়ে এবং তার মধ্যে প্রয়োজনীয় পানি দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন গুড়ের শরবত। স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য এর মধ্যে দিতে পারেন হালকা লেবুর রস। এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।
  • এছাড়াও গরমে ছাতুর শরবত হতে পারে আপনার শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। এটি আপনার শরীরে ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি আপনার হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শরীরের উপকারী খনিজের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে। এজন্য অতিরিক্ত গরমে ছাতুর শরবতের কোন বিকল্প হয় না।
তীব্র তাপ প্রবাহে এই শরবতগুলো আপনার শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করবে। তাই বাড়ির বাইরে শরবত না খেয়ে এবং কোল্ড ড্রিংকস না খেয়ে বাসায় বসে ভাড়া নিতে পারেন স্বাস্থ্যকর শরবত।

তীব্র গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার কয়েকটি উপায়

গ্রামাঞ্চলের দিকে বড় বড় গাছের শীতল ছায়া পাওয়া গেলেও শহরে সেটা পাওয়া দুষ্কর একটা ব্যাপার। ক্রমাগত গাছ কেটে তৈরি করা হচ্ছে বড় বড় দালান। যার কারণে শহরে গ্রামের তুলনায় অনেক বেশি গরম। এই গরমে আপনার ঘরকে ঠান্ডা রাখার জন্য দরকার এয়ারকন্ডিশনের বা এয়ার কুলারের ব্যবহার। কিন্তু এগুলো যেমন ব্যয়বহুল ঠিক তেমনি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এজন্য তীব্র গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার কয়েকটি উপায় সম্পর্কে আজকে ধারণা দেবো।

ঘরের পাশে গাছ লাগানো

ঘর ঠান্ডা রাখার জন্য বারান্দায় বা রুমের কোণে বিভিন্ন ধরনের গাছ বা ইনডোর প্লান্ট লাগানো যেতে পারে। ছায়া দিতে পারে এমন এবং সূর্যের তাপ ঢুকতে বাধা প্রদান করবে এমন গাছ লাগানো দরকার। এছাড়াও ঘরের আশেপাশে ঘাস জাতীয় গাছ লাগালেও ঘর ঠান্ডা থাকে। এছাড়াও ঘরের মধ্যে টবে করে গাছ লাগিয়ে রাখলে দেখতেও সুন্দর লাগে।

জানালায় লাগান ভারী পর্দা

ঘরে রোদ আটকানোর জন্য ভারী এবং মোটা পর্দা লাগানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সূর্যের আলো যেন রুমের ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য জানালায় ভারী পর্দা ব্যবহার করা উচিত। ভারি পর্দা রোদ আটকাতে পারে কিন্তু হালকা পর্দা রোদ আটকায় কম। গ্রীষ্মকালে বাতাসের আদ্রতা অনেক কম থাকে যার ফলে সূর্যের আলো না সরিয়ে সরাসরি ভূপৃষ্ঠে প্রখর ভাবে লাগে। এজন্য সকাল ১১ টার পরেই জানালা বন্ধ করে বাড়ি পর্দা টেনে দিন। যখন রোদের তীব্রতা কমতে থাকবে তখন জানালার পর্দা খুলে দিবেন।

বরফ ব্যবহার করা

ঘর ঠান্ডা রাখার অন্যতম সহজ উপায় হল ঘরের মধ্যে বরফের ডিব্বা রেখে দেওয়া। একটা বালতি বা কোন একটি বড় পাত্রের মধ্যে বড় বা ঠান্ডা পানি রেখে জোরে ফ্যান চালালে বরফ গলে যাওয়ার পর সেই বাতাস ঠান্ডা পানি শোষণ করবে এবং চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে। বরফের জন্য ফ্যানের বাতাস ঠান্ডা হবে এবং সারা ঘরে ঠান্ডা বাতাস ছড়িয়ে পড়বে।

বিছানার চাদর

রুমের আসবাপত্রের রং যত হালকা হবে এবং এর কাপড় সাদা কিংবা হালকা রঙের হলে গরম তত কম লাগবে। বিছানা চাদর বেশি মোটা হলে ঘাম বেশি হয়। তাছাড়াও সাদা এবং হালকা রঙের উপাদান তাপ শোষণ করে কম বরং প্রতিফলিত করে। যার কারণে খুব গাড়ো রং কিংবা ভারী কাপড়ের পরিবর্তে আপনি হালকা কাপড় এবং হালকা রঙের জিনিসপত্র ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার ঘর ঠান্ডা থাকবে।

ঘরের সাজসজ্জা

ঘরে আসবাপত্র বেশি থাকলে কিংবা অগোছালো থাকলে যেমন রুমে গুমোট পরিবেশ সৃষ্টি হয় ঠিক তেমনি অস্বস্তি লাগা শুরু হয়। এজন্য ঘরের আসবাবপত্র থাকবে সীমিত এবং গোছানো থাকবে তাহলে দেখতেও ভালো লাগবে আর ঘরের মধ্যে হাওয়া চলাচল ভালো হবে। দিনের বেলা যতোটুকু পারা যায় লাইটের ব্যবহার কমাতে হবে।

চুলা বন্ধ রাখা

চুলার গরম ঘরকে আরো বেশি উষ্ণ করে তোলে। এ জন্য রান্না করার শেষ হয়ে গেলে খুব দ্রুত চুলা বন্ধ করে দেওয়া ভালো। এতে করে ঘর আর বাড়তি গরম হবে না।

অতিরিক্ত গরমে কি খাবেন আর কি খাবেন না

তাপ প্রবাহ বাড়ার সাথে সাথে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকম সমস্যা এবং রোগ ব্যাধি বাসা বাঁধতে পারে। এজন্য এ ধরনের সমস্যাতে সুস্থতা বজায় রাখতে ঠান্ডা খাবার খাওয়া দরকার। কি ধরনের খাবার খাওয়া যায় এই নিয়ে আমাদের অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন থাকে। গরমে এমন কিছু খাওয়া উচিত যা আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখে পাশাপাশি সহজপাচ্য যা শরীরের সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গরমে সুস্থ থাকতে বেশি বেশি করে পানি খাওয়ার নির্দেশ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। এছাড়াও আপনি সারাদিনে খেতে পারেন দই চিড়া এবং কলা। সকালের নাস্তা এই খাবারটি আপনার জন্য হতে পারে অত্যন্ত সুস্বাস্থ্যকর একটি খাবার। এটি যেমন আপনার শরীরকে ঠান্ডা রাখবে ঠিক তেমনি পুষ্টির চাহিদা পূরণ করবে। আর গরম মানে হলো মৌসুমী বিভিন্ন ধরনের ফল।
রংবেরঙের বিভিন্ন ধরনের ফল আপনার শরীরের পানির ঘাটতি মেটাবে পাশাপাশি আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। পাকা পেঁপে এবং বাঙ্গি আপনার শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী একটি ফল। সকালের নাস্তার পর বিকেলে নাস্তার সাথে এক বাটি পাকা পেঁপে এবং বাঙ্গি রাখুন। এছাড়াও অতিরিক্ত গরমে তেল মশাদার জাতীয় খাবার একেবারে খাওয়া উচিত নয়। চা কফি আমাদের দেহের পানি শূন্যতা তৈরি করে তাই এ ধরনের খাবার গরমকালে এড়িয়ে চলাই ভালো।
মাংস জাতীয় খাবার বাদ দিয়ে খাদ্য তালিকায় রাখুন সবজি জাতীয় তরকারি। এছাড়াও অতিরিক্ত চিনি এবং চিনির তৈরি শরবত বা রাস্তার ধারের রঙিন শরবত এড়িয়ে চলাই ভালো। গোলাপ ফুলের পাপড়ি দিয়ে তৈরি গুলকন্দ হতে পারে আপনার গরমের জন্য একটি আরামদায়ক খাবার। ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পান করুন এতে আপনার শরীর হতে থাকবে এবং ঘুম ভালো হবে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম তীব্র তাপপ্রবাহে শরবত খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সকল তথ্য। এছাড়াও আরো জানলাম গরমকালে কত ধরনের শরবত খাওয়া যায় এবং অতিরিক্ত গরমে কোন কোন খাবার থেকে আমাদের বিরত থাকা দরকার। গরমে আমাদের ঘর কিভাবে ঠান্ডা রাখতে হয় সেই সম্পর্কেও জেনেছি। তাহলে আর দেরি কেন আপনারা সকলেই এই টিপস গুলো ফলো করার চেষ্টা করবেন।আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।
যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। আমার আজকে এই পর্যন্তই। দেখা হবে পরের কোন পোস্টে। আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url