মাতৃত্বকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের দৈনিক খাদ্য তালিকা ও সতর্কতা-নিষিদ্ধ খাবার
মাতৃত্বকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের দৈনিক খাদ্য তালিকা ও সতর্কতা-নিষিদ্ধ খাবার সম্পর্কে জানা আমাদের প্রত্যেকের উচিত। একটি মেয়ের জীবনের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো তার মাতৃত্বকালীন সময়। অনাগত সন্তান নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে আমাদের মনে অনেক ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে।তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কমন একটি প্রশ্ন হল মাতৃত্বকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের দৈনিক খাদ্য তালিকা ও সতর্কতা-নিষিদ্ধ খাবার কি কি?
এইসব প্রশ্নই আমরা অনেকেই খুব দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভুগে থাকি। মাতৃত্বকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়েদের প্রথম তিন মাসের সাধারণত বাড়তি কোনো খাবারের তেমন কোন প্রয়োজন হয় না। তবে এর পরের মাসগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি খাবার খাওয়া দরকার। সেক্ষেত্রে আমাদের সুষম খাবার তালিকা মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ভূমিকা
মাতৃত্বকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের দৈনিক খাদ্য তালিকা ও সতর্কতা-নিষিদ্ধ খাবার সম্পর্কে জানতে হলে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকুন। সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পুষ্টিকর, স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাবার রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কিন্তু গর্ভাবস্থায় এটা আরো বিশেষভাবে জরুরি। কেননা সুষম খাবার আপনার পেটে থাকার সন্তানের বেড়ে ওঠা তার বিকশিত হওয়া এবং তার সঠিক ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করবে। এজন্য সবসময় আমাদের খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখা দরকার।
মাতৃত্বকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের দৈনিক খাদ্য তালিকা ও সতর্কতা-নিষিদ্ধ খাবার
মাতৃত্বকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের দৈনিক খাদ্য তালিকায় একই ধরনের খাবার প্রতিদিন রাখা বা বেশি রাখা ঠিক নয়। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টিকর খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। এতে করে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে সহজ হবে। এমনকি পাশাপাশি কোন খাবারের প্রতি একঘেয়েমি ভাব আসবেনা।
অন্যদিকে কোন কোন খাবারে যদি আপনার রুচি বাড়ছে এবং কোন কোন খাবারের প্রতি আপনার অরুচি আসছে সেই বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে। কোন খাবার অতিরিক্ত না খেয়ে পরিণত পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কারো কারো ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় অনেক বেশি অরুচি দেখা দেই এবং অনেক বেশি বমি বমি ভাব দেখা দেয়। এরকম মায়েদের ক্ষেত্রে দিনের সব সময় অল্প করে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
তবে গর্ভধারণ করেছেন বলেই যে খাওয়া-দাওয়া অনেক বেশি করতে হবে বা অনেক বেশি বাড়িয়ে দিতে হবে এ বিষয়টি এরকম নয়। বরং প্রথম তিন মাসে কোন ধরনের বাড়তি খাবারের প্রয়োজন হয় না এবং এর পরের মাস গুলোতে চেষ্টা করতে হবে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় একটু বেশি খাবার খাওয়ার। এই সময়গুলো অস্বাস্থ্যকর খাবার সবসময় আমাদের এড়িয়ে চলা উচিত।
গর্ভবতী মায়ের দৈনিক খাদ্য তালিকা
- টাটকা এবং কেন সংরক্ষণ করা হিমায়িত শুকিয়ে যাওয়া সংরক্ষণ করা যেকোনো ধরনের শাকসবজি আপনি খেতে পারেন। সালাদের জন্য রঙিন পাতাওয়ালা শাকসবজি আমাদের জন্য পুষ্টিকর। এজন্য খাবারের সময় আপনার প্লেটের অর্ধেক থাকবে ফলমূল ও সবজি।
- প্রতিদিনের খাবার তালিকায় বিভিন্ন ধরনের আমি যুক্ত খাবার রাখা গুরুত্বপূর্ণ। মাছ মাংস, ডিম, মটরশুটি, বিভিন্ন ধরনের বাদাম এবং বীজ জাতীয় খাবার এগুলো সবই আমি সমৃদ্ধ খাবার। এজন্য প্রতিদিনের খাবার তালিকায় আমাদের আমিষ রাখতে হবে।
- জাতীয় খাবারের ক্ষেত্রে প্রাণিজ ফ্যাট খাওয়াটা সীমিত করতে হবে। এছাড়াও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট জাতীয় খাবার বিভিন্ন ধরনের খাবারের পাওয়া যায় যেমন, কিছু সামুদ্রিক মাছ, এভোকাডো এবং বাদাম। খাবারের তেল আসে মূলত উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে। যেমন অলিভ অয়েল। এজন্য সর্বাধিক চেষ্টা করতে হবে অলিভ অয়েল তেল দিয়ে রান্না করার।
- এছাড়াও আমাদের গর্ভকালীন সময়ে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খাওয়া খুব জরুরি। ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার আমাদের সন্তানের হার এবং দাঁত গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এজন্য প্রতিদিন এক হাজার মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করতে হবে। দুধ, দুধের তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার, পনির, পাতাযুক্ত গরম সবুজ শাকসবজি ক্যালসিয়ামের জন্য ভালো উৎস।
- প্রতিদিন প্রায় 27 মিলিগ্রাম আয়রন গ্রহণ করার চেষ্টা করতে হবে। আইরন আপনার শরীরের গৃহীত রক্তকণিকাকে গর্ভে বাড়তে থাকা সন্তানকে অক্সিজেনের সরবরাহ দিতে সহায়তা করবে। এজন্য আপনি চর্বহীন মাংস, মটরশুটি ও সিম জাতীয় খাবার খেতে পারেন। এ ধরনের খাবার আয়রনের ভালো উৎস।
- আপনার গর্ভে থাকা সন্তানের মস্তিষ্কের যথাযথ বিকাশের জন্য প্রতিদিন প্রায় 220 মাইক্রগ্রাম আয়োডিন প্রয়োজন। আপনি আয়োজন পাবেন সামুদ্রিক খাবার,মাংস এবং ডিমের মধ্যে। এজন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় একটি করে ডিম এবং সামুদ্রিক মাছ রাখার চেষ্টা করুন।
- আমাদের গর্ভে থাকা সন্তানের মেরুদন্ড ও বিকাশে এবং ধুলের মস্তিষ্ক বিকাশের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান হল কলিন। গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন আপনাকে এটা ৪৫০ মিলিগ্রাম করে গ্রহণ করা উচিত। এর জন্য আপনাকে বাদাম, ডিম এবং সয়া পণ্য খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
- আমরা সকলেই জানি গাজর, মিষ্টি আলু এবং সবুজ পাতাওয়ালা শাকসবজি এগুলো সবকিছুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ। আর ভিটামিন এ আমাদের বাচ্চাদের হাড়ের বেড়ে ওঠা দৃষ্টি শক্তি তৈরি করুন ত্বকের বিকাশের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এজন্য প্রতিদিন প্রায় ৭০০-৭০ মাইক্রগ্রাম ভিটামিন এ গ্রহণ করতে হবে।
- আবার অন্যদিকে আমরা সকলেই জানি ভিটামিন সি আমাদের মাড়ি এবং দাঁতের গঠন ও বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এজন্য আপনাকে প্রতিদিন ৮৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করতে হবে। লেবু, কমলা, আপেল, জাম্বুরা ইত্যাদির মতো বিভিন্ন ধরনের ফল সহ আরো সাইট্রাস ফল খাবার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি সবজির মধ্যে টমেটো, ব্রকলি জাতীয় সবজি রাখতে হবে।
- ভিটামিন ডি আপনার শিশুর হাড় এবং দাঁত গঠনে এবং দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করবে। সূর্যের আলো, সেমন মাছ ইত্যাদি আপনাকে ভিটামিন ডি পেতে সহায়তা করবে। এছাড়াও ভিটামিন b6 আপনার শিশুর লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে। ভিটামিন বি সিক্স এর উৎস হলো গরুর মাংস, কলা ইত্যাদি।
- আপনার গর্বের সন্তানের স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ এবং লোহিত রক্তকণিকার তৈরিতে ভিটামিন বি ১২ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ভিটামিন বি ১২ এর উৎস হল মাছ, মাংস, দুধ ইত্যাদি। প্রতিদিন আপনাকে ২.৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি ১২ গ্রহণ করার চেষ্টা করতে হবে।
- এছাড়াও গর্ভবতী মায়েদের জন্য ফলিক এসিড বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। জন্মগত ত্রুটি এরাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে ও এটা ভ্রূণ ও প্লাসেন্টার বৃদ্ধি ও বিকাশের সহায়তা করে থাকে। বাদাম, গারো সবুজ পাতাওয়ালা সবজি, লেবুর রস ইত্যাদি প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ৬০০ মিলিগ্রাম ফলিক অ্যাসিড পেটে সহায়তা করবে।
- এছাড়াও আমাদের শরীরে প্রধান উৎস হল শর্করা। এ জাতীয় খাবারের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও আঁশ রয়েছে। গর্ভকালীন সময়ে মায়ের শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি চাহিদা মেটাতে খাবার তালিকায় শর্করা জাতীয় খাবার রাখা জরুরী। জাতীয় খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে ভাত, রুটি, আলু, নুডুলস, ভুট্টা, ওটস ইত্যাদি। তবে প্রক্রিয়া শর্করা যেমন সাদা চাল ও আটাক খাওয়ার চেয়ে গোটা শস্য দানা যেমন লাল চাল ও লাল আটা ও খোসাসহ আলু খাওয়া ভালো।
- গর্ভবতী মায়েরা সবসময় সকাল আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে রুটি অথবা পরোটা কিংবা ডিম ও দুই কাপ সবজি খাবে। তারপর সকাল ১১ টা থেকে সাড়ে ১১ টার মধ্যে ২৫০ মিলিগ্রাম দুধ অথবা বাদাম ৬০ গ্রাম কিংবা বিস্কুট দুই একটি কিংবা মুড়ি অথবা যে কোন মৌসুমী ফল খেতে হবে। দুপুরে মাঝারি চায়ের কাপে তিন কাপ ভাত মাছ কিংবা দুই টুকরো মাংস কমপক্ষে এই সপ্তাহে একদিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে ।
- সাথে থাকবে পর্যাপ্ত পরিমাণ শাকসবজি এবং ডাল। বিকেল পাঁচটা থেকে ছয়টার মধ্যে দুধ ২৫০ মিলিগ্রাম বাসু অথবা ৬০ গ্রাম বাদাম বিস্কুট কিংবা মুড়ি অথবা নুডুলস এক কাপ খাবে। আবার রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভাত খাবে সাথে ডাল এবং মাছ কিংবা এক দুই পিস মাংস থাকবে।
প্রিয় বন্ধুরা এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম মাতৃত্বকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের দৈনিক খাদ্য তালিকা সম্পর্কে। চলুন এখন তাহলে জেনে নেই গর্ভকালীন সময়ে কোন কোন খাবার খাওয়া ঠিক নয় বা নিষেধ করা হয়েছে সে সম্পর্কে।
মাতৃত্বকালীন সময়ে সতর্কতা-নিষিদ্ধ খাবার
- খেয়াল রাখবেন আপনার খাবার তালিকায় বা ডায়েটের চাটে কখনোই যেন কাঁচা মাছ বা মাংস অথবা কম সিদ্ধ কোনটাই না থাকে। এছাড়াও আমাদের মধ্যে অনেকেই সামুদ্রিক মাছ নিয়ে আসার পরে ভালোভাবে রান্না করে না বা অল্প সিদ্ধ করে রান্না করে খেতে পছন্দ করে। বিষয়টি একদমই উচিত নয়। আমরা সকলেই জানি মাছ হল ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিডের একটি দুর্দান্ত উৎস। কিন্তু গর্ভাবস্থায় যদি আপনি এই খাবারগুলো কম সিদ্ধ করে বা কম আছে রান্না করে খান তাহলে তা আপনার জন্য ভয়াবহ হতে পারে।
- আমরা অনেকে অল্প সিদ্ধ করার ডিম বা কম রান্না করার ডিম খেতে বেশি পছন্দ করে থাকি। ডিম পুরোপুরি সিদ্ধ করে না খাওয়া হলে তার মধ্যে বিভিন্ন রকম ব্যাকটেরিয়া থাকে যা আমাদের গর্ভাবস্থায় ক্ষতিকর। গর্ভাবস্থায় ডিম খাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হল হলুদ অংশটি শক্ত না হওয়া পর্যন্ত রান্না করা।
- আপনার সন্তানের বিকাশের জন্য আপনার দৈনিক এবং নিয়মিত এক গ্লাস দুধ খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক গ্লাস দুধ যেমন আপনার শরীরকে পুষ্টি দিবে ঠিক তেমনি আপনার বাচ্চার জন্য এটি অনেক পুষ্টিকর। কিন্তু দুধ ভালো ভাবে জাল না করে খাওয়া উচিত নয়। সব সময় দুধ পরিপূর্ণভাবে ফুটিয়ে খাওয়া নিশ্চিত করতে হবে।
- অবস্থায় আপনার এবং আপনার বাচ্চার জন্য ফল এবং সবজি যে স্বাস্থ্যকর এই সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন যে, গবেষণায় জানা গেছে, বিশ্বের প্রায় ৭৮ শতাংশ লোক না ধুয়ে ফল এবং সবজি খেয়ে ফেলে। না দোয়া ফল এবং সবজি গুলোর খোসাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর কীটনাশক ও ব্যাকটেরিয়া যা আমাদের বিভিন্ন ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য গর্ভাবস্থায় আমাদের না ধোয়া ফল খাওয়া যাবেনা।
- অ্যালার্জি সৃষ্টি করবে এরকম কোনরকম বাদাম বা অংকুর খাওয়া যাবেনা। কাঁচা অঙ্কুরের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রোটিন এবং খনিজ। কিন্তু সেটি কাঁচা অবস্থায় থাকলে তার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস থাকতে পারে যা আমাদের খাদ্য বিষাক্ততার কারণ হয়ে উঠতে পারে। এজন্য বিভিন্ন ধরনের অঙ্কুর বা বাদাম খাওয়ার আগে সামান্য পরিমাণ ভেজে নিয়ে রান্না করে নিয়ে খেতে হবে।
- রেস্টুরেন্টের বিভিন্ন ধরনের কেনা ও বাইরে দোকান থেকে বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে রেস্টুরাতে খাবার অর্ডার করার সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ এখানে খাবার তৈরি উপাদান গুলো সম্পর্কে কেউ নিশ্চিত ধারণা পায় না। সেগুলো বেশিরভাগ সময় অস্বাস্থ্যকর হয়ে থাকে। তারা বিভিন্নভাবে সবজি বা মাছ মাংস ভালোভাবে না ধুয়ে রান্না করে ফেলে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর হতে পারে।
- তাজা ফলের রস আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো আর গর্ভাবস্থায় তো এর কোন জুড়ি নেই। কিন্তু কাঁচা ফল বা সবজি মারাত্মক ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস দ্বারা দূষিত হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে। এজন্য বাইরের কোন ফলের রস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে অন্তত গর্ভকালীন সময়ে। আপনি চাইলে বাসায় ভালোভাবে স্বাস্থ্যবিধির মেনে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার সাথে ফলের রস নিজে হাতে করে খেতে পারেন।
- আমাদের মধ্যে অনেকেই চা বা কফি অনেক বেশি পছন্দ করে থাকে। চা বা কফি না খেয়ে দিনের শুরু বা শেষ না করলে তাদের দিনটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায় এরকম অনেক সংখ্যক লোক আমাদের মধ্যে রয়েছে। আপনি একজন কফির ফ্যান হলেও গর্ভাবস্থায় আপনার ডায়েটে ক্যাফেইন থাকা আপনার শরীরের জন্য ভালো লাগে। প্রতিদিন গ্রহণ করলে আপনার কম ওজনের শিশুর জন্ম হতে পারে বা প্রসবকালীন সময় শিশুর মৃত্যু অথবা ভ্রূণের মৃত্যু হতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় বিশেষ করে জ্ঞান জাতীয় খাবার গুলো বা প্রিজারভেটিভস জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাওয়া উচিত। বিভিন্ন ধরনের কোল্ড ড্রিংকস আমাদের অনেক পছন্দের হলেও এই সময়টাতে অন্তত এ ধরনের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা এগুলো আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর।
- আমরা অনেকের বাইরের কৃত্রিম মিষ্টি খেতে অনেক বেশি পছন্দ করি। আবার অনেকেই এই খাবারের প্রতি অনেক বেশি আসক্ত। গর্ভকালীন সময়ে এই ধরনের নাইটে সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা নাইটির জাতীয় খাদ্য গর্ভবতী মহিলাদের জন্য স্বাস্থ্য সমস্যা হওয়ার কারণ হতে পারে।
- অত্যাধিক চিনি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। অর্থাৎ আপনি যখন গরবস্থায় আইসক্রিম এবং চকলেট অনেকবার খেতে চাইবেন তখন আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা আস্তে আস্তে বাড়িয়ে তুলবে যা আপনার গর্ভে থাকার ভ্রূণের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। এজন্য যত কম চিনি খাওয়ার চেষ্টা করা হবে ততই আমাদের শরীরের জন্য ভালো হবে।
- এছাড়াও অতিরিক্ত ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বাইরের বিভিন্ন ধরনের বিরিয়ানি বা তেহেরি অথবা ফাস্টফুট জাতীয় খাবার একদমই খাওয়া যাবেনা। এগুলো বরাবরি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আর গর্ভাবস্থায় আমাদের বাচ্চার জন্য ভীষণ ক্ষতিকর।
- ভিটামিন অবশ্যই গর্ভবতী মহিলাদের জন্য পুষ্টির একটি উৎস। তবে অতিরিক্ত পরিমাণ ভিটামিন গ্রহণ করলে তার ক্ষতি করে প্রভাব পড়তে পারে গর্ভবতী মায়ের শরীরে। কারণ অতিরিক্ত ভিটামিন আপনার শরীরের ব্রণের স্বাভাবিক বৃদ্ধি প্রভাবিত করতে পারে এবং অকাল শ্রমের কারণ হতে পারে। তাই অবশ্যই ভিটামিন কোন ঔষধ খাওয়ার জন্য আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
- আমরা জানলাম মাতৃত্বকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের দৈনিক খাদ্য তালিকা ও সতর্কতা-নিষিদ্ধ খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।মাতৃত্বকালীন সময়ে আমাদের প্রত্যেকের খাবার নিয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম মাতৃত্বকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের দৈনিক খাদ্য তালিকা ও সতর্কতা-নিষিদ্ধ খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।তাহলে আর দেরি কেন আপনারা সকলেই এই টিপস গুলো ফলো করার চেষ্টা করবেন।আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।
আজকে এই পর্যন্তই। দেখা হবে পরের কোন পোস্টে।আজকের এই পোস্টে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।এ ধরনের আরো আর্টিকেল করতে এবং বিভিন্ন সম্পর্কে জানতে আমার ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url