ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ জেনে নিন বিস্তারিত
জীবনের কখনো কেউ জ্বর বা মাথা ব্যাথাতে ভুগেনি এরকম মানুষ হয়তো দুনিয়াতে নেই। কারণ অসুস্থ হয়ে যাওয়ার অন্যতম একটি উৎসর্গ হচ্ছে জ্বর এবং মাথা ব্যথা। সাধারণত অনেকে জ্বর হলে দুই তিন দিন হওয়ার পর আপনা আপনি সেটা ঠিক হয়ে যায়।তেমন কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে না। প্রিয় পাঠক আজকে আমার আর্টিকেলের বিষয় ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ নিয়ে। অনেকে জ্বর হলে কোন গুরুত্ব দেয় না বা অবহেলা করে। কিন্তু কোন অসুখে অবহেলা করা উচিত নয়।
ভূমিকা
ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ জানতে হলে আমার আর্টিকেলের সাথেই থাকুন। অনেক সময় আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে আমাদের গায়ের তাপমাত্রা উঠানামা করে এবং জ্বর মাথা ব্যথা প্রবণতা দেখা দেয় অনেক বেশি। মাথাব্যথা এবং জ্বরে আক্রমণ থেকে দ্রুত নিরাময়ের চেষ্টা করে আক্রান্ত ব্যক্তি। কেননা জ্বর এবং মাথা ব্যথার কারণে অনেক মানুষ স্বাভাবিকভাবে কাজকর্ম করতে পারে না এবং তারা খুব অসস্থির মধ্যে থাকে।
ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ জেনে নিন বিস্তারিত
অন্যদিকে জীবন যাপন এবং অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যের কারণে অনেকে এই ধরনের সমস্যা দেখা যায়। আবার আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা জ্বর এবং মাথা ব্যথা হলে হুট করে কোন ওষুধের দোকান থেকে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ঔষধ খেয়ে থাকে। ঘরোয়া এমন কিছু টোটকা রয়েছে বা পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার মাথা ব্যথা ও জ্বর হওয়ার সমস্যা দূর করতে পারবেন। কিন্তু তার আগে আপনার সর্বপ্রথম জানতে হবে ঘন ঘন মাথা ব্যথা ও জ্বর হওয়ার কারণ সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেই কি কি কারণে ঘন ঘন মাথা ব্যথা ও জ্বর হয়।
ডেঙ্গু জ্বর
সাধারণত জ্বর বলতে আমরা বুঝি আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি। এটি তখনই হবে যখন আপনার শরীর সংক্রমনের সাথে লড়াই করছে। এটির অন্যতম কারণ হতে পারে ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক এবং বিভিন্ন পরজীবীর সংক্রমণ। অন্যান্য অসুস্থতা এবং প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে।একজন সাধারণ মানুষের তো শরীরের তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট।
যখনই এর বেশি আপনার শরীরে তাপমাত্রা হবে তখনই বুঝতে হবে যে আপনার শরীরে জ্বর এসেছে। জ্বরের কারণে আপনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং সাথে মাথাব্যথাও হতে পারে। জ্বরের সাথে ঘাড় এবং শরীরের ব্যথা সাথে উচ্চ তাপমাত্রা এবং বমি করা বা খাবার খেতে না পারা, তিন দিনের বেশি জ্বর থাকা এবং শরীরে রাশ বের হওয়া, খিচুনি হওয়া, চোখ শুকিয়ে আসা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশের ডেঙ্গু মৌসুম চলছে। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এবং ডেঙ্গুর জন্য চিকিৎসা দিন রয়েছে প্রায় নয় হাজার মানুষেরও বেশী। এজন্য এরকম মৌসুমীর কারো সর্দি কাশি হলে বা গলা ব্যাথা হলে তাকে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অনেক রোগীর জ্বর হালকা গলা ব্যথা এবং কাশি থেকে হঠাৎ করে খুবই খারাপ অবস্থা হয়ে যাচ্ছে এবং অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। তারপর আর তাদের কাজ পাওয়া যাচ্ছে না এবং ব্লাড প্রেসার পাওয়া যাচ্ছে না এবং সাথে সাথেই অনেকেই মারা যাচ্ছে। এরকম সিনড্রোমকে অনেকে ডেঙ্গু সিনড্রোম বলে।
ইয়োলো ফিভার বা হলুদ জ্বর
ইয়োলো ফিভার বা হলুদ জ্বর সাধারণত মশার কামড় থেকে ছড়ায় এবং এই মশার সাধারণত দিনের বেলা কামড়ায়। এডিস মশার কামড়ে এই জ্বর ছড়িয়ে থাকে। বিশ্ব-স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, এই জ্বরের লক্ষণ গুলোর মধ্যে রয়েছে মাংসপেশি ব্যথা, মাথা ব্যথা, ক্ষুধামন্দা বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া। সাধারণত তিন থেকে ছয় দিনের মধ্যে এই জ্বর ভালো হয়ে যায়।
তবে খুবই কম সংখ্যক রোগী এই ধরনের জ্বরে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক এসব উপসর্গ থেকে সেরে ওঠার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে পৌঁছে যায়। এবং দ্বিতীয় ধাপের মধ্যে রয়েছে শরীরের তাপমাত্রা প্রচন্ড বেড়ে যাওয়া এবং আবার জ্বর আসা। দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশেষ করে লিভার এবং কিডনি আক্রান্ত হয়।
যার কারণে মানুষ জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে যায়।এই কারণে একে ইয়েলো ফিভার বা হলুদ জ্বর বলা হয়ে থাকে। জ্বর হলে আমাদের পেট ব্যথা এবং বমি হয় এবং মূত্রের রং গারো হলুদ হয়ে থাকে। চোখ বা পেটে রক্তক্ষরণ হতে পারে। যেসব রোগী এই ধাপে পৌঁছায় তাদের মধ্যে ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে মারা যায়। এই জ্বর হলে নিরোধক ওষুধ নেয়। তবে এটি টিকা দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ম্যালেরিয়া জ্বর
কারো যদি হঠাৎ করে জ্বর হয় এবং জ্বরের সাথে ঠান্ডা মাথা ব্যথা ক্লান্তি ভাব বিভ্রান্ত কিছুই এবং নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয় তাহলে দেরি না করে অবশ্যই তাকে চিকিৎসা করাতে হবে। কেননা জ্বর হওয়ার পাশাপাশি যদি এরকম লক্ষণ দেখা যায় তাহলে তার প্রাণঘাতি হওয়া সম্ভবনা থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী জানা যাই জ্বরের সাথে এই লোকজন গুলো দেখা দিলে সেটি ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণ।
ম্যালেরিয়া সাধারণ এনোফিলিস নামক এক ধরনের স্ত্রী মশার কামড়ে ছড়িয়ে থাকে। এছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃতবিভিন্ন সুচ কিংবা রক্ত গ্রহণ করলে এটি অন্য আরেকজনের দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে এই জ্বর মারাত্মক আকার ধারণ করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ওই ব্যক্তি মারা যেতে পারে। ম্যালেরিয়া একটি প্রাণঘাতী রোগ গ্রীষ্মমন্ডলীও দেশগুলোতে অনেক বেশি সংক্রমিত হয়।
এছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী দেখা যায়, সারা বিশ্বের ২০২১ সাল পর্যন্ত ৬ লাখ ১৯ হাজারের বেশি মানুষ ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু গর্ভবতী নারী থেকে শুরু করে সফরে যাওয়া ব্যক্তি এবং এইচআইভি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণত ম্যালেরিয়া ঝুঁকিতে বেশি থাকে।
টাইফয়েড
অন্যদিকে টাইফয়েড রোগের অন্যতম উপসর্গ হচ্ছে উচ্চমাত্রায় জ্বর হওয়া। এছাড়াও এই রোগের অন্যতম উপসর্গ গুলোর মধ্যে রয়েছে প্রচন্ড ক্লান্তি, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, পেট ব্যথা এবং আমাশয় ও ডায়রিয়া। জ্বরের সাথে এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে প্রাণহানি হতে পারে যে কোন সময়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার খুব তাড়াতাড়ি।
অন্যদিকে টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হলেও অনেক রোগীর থেকে বিভিন্ন ধরনের ফুসকুড়ি দেখা যেতে পারে। পরে ওই রোগীর দেহে যদি সেটি মারাত্মক আকার ধারণ করে তাহলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী প্রতিবছর এক লাখ দশ হাজার মানুষ গোটা বিশ্বজুড়ে টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
সালমোনিলা টাইফিন নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনে এই রোগ ছড়ায় বলে জানা যায়। এই ব্যাকটেরিয়া একবার যদি শরীরে ঢুকে যায় তাহলে তা বিভাজিত হতে থাকে। এবং সাথে সাথে এটি রক্তে মিশে যায়। সাধারণত এটি দূষিত খাবার বা পানির মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। রক্ত পরীক্ষা করার মাধ্যমে টাইফয়েড রোগ ধরা পড়ে।
মাথা ব্যথা হওয়ার কারণ
মাথা ব্যথার ধরন খুঁজে নির্ণয় করা সম্ভব কেন এবং কি কারনে মাথা ব্যাথা করছে। মাথা ব্যথা হওয়ার দুটি পরিচিত কারণ হলো মাইগ্রেন এবং টেনশন। এরমধ্যে ৭০ শতাংশ টেনশন টাইপ মাথা ব্যথা এবং ১১ শতাংশের জন্য দায়ী মাইগ্রেন। ধূমপান মদপান এবং মাদকাসক্ত কিংবা অনিয়মিত ও অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খাওয়া এবং অতিরিক্ত গরম আবহাওয়া শারীরিক পরিশ্রম কিংবা মানসিক চাপ মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে।
কাজেই মাথাব্যথা থেকে পরিত্রাণ পেতে সবাই প্রথমে আমাদের দৈনিক অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। আজকাল বেশিরভাগ নারী মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগে থাকেন। সাধারণত ১৫ থেকে ১৬ বছর বয়স থেকে মাইগ্রেনের লক্ষণ দেখা যায়। স্থায়ী হয় সাধারণত 40 থেকে 50 বছর বয়স পর্যন্ত। এই ধরনের মাথাব্যথা হওয়ার বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমনঃ মাথায় যে কোন এক সাইড ব্যথা হয়।
একবার এক পাশে ব্যথা হলে পরের বার অন্য পাশে ব্যথা হতে পারে। চার থেকে আট ঘন্টা এবং সর্বোচ্চ 72 ঘন্টা পর্যন্ত ব্যথা স্থায়ী হতে পারে। মনে হতে পারে মাথায় দুই পাশের রগ টান ধরে আছে। ব্যাথায় তীব্রতায় কোন কাজ ঠিকভাবে করা যায় না। আলো বা শব্দ থেকে এই মাথা ব্যথা আরো তীব্র হতে থাকে। মাথা ব্যথার সঙ্গে হালকা বমি বমি ভাব হতে পারে অনেকের।
মাথা ব্যাথা শুরু হওয়ার আগে অনেক সময় চোখের সামনে নাচানাচি বা আঁকাবাঁকা লাইন ইত্যাদি দেখা যেতে পারে। এবং এই মাথাব্যথা অন্ধকারে শুয়ে থাকলে আস্তে আস্তে কমে যায়। আর যখন টেনসনে মাথা ব্যথা হয় তখন আমাদের মাংসপেশির সংকোচনের কারণে হয়ে থাকে। এ ধরনের মাথা ব্যথা পুরো মাথা জুড়ে হয়ে থাকে। মাথা কেউ চেপে ধরে আছে এরকম অনুভব হতে পারে।
তবে এই মাথাব্যথা মাইগ্রেনের মত এত তীব্র হয় না। এ ধরনের মাথাব্যথা কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। দুশ্চিন্তা পারিবারিক টেনশন এবং মানসিক চাপের সঙ্গে এই মাথাব্যথার সম্পর্ক রয়েছে। এই ধরনের মাথাব্যথা থেকে দ্রুত পরিত্রাণ পেটে বিভিন্ন ব্যাথা নাশক ঔষধ যেমন প্যারাসিটামল ইত্যাদি সেবন করা যেতে পারে।
তবে এক্ষেত্রে প্যারাসিটামল খেলে অবশ্যই গ্যাসের ওষুধ খেতে হবে।আবার অনেক সময় অতিরিক্ত ওষুধ সেবন করার ফলেও মাথাব্যথা হয়। এজন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত ওষুধ খাওয়া বাদ দিতে হবে এবং অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ খেতে হবে।
ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর থেকে মুক্তির উপায় জানুন
আমরা যখন কোন অসুখে ভাবি তখন সর্বপ্রথম আমাদের সমস্যা নির্ণয় করতে হবে এবং তারপরে সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে। যখন আমাদের অতিরিক্ত মাথা ব্যথা এবং জ্বর হবে তখন অবশ্যই এর কারণ নির্ধারণ করতে হবে আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে। তারপর সে অনুযায়ী আমাদের সমাধান বের করতে হবে। তবে ঘন ঘন মাথা ব্যথা এবং জ্বর থেকে মুক্তির কয়েকটি উপায় রয়েছে। সেগুলো হলোঃ
- প্রচুর পরিমাণে তরল পানি পান করতে হবে। যে কোন মৌসুমীর রোগ নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেই আপনাকে সর্বপ্রথম উপদেশ দিবেন প্রচুর পানি খাওয়া এবং অন্যান্য তরল পান করা। কাজেই আপনাকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।এর কারণ হলো জ্বর যখন হয় তখন আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে এবং শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করলে আমাদের শরীর খুব দ্রুত পানি শূন্যতার দিকে যেতে থাকে।
- তাই পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা খুবই জরুরী।এক্ষেত্রে কুসুম গরম পানি ফলের শরবত এবং ডাবের পানি প্রতিদিন রাখতে হবে। জ্বর সর্দি এবং ঘন ঘন মাথা ব্যথা হলে খেয়াল রাখতে হবে প্রতিদিন যেন আজ থেকে ১২ ক্লাস পানি পান করা হয়।আর যখনই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা হবে তখন আমাদের শরীর থেকে জীবাণু ও অন্যান্য বিষাক্ত উপাদান বের হয়ে যাবে।
- কপাল এবং ঘাড়ের পেছনের অংশে পানিপটি দিয়ে জ্বর কমানো অতিকার্যকরি একটি বিষয়।গোসলের পরিবর্তে কুসুম গরম পানিতে কাকুর ভিজিয়ে গা মুছলেও খুব দ্রুত জ্বর ছেড়ে যায়। তবে এক্ষেত্রে চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া জ্বর নিয়ে ঠান্ডা পানিতে গোসল করা যাবে না। এক্ষেত্রে জ্বর আরো বেড়ে যেতে পারে এবং শরীরে কাঁপুনি দেখা দিতে পারে।এমনটি শেষ পর্যন্ত আরো মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
- অসুস্থ অবস্থায় যত বেশি সক্রিয় থাকবেন ততই আপনি তাপমাত্রা বাড়বে তাই বিশ্রাম থাকলে শরীরের তাপমাত্রা কমবে এবং রোগমুক্ত হবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে। মৌসুমী সর্দি কাশি এবং জ্বর সারতে ওষুধ সব সময় প্রয়োজন না হলেও জ্বর ১০২ ডিগ্রী ফাইনাইট বাতাস বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে অবশ্যই।
- অন্যদিকে মাথাব্যথা দূর করার জন্য বহু বছর ধরে অকুপ্রেসার পদ্ধতি ব্যবহার করে আসছেন অনেকেই। এই ছোট্ট ঘরোয়া পদ্ধতির মাধ্যমে খুব সহজে এক মিনিটের মধ্যে আপনার মাথা ব্যথা দূর হতে পারে। এক্ষেত্রে বাম হাতে বৃদ্ধা আঙ্গুল এবং তর্জনীর মাঝখানের অংশে অন্য হাতে বৃদ্ধাঙ্গুল এবং তর্জনী দিয়ে চাপ দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মেসেজ করতে হবে।একইভাবে ডান হাতে করতে হবে।বিশেষজ্ঞ টা বলেন আশা করা যায় এতে এক মিনিটের মধ্যে মাথা ব্যথা দূর হয়ে যাবে।
- এছাড়াও কিছু লবঙ্গ কড়াই এর মধ্যে দিয়ে গরম করে নিন। সেই গরম লবঙ্গ একটি রুমালের মধ্যে নেই এবং এক মিনিট এই রুমালের গন্ধ নিন। দেখবেন আপনার মাথা ব্যাথা নেমে সেই দূর হয়ে গেছে।
- এছাড়াও মাথা ব্যথা যদি বেশি হয় তবে এই ঘরোয়া পদ্ধতি চেষ্টা করে দেখতে পারেন সেটা হল এক টুকরো আপেল চিবিয়ে দেখতে পারেন এবং এতে সামান্য লবণ ছিটিয়ে নিবেন। এটা দ্রুত মাথা ব্যথা মুক্ত করতে সাহায্য করে।
- এক পিস টাটকা আদা চিবাতে পারেন ৬০ সেকেন্ডের মত।এই আদা চিবিয়ে খাওয়ার কারণে আপনার মাথা ব্যাথার দূর হয়ে যাবে ও তাড়াতাড়ি। আদার গন্ধ খুব বাজে হলেও এটি খুবই কার্যকর।
- অন্যদিকে অস্বস্তিকর মাথা ব্যথা কমানোর জন্য অন্যতম একটি ঘরোয়া উপাদান হলো পুদিনা পাতার রস। আর পাতার রসের মধ্যে রয়েছে মেন্থল এবং মেন্থল জাতীয় উপাদানগুলো আমাদের মাথা ব্যথা দূর করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।এছাড়াও আমাদের শরীরে এক ধরনের আরামদায়ক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যার কারণে খুব সহজে আমরা মাথা ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি এই পুদিনা পাতার রস খেলে।
- অন্যদিকে কিছুক্ষণ পুদিনা পাতা একটি বাটিতে ভিজিয়ে রাখার পর সেটি ভালোভাবে বেটে আপনার কপালে লাগিয়ে রাখুন। বিশেষ করে যেখানে মাথা ব্যথার প্রবণতা বেশি সেখানে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখবেন। দেখবেন আপনার মাথা ব্যথা অনেকটা কমে গেছে।
- এছাড়াও ঘন ঘন মাথা ব্যথা এবং জ্বর থেকে পরিত্রাণ পেতে আপনার অবশ্যই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। এজন্য অবশ্যই আপনাকে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে এবং কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন সি জাতীয় খাবার রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যে এমন খাবার তালিকায় রাখা দরকার যেগুলো খুব সহজেই হজম হতে পারে।
- তবে অসুস্থ থাকার সময় আপনি চিকেন সুপ বা বিভিন্ন ধরনের ভেজিটেবল ওষুধ খেতে পারেন। এতে করে আপনার শরীর ঠিকঠাক মত কাজ করতে পারবে।খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন সি জাতীয় খাবার রাখতে হবে যাতে করে আমাদের শরীর পুনরুদ্ধানি সাহায্য করে এবং নিরাময় করতে সাহায্য করতে পারে।
পাঠকের শেষকথা
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য। এছাড়াও আরো জানলাম ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর থেকে মুক্তির বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন।তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন।
সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।আজকে এই পর্যন্তই।দেখা হবে পরের কোন পোস্টে।আজকের এই পোস্টে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।এধরনের আরো আর্টিকেল পড়তে এবং বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে আমার ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url