অবান্তর কথা কম বলার টোটকা সম্পর্কে জানুন বিস্তারিত

আপনি কি লোকজনদের সামনে কথা বলতে লজ্জা বা ভয় পান! গুছিয়ে কথা বলতে পারেন না! অবান্তর বিভিন্ন ধরনের কথা বলে থাকেন? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তি তখনই কথা বলে যখন আসলে তার কথা বলার কিছু থাকে।
অবান্তর কথা কম বলার টোটকা সম্পর্কে জানুন বিস্তারিত
কম কথা বলার মানে এই নয় যে তিনি কম ভাবেন বা কম বুঝেন। কম কথা বলার অর্থ হচ্ছে আপনি সবসময় বুদ্ধিমান। প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমার আর্টিকেলের মধ্যে আপনারা জানতে পারবেন অবান্তর কথা কম বলার বিভিন্ন টোটকা সম্পর্কে।

ভূমিকা

অবান্তর কথা কম বলা টোটকা সম্পর্কে জানতে হলে মনোযোগ সহকারে আমার আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা লোকজনদের সাথে বা অপরিচিত লোকের সাথে কথা বলতে খুবই সংকোচ বোধ করে থাকে। যেমন কি বলতে কি বলে ফেলে দেবে সে কি ভাববে এরকম চিন্তা ভাবনা তার মধ্যে থাকে। কিন্তু অবান্তর কথা কম বলে যদি আপনি ভালোভাবে কথা বলেন তাহলে অবশ্যই সবার কাছে আপনি পরিচিত হয়ে যাবেন।

অবান্তর কথা কম বলার টোটকা সম্পর্কে জানুন বিস্তারিত

আপনার কথা হচ্ছে আপনার একটি পরিচয়। ব্যক্তিগত বা সামাজিক সম্পর্ক তো আছে বিভিন্ন পেশাগত সম্পর্কের ক্ষেত্রেও নিজের কথোপকথনটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই কথা বলার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের বিষয়গুলো আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

যেমন কথা তেমনই থাক

ধরুন আপনি কারো সাথে কথা বলছেন এবং সেই কথোপকথনটার ধরন কেমন সেটা সর্বপ্রথম আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। হুট করে যখন তখন যদি আপনার আবেগ আপনি প্রকাশ করেন তাহলে তার অনুভূতি হবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। আবার পেশাগত আলাপের সময় অবশ্যই আপনার ব্যক্তিগত সব অনুভূতিকে দূরে সরিয়ে শুধুমাত্র পরিস্থিতি অনুযায়ী কথা বলতে হবে।

কি বলবেন ভেবে নিন

কি বিষয়ে কথা বলবেন কি বলতে চাচ্ছেন বা তারা কি বুঝতে পারছে এই ধরনের বিষয়গুলো আগে আপনি মনের মধ্যে ঠিক করে নিবেন। আলাপ শুরু করার আগে আপনার ভাবনার সঙ্গে আপনার কথোপকথন একেবারে হয়তো মিলে যাবে না কিন্তু আপনার কথার মধ্যে একটা গতিশীল ভাব থাকতে হবে। যেটা আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। এজন্য কোন বিষয়ে কথা বলার আগে কি বলবেন সেটা অন্তত একটু সময় নিয়ে ভেবে নিবেন।

মন দিয়ে কথা শুনুন

আপনাকে যখন কেউ কিছু বলতে চাচ্ছে বা বলছে তখন অবশ্যই আপনি তার কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করবেন। তিনি কিভাবে বলতে চাচ্ছেন কিভাবে বলছেন সেটা অবশ্যই খেয়াল করতে হবে। কথার মাঝে কোন কিছু বুঝতে না পারলে অবশ্যই তাকে প্রশ্ন করুন। আপনার সাথে যে কথা বলছে তার খানিকটা প্রতিফলন ঘটার নিজের কথার মাধ্যমে।
ধরুন কেউ আপনাকে তার ভ্রমণের গল্প বা টুরের গল্প শোনাচ্ছে। তখন আপনি তাকে বলতে পারেন বাহ আপনি তো তাহলে দারুন মজা করেছেন! এরপর আপনি আপনার নিজের কোন ভ্রমণের গল্প তার সাথে শেয়ার করতে পারেন। এভাবেই তার সাথে আন্তরিকতা আরো বেড়ে যাবে।

চোখ হাসি দেহভঙ্গি

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা কথা বলার মধ্যে অন্যান্য দিকে লক্ষ্য করে বা স্মার্টফোনের দিকে সময় কাটায়। বিষয়টা খুবই খারাপ। যখন আপনি কারো সাথে কথা বলবেন তখন অবশ্যই আপনার মনোযোগটা তার দিকে থাকতে হবে। দেহভঙ্গি অবশ্যই ঠিক রাখতে হবে এবং যার সাথে কথা বলছেন তার চোখে চোখ রেখে কথা বলার চেষ্টা করতে হবে।
কথা বলার সময় আপনার সাথে যে কথা বলবে তার চোখ হাসি এবং দেহভঙ্গি খেয়াল করার চেষ্টা করুন। এটাতে আপনি বুঝতে পারবেন যে, তিনি আপনার সঙ্গে কথা বলতে কতটুকু আগ্রহী বা ইচ্ছুক।

প্রশংসা করতে হবে

আমাদের কার না প্রশংসা শুনতে ভালো লাগে বলুন! আমরা কম বেশি সবাই প্রশংসা শুনতে ভালবাসি। যখন কেউ আমাদের প্রশংসা করে থাকে তখন তাদেরকে ভালো লাগে। আপনি যার সাথে কথা বলছেন তার সৌন্দর্য কিংবা রুচি সম্পর্কে কাজের প্রশংসা করুন। প্রশংসা বাক্য দিয়ে আলাপ শুরু করুন দেখবেন তিনি আপনার সাথে কথা বলতে আগ্রহ প্রকাশ করবে।

অপরকে জানুন এবং সম্মান করুন

অন্য কারোর ভালোলাগা বা খারাপ লাগাটা আপনাকে অবশ্যই বুঝতে শিখতে হবে। তার ভাবনাগুলোকে সম্মান করতে হবে। তার খারাপ লাগাগুলো বুঝতে হবে জানতে হবে। হুট করে তার সমালোচনা করতে বসবেন না। অবশ্যই কারোর ব্যক্তিগত কোনো বিষয়ে জড়িয়ে পড়বেন না। বিয়ে, সন্তান, চাকুরী ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন করবেন না কাউকে।
তার কোন বিষয় আপনার ভালো লাগলো না বা কোন মতের সাথে আপনার মতে মিল হলো না সেটা বিষয় না। কিন্তু সবসময় তার পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করবেন। বিপক্ষে কথা বললে সেটা শুনতে ভালো দেখাবে না। আবার কেউ যদি আপনার কোন কাজের ভুল ধরে তাহলে অবশ্যই আপনি শান্তভাবে সেটা গ্রহণ করার চেষ্টা করবেন। সবাই তো আর একরকম হয় না।
তাছাড়া সবার কাছে সবকিছু ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কারো সাথে তর্ক বা ঝগড়াতে যাবেন না। অবশ্যই সবাইকে সম্মান করার চেষ্টা করবেন।

সমতা এবং নীরবতা

কথা বলার সময় অবশ্যই একনাগারে কথা বলা যাবে না। কথা বলার মাঝে অপরকে বলতে সুযোগ দেওয়া দরকার। এমনকি অপরজন কি বলতে চাচ্ছে সেটা অবশ্যই আপনি বোঝার চেষ্টা করবেন। আবার কেউ কথা বলছে বলে যে আপনি একদম চুপ করে থাকবেন বিষয়টা তেমন নয়। কথা বলতে বলতে হঠাৎ চুপ হয়ে গেলে অন্যজন অনেক কিছু ভাবতে পারে।
এজন্য কেউ কথা বললে তার কথাগুলো মন দিয়ে শুনতে হবে এবং তার কথার সাথে সম্মতি জানাতে হবে। ওই বিষয়ে তিনি কি করতে চাচ্ছেন বা কি ভাবছেন সেটা নিয়ে আপনি জানতে চাইতে পারেন।

অবান্তর কথা কম বলার টোটকা-কথা কম বলার উপকারিতা

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা সব জায়গায় অবান্তর কথাবার্তা বলে থাকে। কিন্তু অবান্তর কথা কম বললে আপনি বেশ কিছু উপকারিতা পাবেন। সে উপকারিতা গুলো হলঃ

তারা বেশি প্রতিভাবান

যখন আপনি চুপ থেকে মানুষের কথাটি বুঝার চেষ্টা করেন তখন আপনার পাশে থাকা ব্যক্তিটি কথা বলার সুযোগ পাই। এতে আপনার সামনের ব্যক্তি অবশ্যই মনের মধ্যে ধারণা হবে যে আপনি একজন বুদ্ধিমান মানুষ। আপনি শোনেন বলে আপনার অপরজন মানুষটি বলতে ভালোবাসে। কারণ এই পৃথিবীতে ভালো শ্রোতার সংখ্যা আসলে খুবই কম।
সবাই বলতে চাই কিন্তু কেউ শুনতে চায় না। কিন্তু যখনই আপনি অবান্তর কম কথা বলে অন্য কোন মানুষের কথা ভালোভাবে মনোযোগ দিয়ে শুনবেন এবং গুরুত্ব দিবেন তখন অবশ্যই আপনি তার কাছে অনেক বেশি প্রতিভাবান বলে পরিচিত হবেন।

তারা খুবই বুদ্ধিমান

যারা একেবারে সম্পূর্ণ কথা ভালোভাবে বুঝে শুনে উত্তর দেই তারা সবসময় অনেক বেশি বুদ্ধিমান হয়ে থাকে। খুবই সংক্ষিপ্তভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বক্তৃতা দিয়ে আসতে পারে। আমাদের ভাবনাগুলো অনেকটা ঘনীভূত এসিডের মত। আর আমাদের কথা অনেকটা পানির মত। আপনি ঘনীভূত এসিডে যতটা পানি মেশাবেন সেটা তত বেশি পাতলা হয়ে যাবে।
কাজেই আপনি যত বেশি কথা বলবেন আপনার ভাবনা বোঝা অপর ব্যক্তির পক্ষে ততই কঠিন হয়ে যাবে। যদি আপনি আপনার মনের কথা কাউকে বোঝাতে চান তাহলে যত সম্ভব আপনি কম কথা বলবেন। কারণ যারা কম কথা বলে তাদের কথা সবাই বেশি শুনতে চায়।

তারা অনেক বন্ধুসুলভ

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা কম কথা বলা মানুষদের সাথে বন্ধুত্ব করতে চায় না। হয়তো ভাবে তারা অহংকারী। বা কম কথা বলা ব্যক্তি তার অনুভূতি বুঝবে কিনা! এসব নিয়ে তাদের মাথায় বিভিন্ন চিন্তা করতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো বেশি কথা বলা মানুষের চেয়ে কম কথা মানুষগুলো অনেক বেশি বন্ধুসুলভ এবং সহজলভ্য হয়ে থাকে।
কারণ যারা কম কথা বলে তারা কথা বুঝতে পারে এবং শুনতে জানে। তাদের যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই কথা বলে। কাজেই বেশি কথা বলে সে কাউকে বিরক্ত করে না বা কারো সময় নষ্ট করে না। এজন্য তারাই অনেক বেশি বন্ধু সুলভ হয়ে থাকে।

সফলতার হার বেশি

যারা কম কথা বলে থাকে তাদের সহ্য করার ক্ষমতা অনেক বেশি হয়ে থাকে। তারা কখনো অবান্তর কথা বলে সময় নষ্ট করেনা। এজন্য তাদের সময় সম্পর্কে অনেক ভালো ধারণা থাকে। তারা সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগাই। এরা কথা বলার চেয়ে কাজ করতে অনেক বেশি পছন্দ করে।
যতটা তারা অবান্তর কথা বেশি বলে সময় নষ্ট করবে, সেই সময়টুকুতে তারা অন্য কাজ করে ফেলবে। যার কারণে অবান্তর কথা কম বলা মানুষেরা সবসময় সফলতার দিকে থাকে বা তাদের সফলতার হার অনেক বেশি। এমনকি তারা কোন ধরনের ঝামেলাতে জড়ায় না।

বিশ্বাসযোগ্য হয়ে থাকে

কম কথা মানুষের না সবসময় বিশ্বাসযোগ্য হয়ে থাকে। এটা তাদের একটা বিশেষ গুণ। গোপন কথা ততক্ষণ পর্যন্ত গোপন থাকে যতক্ষণ সেটি আপনার মনের মধ্যে থাকে। যখনই এটি আপনি কাউকে বলে ফেলবেন তখন আর সেটি গোপন থাকে না। অন্য দিকে যারা বেশি কথা বলে কথা বলতে বলতে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের কথা অন্য মানুষকে বলে ফেলে।
তবে যারা কম কথা বলে তাদের কাছে গোপনীয়তা অনেক বেশি থাকে। তাদের মনে কি চলছে এটা সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা অনেক দুষ্কর একটি বিষয়। কারণ তারা কখনোই এমন কথা বলে না যাতে করে তাদের গোপনীয়তা নষ্ট হয়ে যায়।
এজন্য আপনি কম কথা বলা মানুষের কাছে যদি বিশ্বাস করে কোন কিছু বলে থাকেন তাহলে অবশ্যই সে ধৈর্য সহকারে আপনার কথা শুনবে এবং আপনাকে একটা সমাধান দিতে পারবে। এমনকি তার কথাও আপনার কাছে সব সময় গোপন থাকবে।

এরা কারো সাথে তর্কে জড়ায় না

অবান্তর কম কথা বলা মানুষেরা সব সময় নিজেদের আত্মসম্মান বাঁচিয়ে রাখে। আসলে মানুষেরা কখন তর্কে জড়ায় জানেন! যখন আমরা কোন কিছু না ভেবে পাগলের মত অন্য লোকের সাথে বিভিন্ন ধরনের আলাপ আলোচনা করে থাকি বা ভেবে চিন্তে কথা বলি না। ঠিক তখনই আমরা অন্য কারো সাথে তর্কে জড়িয়ে যায়।
কিন্তু যখন আমরা কোন ব্যক্তির সাথে অনেক বেশি ফ্রী হয়ে যাই বা কারোর সাথে আমার আমাদের ভালো সম্পর্ক হয়ে যায় তখন তার সাথে এমন আলাপ আলোচনা করে থাকে যে একসময় তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা কমে যায় বা আমাদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা কমে যায়। এটা কখনোই করা যাবে না।
 এ ক্ষেত্রে অবান্তর কম কথা বলা মানুষেরা সবসময় নিজেদের আত্মসম্মান সবার কাছ থেকে বাঁচিয়ে রাখে। যতই কারো সাথে সে ফ্রি হয়ে যাক না কেন সবার কাছে সে আত্ম সম্মানবোধ বজায় রাখে। এজন্য অবান্তর কম কথা বলা মানুষের সব সময় তর্কে জড়ায় না।

এরা একা থাকতে ভয় করে না

যারা অবান্তর কথা কম বলে তাদের মধ্যে সব সময় এক ধরনের ইতিবাচক প্রভাব থাকে। এরা মানুষের সাথে বেশি যোগাযোগ করে না কিংবা কারো সাথে অযথা সময় নষ্ট করে না। যার কারণে যেটুকু সময় থাকে বা যেটুকু সময় তারা পায় তারা সম্পূর্ণই নিজেদের কাজে সময় ব্যয় করে। এরা সবসময় একা থেকে নিজেদের একাকীত্ব নির্জনতাই রূপান্তর করে নেয়।
অর্থাৎ তারা একা থাকার কৌশলে এতটা বেশি দক্ষ হয়ে যায় যে আপনি তাদেরকে ১০০০ লোকের মধ্যে ছেড়ে দিল বা নির্জন কোন দিকে ছেড়ে দিল কোন ধরনের সমস্যাতে তাদের পড়তে হয় না। এজন্য কম কথা বলার লোকেরা কখনো একা থাকতে ভয় পায় না।

এরা সব সময় শান্তিপ্রিয় হয়

যারা কম কথা বলে তাদের শত্রু নেই বললেই চলে। তারা সবার সাথে বন্ধুসুলভ হয়ে থাকে। এই পৃথিবীতে তারা সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে যারা কম কথা বলেছে। যারা সব সময় বেশি কথা বলে তারা কখনোই শান্তিতে থাকতে পারে না এবং তাদের ক্ষতি হয় বেশি। কথা বলতে বলতে হঠাৎ করে মুখ থেকে কোন ভুল কথা বেরিয়ে আসে এতে করে আপনার শান্তি নষ্ট হয়ে যায়। যারা কম কথা বলে তারা সবসময় শান্তিপ্রিয় হয়ে থাকে এবং অন্যদেরও শান্তিতে রাখে।

অবান্তর কথা কম বলার টোটকা-হাদিসের বিভিন্ন ব্যাখ্যা

স্বল্পভাষিতা বা কম কথা বলা মানুষেরা মহৎ গুণাবলীর হয়ে থাকে। কোন কথা বলার অভ্যাস আমাদের বিপদ থেকে বাঁচাতে পারে। পাশাপাশি পরকালেও রয়েছে এর বিশেষ গুণ। দুনিয়া ও পরকালের বিভিন্ন কল্যাণের কথা চিন্তা করে ইসলামে কম কথা বলা মানুষদের উৎসাহিত করা হয়েছে। হাদিস শরীফে কম কথা বলার গুরুত্ব নেই বিভিন্ন বর্ণনা রয়েছে।
পাশাপাশি রয়েছে বেশি কথা বলার ক্ষতিকর দিকগুলোর বর্ণনা। সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত, হযরত মুহাম্মদ সাঃ এরশাদ করেন," যে নীরব থাকে সে মুক্তি পায়।" এ হাদিসের উদ্দেশ্যে কোন ব্যক্তি যখন মন্দ কিংবা অনর্থক কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখবে তখন সে ধ্বংসের হাত থেকে বেঁচে যাবে। বেঁচে যাবে জাহান্নামের আজাব থেকে।
এটাই আমাদের বাস্তবতা। যারা বেশি কথা বলে বা অবান্তর বিভিন্ন কথা বলে থাকে তারা বিভিন্ন অন্যায় অপরাধের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়তে পারে। অন্যদিকে যারা অবান্তর কথা বলে থাকে তারা বিভিন্ন গীবতের মধ্যেও জড়িয়ে পড়ে। গীবত এবং পরনিন্দা নিঃসন্দেহে নিকৃষ্টতম কাজ। এ কাজটি সামাজিক চরম নন্দিত এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে জঘন্য একটি কাজ।
কোরআনে কারীমে আল্লাহতালা এরশাদ করেন," তোমাদের কেউ যেন একে অন্যের গীবত না করে থাকে। কেননা গীবত করা নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সমান। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে?" তাই সব সময় অবান্তর কথা কম বলার চেষ্টা করতে হবে।
একবার এক সাহাবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূ্‌ল, আমাদের মধ্যে সবচেয়ে আশঙ্কা জনক বিষয়টি কোনটি?উত্তরে তিনি নিজের জিব্বাকে ধরে বললেন-এটা সবচেয়ে আশঙ্কা জনক। সাহাবী হযরত উকবা ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন।
তিনি উত্তরে বললেন, তুমি তোমার জিব্বাকে সবসময় সংযত রাখো। কেননা একমাত্র জিব্বায়ই হলো নিজেকে গীবত, পরনিন্দা, চুগলখুরি ইফতারের কোনা থেকে বেঁচে থাকার প্রধান হাতিয়ার। এছাড়াও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরেক হাদিসে এরশাদ করেন, যে ব্যাক্তি আল্লাহ এবং পরকালের উপর ঈমান আনে সে যেন উত্তম কথা বলে কিংবা চুপ থাকেন। অবান্তর কথা কম বলা বুদ্ধিমত্তা এবং জ্ঞানের পরিচয়।আল্লাহ তা'আলা যেন আমাদের সবাইকে অবান্তর কথা কম বলা থেকে বিরত থাকার তৌফিক দেন। আমিন।

পাঠকের শেষকথা

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম অবান্তর কথা কম বলার টোটকা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য। এছাড়াও আরো জানলাম কম কথা বলার উপকারিতা এবং ইসলামে কম কথা বলা নিয়ে কি বলেছে সে সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য।আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।

যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন।তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।আজকে এই পর্যন্তই।দেখা হবে পরের কোন পোস্টে।আজকের এই পোস্টে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।
এধরনের আরো আর্টিকেল পড়তে এবং বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে আমার ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url