কিডনির পাথর হলে বুঝবেন কিভাবে এবং দূূর করবেন কিভাবে জানুন

পৃথিবীর প্রাকৃতিক খনিজ উপাদান দিয়ে যেমন পাথর তৈরি হয় ঠিক তেমনি মানবদেহের ভেতরের খনিজ উপাদান দিয়ে আমাদের শরীরের বেশ কয়েকটি অঙ্গে পাথর হতে পারে। যেমনঃ পিত্তথলি, মূত্রথলি, অগ্নাশয় এসব অঙ্গে পাথর হতে পারে।
তবে কিডনি এবং মুত্রথলির পাথর অনেক মানুষের দেখা যায়। প্রিয় পাঠক আজকে আমার আর্টিকেল এর বিষয় কিডনির পাথর হলে বুঝবেন কিভাবে এবং দূূর করবেন কিভাবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য নিয়ে।

ভূমিকা

কিডনির পাথর হলে বুঝবেন কিভাবে এবং দূূর করবেন কিভাবে জানতে হলে অবশ্যই আমার আর্টিকেলে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। কিডনিতে পাথর আজকাল খুব স্বাভাবিক একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারী পুরুষ সকলের মধ্যেই এ ধরনের সমস্যা দেখা মিলছে। এই পাথরগুলো হওয়ার মাধ্যমে আমাদের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর যদি দেরিতে এই রোগ ধরা পড়ে তাহলে অনেকে মৃত্যু পর্যন্ত চলে যাচ্ছে।

কিডনির পাথর হলে বুঝবেন কিভাবে এবং দূূর করবেন কিভাবে জানুন

কিডনিতে পাথর হলে এটা বুঝতে পারা বড় দোষদায়। তবে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী ঠিকমতো পানি পান করলে, মূত্র জনিত কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা সে বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে কিংবা তলপেটে বা কোমরের ব্যথা করছে কিনা সে বিষয় নিয়ে আমাদের সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। কিডনির খেয়াল রাখা বলতে আসলে এইটুকুই বোঝায়।
সাধারণত কিডনি, মূত্রথলী এগুলার যত্ন সম্পর্কে বেশি কিছু জানেনা অধিকাংশ মানুষ। কিন্তু কিডনির সমস্যা বিশেষ করে কিডনিতে পাথর হওয়ার মতো সমস্যায় আক্রান্ত হওয়া মানুষের সমস্যা কম নয়। অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্য অভ্যাস এগুলোর কারণে কিডনিতে পাথর হয়ে থাকে।

 বিশেষজ্ঞদের মতে জানা যায়, কিডনিতে পাথর কয়টি আছে কোথায় আছে এবং কেমন অবস্থায় আছে এর ওপর নির্ভর করে অসুখের উপসর্গ। পাথর বিভিন্ন রকমের হতে পারে এবং বিভিন্ন জায়গায় থাকতে পারে ওষুধের মাধ্যমে সেটা গলিয়ে দেওয়া বা শরীরে বাইরে বের করার চেষ্টাও করে অনেকে। কিন্তু পাথরের সংখ্যা বেশি হলে কিংবা আকারে অনেক বড় হয়ে গেলে সেটা বের করা যায় না বরং অস্ত্রপাচার করে বের করতে হয়।
কিডনিতে পাথর হলে তলপেট থেকে ব্যথা কোমরেও যেতে পারে। অনেকেই কিডনিতে পাথর হওয়ার জন্য ঘন ঘন জ্বর আসে এবং তাপমাত্রা অল্প থাকলেও বারবার ঘুরে ফিরে এমন জ্বর হতে থাকে। মূত্রের রং অনেক পরিবর্তন হয়ে যায়। যদি আপনার প্রস্রাবের রং লালতে হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কেননা কিডনির সমস্যার জটিলতার কারণে মূত্র রং পরিবর্তন হয়।
কোমর এবং তলপেট ব্যথা হয় এবং এই ব্যথা যে একদম স্থায়ী হয় বিষয়টি এরকম নয়। মাঝেমধ্যে ব্যথা হয় আবার সেরে যায়। আবার বমি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এমনকি অনেকের বমি হতে থাকে। মাঝেমধ্যে পিঠের মধ্যেও ব্যথা হয়। এছাড়া প্রস্রাব করার সময় যদি ব্যথা হয় এবং প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও দুর্গন্ধ হয় তাহলে কিডনির লক্ষণ হতে পারে। শারীরিকভাবে দুর্বল এবং খিদে না পাওয়া কিডনি পাথর হওয়ার অন্যতম একটি লক্ষণ।

কিডনির পাথর দূর করবেন কিভাবে

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম কিডনিতে পাথর হলে কি কি লক্ষন আমাদের শরীরে আসতে পারে সে সম্পর্কে। কিডনির পাথর কিন্তু খুবই সাধারণ একটি সমস্যা হয়ে গেছে সেও তো অনেকেই এটি অস্ত্র পাচার করে বের করে নিচ্ছে। তবে কিডনির পাথর যদি ৪ মিলিমিটার বা তার থেকে ছোট হয়ে থাকে তাহলে ৯০ শতাংশ সম্ভাবনা থাকে বেশি প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে যাবে।
এক্ষেত্রে ওই রোগীদের বেশি বেশি পানি পান করতে হবে এবং ব্যথার ওষুধ খেতে হবে। আর কয়েকদিন পরপর এক্সট্রা সহ আরো বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হবে যে পাথরটা ছোট হয়েছে কিনা। কিন্তু পাথরটি যদি মূত্রনালী কিংবা ইউরেটারের কোন অংশে আটকে যায় আর নিচে নামে প্রস্রাবের প্রদাহে বাধা সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ হয় সেক্ষেত্রে পাথর ছোট হলেও বের করে প্রস্রাবের বাধা দূর করতে হবে।
পাঁচ থেকে দুই সেন্টিমিটার আকারের হয়ে থাকে তাহলে বাইরে থেকে শব্দ ওয়েব দিয়ে পাথর দূর করা সম্ভব। পরে সেই পাথরগুলো প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে আসবে। কিডনি থেকে ছোট আকারের পাথর অপারেশনের বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে চিকিৎসকদের। কিডনি পাথর অপসারণের সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হল পিসিএনএল।
এর মাধ্যমে ছোট্ট একটি ছিদ্র করে পেটের দিকে দিয়ে যেকোনো আকার পাথর ভেঙে ১০০ শতাংশ বের করা সম্ভব। উন্নত দেশগুলোর মত আমাদের দেশেও কিডনি পাথর করার জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এখন আর পেট কেটে কিডনি পাথরের সার্জারি নেই বললেই চলে। এজন্য রোগীকে পুরোপুরি অজ্ঞান হতে হয় না।
কিডনির পাথর ইউরেটার বা মূত্রনালীতে নেমে এলে সেটা ইউরেটেরোস্কোপের মাধ্যমে প্রস্রাবের নালীতে বের করা হয়ে থাকে। মূত্রথলির পাথর পেট না কেটেও যন্ত্রের সাহায্যে প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে এখন বের করা সম্ভব। মনে রাখবেন এমন অনেক ওষুধ রোগী চেয়ে থাকে যেটা খেলে পাথর গলে যাবে বা বের হয়ে যাবে। সত্যিকার অর্থে এরকম কোন ঔষধ নাই। তাই একবার পাথর হলে ছোট অবস্থাতে ই নিজে নিজে বের হওয়ার ওষুধ খেয়ে বের করতে হবে।

কিডনির পাথর প্রতিরোধের উপায়

কিডনি আমাদের শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। খাদ্যের অভ্যাসের কিছু পরিবর্তন এবং পর্যাপ্ত পানি পান করার কিডনির পাথর প্রতিরোধের অন্যতম উপায়। তবে কিডনির পাথর বেরিয়ে গেলে কিংবা অস্ত্র পাচার করার পরেও কিডনির পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য যাদের একবার পাথর হয়েছে তাদের সব সময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সব সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। কখনো যেন শরীর শুষ্ক না থাকে সে বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। কতটুকু পানি আপনার জন্য প্রয়োজন সেটা নির্ভর করে আপনার কাজের ধরন এবং অবস্থান ও আবহাওয়ার ওপর। সেজন্য যারা বাইরে কিংবা মাঠে কাজ করেন তাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পারেন নিশ্চিত করতে হবে।
যাদের আগে পাথর হয়েছে তাদের সাধারণত বলা হয় এমন পরিমাণ পানি ও তরল পান করুন যাতে প্রস্রাব ২৪ ঘন্টায় দুই লিটারের মতো হয়ে থাকে। এসব বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। অবস্থান ভেদে দুই থেকে চার লিটার পানি পান করার প্রয়োজন হতে পারে। সেদিকে খেয়াল রাখুন। কোন অসুখের কারণে প্রস্রাবের বাধা অথবা সংক্রমণ থাকলে তার চিকিৎসা করাতে হবে।
খাদ্যে অবশ্যই লবনের পরিমাণ কমাতে হবে। কিডনি থেকে পাথর বের করার পর সিটি রাসায়নিক পরীক্ষা করতে হবে। ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথরের ক্ষেত্রে যেসব খাদ্যর মধ্যে অক্সালেট বেশি থাকে সেগুলো কম খেতে হবে। যেমনঃ পালং শাক, মাখন, স্ট্রবেরি, চকলেট এবং দুগ্ধ জাতীয় খাবার। আর যদি প্রস্রাবের মধ্যে সাইট্রেট কম থাকে তাহলে আপনি খাবারের মাধ্যমে পটাশিয়াম সাইট্রেট খেতে পারেন। এতে করে আপনার প্রস্রাবে এসিডোসিস কমবে।
অজ্ঞাত কারণে প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম বেড়ে গেলে মুত্র-বর্ধক থাইরয়েড জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। ইউরিক এসিড থেকে পাথর হলে লাল মাংস খাওয়া কমাতে হবে বা একদম বাদ দিয়ে দিতে হবে। মেটাবলিক সমস্যার কারণে যদি শরীরে পাথর হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কিডনির পাথর দূর করার ঘরোয়া উপায়

কিডনির ভেতরে মিনারেল জমে ক্রিস্টাল এর মত একটি পদার্থ তৈরি করে যাকে কিডনির পাথর বলা হয় থাকে। অর্থাৎ ক্যালসিয়াম এবং অক্সালেট এর ডিপজিশন হলে এই রোগ হয়ে থাকে। কিডনি পাথর বড় হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কিন্তু পাথর যদি খুব ছোট হয়ে থাকে তাহলে আপনি কয়েকটি ঘরোয়া প্রতিকারের মাধ্যমেও কিডনির পাথর অপসারণের চেষ্টা করতে পারেন। প্রিয় পাঠক চলুন তাহলে জেনে নেই কিডনির পাথর দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কেঃ
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। ছোট আকারের পাথর হলে পানি পান করার মাধ্যমে পাথর অপসারণ করা সম্ভব।
  • তুলসীর পাতার মধ্যে থাকা অ্যাসিটিক এসিড আমাদের কিডনির পাথরকে ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত দুবার করে তুলসী পাতার রস করে খেতে হবে। কিংবা আপনি তুলসী পাতার চা বানিয়েও খেতে পারেন।
  • পাতি লেবুর রসের মধ্যে রয়েছে সাইট্রিক এসিড এটা আমরা সকলেই জানি। ক্যালসিয়াম জাত পাথর তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে থাকে এবং এই পাথরগুলোকে ভেঙে বের করতে সাহায্য করে থাকে। এজন্য রোজ সকালবেলা উঠে পানির সঙ্গে লেবুর রস মিশ্রিত করে পানি পান করুন।
  • ডালিমের রসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের কিডনিকে সুস্থ রাখে এবং পাথর ও অন্যান্য টক্সিন কে বের করে দিতে সাহায্য করে থাকে। এটি দিনে কতবার খাবেন সেটা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারণ করুন।
  • মেথি আমরা কমবেশি সকলেই চিনি। মেথি আমাদের চুলের জন্য ভীষণ উপকারী একটি উপাদান। কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য ব্যবহার হয়। একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে বীজগুলো কিডনিতে জনকৃত পাথর হ্রাস করতে পারে এবং কিডনির পাথর প্রতিরোধ করতে পারেন। এজন্য এক কাপ ফোটানো পানির মধ্যে এক থেকে দুই চামচ শুকনা মেথি ভিজিয়ে রেখে সেটি প্রতিদিন পান করুন।
  • গবেষণা অনুযায়ী দেখা গেছে, কালোজিরা আমাদের কিডনিতে ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্টোন গঠনে উল্লেখযোগ্যভাবে বাধা প্রদান করে। ২৫০ এমএল গরম পানিতে হাফ চামচ কালোজিরা ভিজিয়ে রেখে দিনে দুইবার পান করতে পারেন। তবে এইসব ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • ফল এবং সবজিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশি থাকে এবং ক্ষারীয় প্রস্তাব বজায় রেখে প্রয়োজনে পুষ্টি সরবরাহ করে যা আমাদের কিডনি স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। এজন্য সব সময় আমাদের টাটকা ফলমূল এবং শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। তাহলে কিডনির পাথর ঘরোয়া উপায় প্রতিরোধ করা যাবে।
  • গমের রুটি কিংবা ওটস খেতে হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের পাথর গঠনের ঝুঁকি কমিয়ে এনে প্রয়োজনে পুষ্টি সরবরাহ করে।
  • প্রোটিন গঠনের ভারসাম্য নিশ্চিত করতে হবে। অত্যধিক প্রাণীর প্রোটিন ইউরিক এসিডের মাত্রা বাড়াতে পারে যা কিছু নির্দিষ্ট ধরনের পাথর তৈরি করতে পারে। যার কারণে প্রাণিজ প্রোটিন এড়িয়ে চলতে হবে।

কিডনিতে পাথর হলে ভুলেও যে খাবার খাবেন না

আমাদের শরীরের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলেও আমাদের কিডনি। তাই এর সঠিক খেয়াল রাখা আমাদের দায়িত্ব। এটি আমাদের শরীরে চাটনি হিসেবে কাজ করে থাকে। আমাদের শরীরের সব ধরনের বজ্র পদার্থ বের করে দিতে পারে কিডনি। এছাড়াও বিভিন্ন হরমোন তৈরি করা থেকে শুরু করে হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে কিডনি।
তবে আমাদের জীবনে তো আসলে ভুলভ্রান্তির কোন শেষ নেই। আমরা ভুলেই অনেক খাবার খেয়ে থাকি যেগুলোর কারণে আমাদের শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা হয়ে থাকে। কিন্তু আমরা নিজেও জানিনা যে আমাদের অজান্তে আমরা কোন খাবারগুলো খেয়ে আমাদের শারীরিক সমস্যাগুলো আমরা নিজেই ঘটাচ্ছি। এমনকি খারাপ খাদ্য অভ্যাস থেকেও কিডনিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দেখা গেছে কিডনিতে পাথর হওয়ার রোগীদের মধ্যে চিনি, সোডিয়াম, লবণ এবং ফসফরাস এইসব খাওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি। তবে মাথায় রাখতে হবে যে কিছু খাবার খেলে কিডনিতে পাথরের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। সেসব খাবার থেকে অবশ্যই আমাদের নিজেকে বিরত রাখতে হবে। প্রিয় পাঠক চলুন তাহলে জেনে নেই কোন খাবার গুলো খেলে আমাদের কিডনিতে পাথরের সমস্যা বাড়তে পারে।

কামরাঙ্গা

কামরাঙ্গার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্য গুনাগুন। এই খাবার বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানে ভরপুর। তবে আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যে এই ফলটি কিডনির সমস্যা রোগীদের জন্য ভালো নয়। কিছু গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে নেফ্রটক্সিসিটি এবং একিউট কিডনি ডিজিজ হতে পারে এই ফল বেশি খেলে। আর আগে থেকেই যদি আপনি কিডনির সমস্যা থেকে থাকে তাহলে এই ফল এড়িয়ে চলুন।

কলা

কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ সেটা আমরা সকলেই জানি। এই খাবার অনাআসে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে দিতে পারে। ভিটামিন, মিনারেল এবং পটাশিয়াম সহ বিভিন্ন ধরনের ক্যালরি রয়েছে এই ফলটির মধ্যে। তাই এই ফল নিয়মিত খেতে হবে কিন্তু কিডনিতে পাথর থাকলে এই খাবার কম খাওয়া বা একদমই এড়িয়ে চলা উচিত।
কেননা এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং মিষ্টি। অনেক সময় পটাশিয়াম আমাদের শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের হতে বাধা প্রদান করে যার কারণে তার পরিপ্রেক্ষিতে কিডনিতে পাথর জমতে পারে। তাই চেষ্টা করুন এই ফলটি কম খাওয়ার। তবে কিডনিতে পাথর থাকার পরেও খেতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

এভোকাডো

এই ফলটি আমাদের শরীরের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম। কিন্তু পটাশিয়ামযুক্ত খাবার খেলে কিডনি সমস্যা হতে পারে। কারণ তখন কিডনি সঠিকভাবে খনিজ উপাদান গুলো বের করতে পারে না। এই বিষয়টি প্রথমেই বুঝে নেওয়া দরকার। এই খাবারগুলো খেতে সতর্ক থাকতে হবে।

কমলালেবু

শীতকালে বাজারে ছড়াছড়ি যাই কমলালেবুর। এই লেবু খেতে পারলে আমাদের শরীরের এনার্জি অনেক বৃদ্ধি পায় এবং রোগ ব্যাধি আমাদের কাছে আসতে পারে না। এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পটাশিয়াম। তবে কিডনিতে পাথর হলে এই খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। পটাশিয়াম অবশ্যই কিডনির জন্য ভালো নয়।
এছাড়াও অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার এবং বাইরের ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। পাশাপাশি অতিরিক্ত চিনি খাওয়া এবং ক্যাফিন বন্ধ করতে হবে। অবশ্যই ধূমপান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কিডনিতে পাথর হওয়ার সঙ্গে সরাসরি জড়িত না হলেও অ্যালকোহল কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এজন্য অবশ্যই অ্যালকোহল বন্ধ করতে হবে।

পাঠকের শেষকথা

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম কিডনির পাথর হলে বুঝবেন কিভাবে এবং দূূর করবেন কিভাবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য। এছাড়াও আরো জানলাম কিডনিতে পাথর হলে কোন খাবার এড়িয়ে চলা উচিত এবং ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে কিডনির পাথর প্রতিরোধ করা সম্ভব সে সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য।আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।
যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন।তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।আজকে এই পর্যন্তই।দেখা হবে পরের কোন পোস্টে।আজকের এই পোস্টে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।
এধরনের আরো আর্টিকেল পড়তে এবং বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে আমার ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url