ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করার নিয়ম-ফেসিয়াল ক্রিম
ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করার নিয়ম-ফেসিয়াল ক্রিম সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানতে চাই।আমরা সবসময়ই সকলেই চাই আমাদের ত্বক সুন্দর হোক। বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার আগে কিংবা কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে আমরা কম বেশি সকলেই মুখের যত্ন করে থাকি। সামনে পুজো আসছে এবং এই পুজোর উপলক্ষে সবাই চাই ঝকঝকে ত্বক। সেই সঙ্গে অনেকেই পার্লারে গিয়ে বসে থাকেন। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় পার্লারে যাওয়ার পরে ফেসিয়াল করলে কিছুক্ষণ পর বা কয়েকঘন্টা পর থেকে মুখে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।আবার যাদের সেনসিটিভ স্কিন তাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যেতে পারে। এজন্য আপনি ঘরে বসে সহজ কিছু উপাদান দিয়ে আপনার গোল্ড ফেসিয়াল করতে পারবেন। সুপ্রিয় পাঠক আজকে আমার আর্টিকেলের বিষয় ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য নিয়ে।
ভূমিকা
ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করার নিয়ম-ফেসিয়াল ক্রিম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আমার আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। গোল্ড ফেসিয়াল আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এটি যখন আমরা পার্লারে গিয়ে করব তখন সেটা আমাদের জন্য অনেক ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা চাইলেই এটি ঘরে বসে খুব সহজেই করতে পারি কয়েকটি উপকরণ দিয়ে। প্রিয় পাঠক চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করার নিয়ম সম্পর্কে।
ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করার নিয়ম
ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করতে সর্বপ্রথম আপনাকে এক চামচ নারকেল তেল, সাথে এক চামচ টক দই ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এর মধ্যে আপনি চাইলে হাফ চামচ চালের গুড়া মিশিয়ে নিলে এক ধরনের ক্লিনজার এবং স্ক্রাবার তৈরি হয়ে যাবে। এই স্ক্রাবার আমাদের ত্বকের জন্য খুব উপকারী। প্রথমে আপনার মুখ ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দিয়ে দুই নিন।
এরপর এটা ভালোভাবে মুখের চারপাশে যত দাগ আছে বা পুরো মুখ এবং গলা লাগিয়ে নিন। কয়েক মিনিট রেখে দিয়ে ভালোভাবে স্ক্রাব করে ঠান্ডা পানি দিয়ে আবার মুখ ধুয়ে ফেলুন। অবশ্যই মুখ ধোয়ার পরে মশ্চারাইজার লাগাবেন। মুখ ধুলেই আপনি দেখতে পাবেন আপনার ত্বক কতটা গ্লো দিচ্ছে। এরপরে তৈরি করতে হবে আপনাকে একটি গোল্ড ফেসপ্যাক।
এটা তৈরি করতে আপনাকে প্রথমে একটি ফেয়ারনেস ক্রিম অথবা রেগুলার ব্যবহারের লোশন এক চামচ নিয়ে তার মধ্যে একটু হলুদ মিশিয়ে নিতে হবে। এর ভেতর এক চামচ টক দই মিশাতে ভুলবেন না এবং সাথে সাথে নিয়ে নিবেন কয়েক ফোটা গ্লিসারিন। মুখের চামড়া টাইট রাখতে এই গোল্ড ফেসপ্যাক খুবই উপকারী। এই ক্রিম তৈরি হয়ে গেলে ভালোভাবে মুখে এবং গলায় পাশাপাশি আপনি ঘাড়েও লাগিয়ে রাখতে পারেন।
এভাবে 10 থেকে 15 মিনিট এই গোল্ড ফেসপ্যাক মুখে রেখে দেবেন। ভেজা তোয়ালে দিয়ে অবশ্যই এই ফেসপ্যাক মুছে ফেলতে হবে। এই গোল্ড ফেস প্যাক রাতের বেলা করলে বেশি উপকার পাবেন। এমন কি সকালে উঠলে দেখতে পাবেন আপনার ত্বক কতটা গ্লো দিচ্ছে। তবে মনে রাখবেন আমাদের ত্বকের যে কোন ফেসিয়াল রাতের বেলা করাই ভালো।
এই ফেসিয়াল করার পরে অবশ্যই মুখ শুকনো করে একটি নাইট ক্রিম ব্যবহার করবেন। এই ফেসিয়ালটি মাসে একবার ব্যবহার করুন। খুব প্রয়োজন হলে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন। ছেলেরাও এই ফেসিয়াল করতে পারেন। মুখ থেকে যাবতীয় দাঁত উঠে যাবে এটা ব্যবহার করার ফলে।
ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল
ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করার অনেক রকম নিয়ম রয়েছে। পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করার একটি পদ্ধতি। এখন আমরা জানবো ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করার আরো একটি পদ্ধতি সম্পরকে।
প্রথমে মুখ পরিষ্কার করতে হবে
ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করার নিয়ম হচ্ছে সর্বপ্রথম আপনাকে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। মুখ পরিষ্কার করে নেওয়ার জন্য আপনি অল্প পরিমাণে কাঁচা দুধ নিয়ে এর মধ্যে তুলো ভিজিয়ে ভালোভাবে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে পারেন। এভাবে ত্বক পরিষ্কার করলে ত্বকের মধ্যে জমে থাকা ময়লা দূর হয়ে যাবে এবং মুখ হয়ে যাবে নিখুত এবং পরিষ্কার। মুখ পরিষ্কার হয়ে গেলে অবশ্যই টিস্যু দিয়ে ভালোভাবে মুছে নিতে হবে।
এরপর ফেস স্ক্রাব করুন
মুখ পরিষ্কার করে নেওয়া হয়ে গেলে সর্বপ্রথম দরকার হলো স্ক্রাব করা। স্ক্রাব করতে আপনি ঘরোয়া কিছু উপকরণ ব্যবহার করতে পারেন। প্রাকৃতিকভাবে ফেস স্ক্রাব করতে চাইলে আপনি চিনি, কয়েক ফোঁটা মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে একটি ভালো স্ক্রাব বানিয়ে নিন। ভালো করে মিশিয়ে স্ক্রাবটি তৈরি করুন। এবার স্ক্রাব হালকা ভাবে মুখে ঘসে নিন। স্ক্রাব করার ফলে মুখের ভেতরের ময়লা বের হয়ে আসবে এবং মুখে জমে থাকা তেল বেরিয়ে আসবে। ৫ মিনিট বা ১০ মিনিট স্ক্রাব করার পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিন।
ম্যাসাজ করুন
স্ক্রাব করার পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভালোভাবে মাসাজ করা। কারণ মুখ পরিষ্কার করলেই শুধু হবে না মুখ মাসাজ করতে হবে। আর ম্যাসাজ করতে হলে দরকার হচ্ছে ক্রিম। এই ক্রিম তৈরি করতে আপনি ঘরোয়া কয়েকটি উপাদান ব্যবহার করতে পারেন। ক্রিম তৈরি করতে লাগবে অ্যালোভেরা জেল, লেবুর রস এবং অলিভ অয়েল।
এগুলোকে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি ক্রিম তৈরি করে নিন। এরপর এটা মুখে লাগিয়ে 10 মিনিট হালকা হাতে মাসাজ করুন। ম্যাসাজ করা হয়ে গেলে টিস্যু দিয়ে হালকা হাতে মুখ মুছে নিন। তারপর দেখতে পাবেন আপনার ত্বক কতটা গ্লো দিচ্ছে।
সবার শেষে লাগান ফেসপ্যাক
ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করার নিয়মের মধ্যে সর্বশেষ হল ফেসিয়াল ফেসপ্যাক। গোল্ড ফেসিয়ালের ফেসপ্যাক লাগানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ফেসপ্যাক ব্যবহার করার জন্য আপনি ঘরে বসে হাতের কাছে থাকা কয়েকটি উপকরণ দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করতে পারেন। ফেসপ্যাক তৈরি করার জন্য সর্বপ্রথম আপনার লাগবে বেসন, দুধ, হলুদের গুড়া এবং কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল।
এবার সবগুলোকে মিশিয়ে ভালোভাবে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করে নিন। সেটা সুন্দরভাবে আপনার ফেসে লাগিয়ে রাখুন অন্তত 20 মিনিট। 20 মিনিটের মধ্যে শুকিয়ে আসলে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। ভালো ফলাফল পেতে চাইলে এটি মাসে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন।
গোল্ড ফেসিয়াল করার ক্রিমের নাম
গোল্ড ফেসিয়াল করার ক্রিমের নাম অনেকেই না জানার কারণে ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করতে পারে না। দিয়ে পাঠক আজকের আর্টিকেলে আপনাদের জানতে পারবেন গোল্ড ফেসিয়াল করার কয়েকটি ক্রিমের নাম।Envie গোল্ড ফেসিয়াল যা আমাদের ত্বক উজ্জ্বল করে।মোম,অশ্বগন্ধা, যষ্টিমধু, আঙ্গুর এবং অ্যালোভেরা নির্দেশের একটি উদ্ভাবনী সংমিশ্রণে এই গোল্ড ফেসিয়াল তৈরি।
যা আমাদের ত্বকের ভিতর থেকে কমল এবং উজ্জ্বল দেখায়। মুখে ব্রণের সমস্যা থাকলে এই ফেসিয়াল ক্রিম আমাদের মুখে ব্রণ দূর করতে পারবে। এরপর রয়েছে অ্যারোমা ম্যাজিক গোল্ড ফেসিয়াল কিট। এ ফেসিয়াল কিট এর মধ্যে রয়েছে মোট সাতটি কম্ব। এটি ব্যবহারের ফলে আমাদের ত্বক টানটান হয় এবং ত্বকের দৃঢ়তা বজায় থাকে।
এটিকে অনেকে উজ্জ্বল ত্বকের জন্য সেরা ফেসিয়াল কিট হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। হিমালয় পিয়োর স্কিন ফেসিয়াল কিট আমাদের ত্বকের সুস্বাস্থ্য এবং পরিচর্যার ক্ষেত্রে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এই ফেসিয়াল এর মধ্যে রয়েছে নিম, মুলতানি মাটি এবং হলুদ। এই উপাদান গুলো আমাদের ত্বকের ক্ষেত্র বন্ধ করতে সাহায্য করে এবং ব্রণ ও ফুসকুড়ি থেকে রক্ষা করে।
এছাড়াও রয়েছে অ্যারোমা ম্যাজিক বাম্বু ফেসিয়াল। ম্যাজিকের মত এই ফেসিয়ালটি আপনার মুখমন্ডলকে একটি সুন্দর কমনীয়তা এবং ডিটক্স করতে পারে। এটিতে থাকা বিভিন্ন উপাদান আমাদের ত্বকের চিত্রগুলোকে দৃঢ় করে এবং এর মধ্যে থাকা ময়লা তেল গুলোকে বের করে নিয়ে আসে।
গোল্ড ফেসিয়াল কতদিন পর পর করতে হয়
গোল্ড ফেসিয়াল কতদিন পর পর করতে হয় এটা আমাদের অনেকের অজানা থাকার কারণে আমরা বিভিন্ন ভুল করে থাকি। যার কারণে আমাদের স্কিনের বিভিন্ন ক্ষতি হয়। প্রিয় পাঠক গোল্ড ফেসিয়াল কতদিন পরপর করতে হয় সেটা জানতে হলে আমার আর্টিকেলে শেষ পর্যন্ত আপনাকে পড়তে হবে। ফেসিয়াল হল এক ধরনের স্কিন কেয়ার ট্রিটমেন্ট।
এটা আমাদের ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী। । ফেসিয়াল সম্পন্ন করতে সাধারণত আদা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টার মত সময় লাগে। এ ফেসিয়াল করার মাধ্যমে আমাদের ত্বকে মৃত কোষ দূর হয় এবং আমাদের ত্বক টান টান রাখতে সাহায্য করে। আপনি যদি মাসে দুইবার অর্থাৎ ১৫ দিন পর পর গোল্ড ফেসিয়াল করে থাকেন তাহলে আপনার ত্বক পরিষ্কার থাকবে।
সেই সঙ্গে আমাদের ত্বকের ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস দূর হবে। এমনকি আপনার ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়ে আদ্রতা বজায় থাকবে। এছাড়াও আপনার ত্বক ভালো রাখার জন্য আপনাকে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। রঙিন শাকসবজি এবং টাটকা ফলমূল খেতে হবে নিয়মিত।
হোয়াইটেনিং ফেসিয়াল করুন ঘরে বসে
বাইরে অনেক ঘুরাঘুরি এবং বিভিন্ন কাজ করার ফলে আমাদের বেশিরভাগ সবার ত্বক মলিন হতে থাকে। এর উপর পড়ে যায় বিভিন্ন দাগ ছোপ। এসব দূর করতে প্রয়োজন আমাদের ত্বকের যত্নের। এছাড়াও বিভিন্ন ছোটখাটো সমস্যা আসে আমাদের মেকআপ থেকে। সব সমস্যার সমাধান একসাথে করা সম্ভব হয় না। তখন আমরা চলে যাই পার্লারে।
পার্লার গুলোতে হোয়াইটেনিং ফেসিয়াল করাতে প্রায় ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকা নিয়ে থাকে যা আমাদের অনেকের কাছে ব্যয়বহুল হতে পারে। প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব জাফরানের সাহায্যে হোয়াইটেনিং ফেসিয়াল করার নিয়ম সম্পর্কে। জানতে হলে আমার আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত সাথেই থাকুন।
ক্লিনজিং
শুরুতে আপনার মুখমন্ডল ভালো ব্র্যান্ডের একটি ক্লিনজিং দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এটাতে বাজারের পন্য ব্যবহার করতে না চাইলে আপনি ঘরে থাকা উপকরণ ব্যবহার করতে পারেন। আপনি তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারী হয়ে থাকলে শসা এবং শুষ্ক ত্বকের অধিকারী হয়ে থাকলে কাঁচা দুধ ব্যবহার করতে পারেন। এটাতে আপনার মুখ ভালোভাবে ক্লিন হবে।
এক্সফোলিয়েসন
ছোট ছোট দানা যুক্ত ফেসওয়াশ কিংবা স্ক্রাবার দিয়ে সমস্ত ভালোভাবে স্ক্রাব করে নিন। এতে আপনি প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করতে চাইলে আতপ চালের গুড়ো ব্যবহার করতে পারেন। আটক চালের গুড়ো, দুই টেবিল চামচ মধু এবং লেবুর রস ও কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল। এভাবে আপনার মুখ ভালোভাবে স্ক্রাব করে নিন। অবশ্যই হালকা হাতে স্ক্রাব করতে হবে।
স্টিম
হোয়াইটেনিং ফেসিয়াল করার ক্ষেত্রে স্টিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের মুখের লোমকূপ খুলতে সাহায্য করে। যার কারণে আমাদের ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার হয়। প্রথমে খুব অল্প পরিমাণ বাদাম তেল ছাড়া মুখে মালিশ করে নিন।এরপর বাজারে বিভিন্ন ধরনের স্টিমার পাওয়া যায়।এর মাধ্যমে কিংবা গরম পানির মধ্যে পাতলা কাপড় দিয়ে ভাপ নিতে পারেন।
ব্ল্যাকহেড পরিষ্কার
গরম পানির স্টিম নেওয়ার ফলে আমাদের ত্বকের লোমকূপের গোড়া থেকে সকল ময়লা জেগে যাবে এবং তখন ব্ল্যাকহেড এবং হোয়াইট হেড পরিষ্কার করতে হবে। এটা পরিষ্কার করার জন্য এক ধরনের যন্ত্র পাওয়া যায়। সেটার মাধ্যমে হালকা চাপ দিলেই সব উঠে আসে।
টোনিং
অনেকেই ভাবে টোনিং এর হয়তো প্রয়োজন নেই। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। যেহেতু স্টিম করার ফলে আমাদের লোমকূপ সব খুলে যায় এজন্য টোনিং এর মাধ্যমে সব বন্ধ করা জরুরী। না হলে ময়লা ঢুকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ব্রণ হতে পারে। বাজারের টোনার ব্যবহার করতে না চাইলে গোলাপ জল ব্যবহার করতে পারেন।
মাস্ক
এবার আসল কাজ হচ্ছে হোয়াইটেনিং মাস্ক এর। আপনারা হয়তো জাফরানের উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই অবগত। জাফরানের মধ্যে যে হোয়াইটনিং প্রপারটি রয়েছে সেটা আমাদের ত্বক অনেক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। মাস্ক তৈরি করতে জাফরানের আঁশ লাগবে পাঁচ থেকে ছয়টা। টক দই কিংবা দুধের সর লাগবে ১/২ দুই কাপ।
গোলাপের পাপড়ি দুই থেকে তিনটা, চন্দন অথবা মুলতানি মাটি এক টেবিল চামচ, কাঠ বাদামের গুঁড়ো দুই থেকে তিনটা এবং গোলাপজল এক টেবিল চামচ। জাফরান তরল দুধে দুই থেকে তিন ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে যতক্ষণ না এর রং হলুদ হচ্ছে। এরপর গোলাপের পাপড়ি ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। ধুয়ে নেওয়ার পরে এগুলো সুন্দরভাবে পেস্ট করে নিতে হবে।
এবার একে একে দুধ জাফরান, গোলাপ পেস্ট, মুলতানি মাটি এবং বাদামের গুড়া গুলিয়ে রেখে দিতে হবে। সুন্দরভাবে একটি পেস্ট তৈরি হয়ে আসলে এটা আমাদের মুখের ত্বকে লাগিয়ে রাখতে হবে কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ মিনিট। এরপর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
ময়েশ্চারাইজিং
সবচেয়ে সে ভালোভাবে মশ্চারাইজার মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে। এরপর আয়নায় আপনার নিজের চেহারা দেখব এবং নিজে অবাক হয়ে যাবেন। হোয়াইটেনিং ফেসিয়াল করার ফলে আপনার ত্বকে অদ্ভুত একটা সুন্দর আভা আসবে।
আরও পড়ুনঃঘাড়ের কালো দাগ দূর করার উপায়
হাইড্রা ফেসিয়াল নাকি বায়ো হাইড্রা ফেসিয়াল করবেন
হাইড্রা ফেসিয়াল নাকি বায়ো হাইড্রা ফেসিয়াল করবেন এটা আপনার সিদ্ধান্ত নিতে হবে ত্বক অনুযায়ী। আপনার ত্বক কি রকম সেটার উপর নির্ভর করে আপনার ফেসিয়াল নিতে হবে। যুগে যুগে নারীরা বিভিন্ন সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য তাদের ত্বকের বিভিন্ন যত্ন করে আসছে। কখনো প্রাকৃতিক উপাদান আবার কখনো পাল্লারে গিয়ে ফেসিয়াল।
কখনো ঘৃতকুমারী পুদিনা পাতা কাঁচা হলুদ ইত্যাদি সৌন্দর্য চর্চায় ব্যবহার করে আসছে অনেকে। তবে যোগের সাথে তাল মিলিয়ে আজকাল হারবাল ফেসিয়াল এর পরিবর্তন বেছে নিচ্ছে প্রযুক্তি নির্ভর বিভিন্ন ফেসিয়াল। সাধারণত বয়সের তুলনায়ক অনেক পরিপক্ক হয়ে গেলে এবং ত্বকের মধ্যে বিভিন্ন দাগ স্পট ব্রণ ও ব্রণের গর্ত দেখা দিলে স্কিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সাধারণত এই ফেসিয়াল করার পরামর্শ দিয়ে থাকে।
মেশিনের সাহায্যে ত্বকের গভীর স্তরে সিরাম পৌঁছে দেওয়া হয় যার কারণে আমাদের ত্বকের কিছুগুলো হাইড্রেট হতে থাকে। হাইডার ফেসিয়াল এর মাধ্যমে কিছু জেল আমাদের ত্বকের গভীরে পৌঁছে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য যে হাইডা ফেসিয়াল করতে কোন রকম ব্যথা নেই। সাধারণত ৫ টি ট্রিটমেন্ট এর মাধ্যমে এই ফেসিয়াল করা হয়।
শেষের ধাপে লাইট থেরাপি দেওয়া হয় যা আমাদের ত্বকের তেল দূর করতে সাহায্য করে এবং রিংকেল দূর করতে সাহায্য করে। হাইট্রা ফেসিয়াল এবং বায়োহাইডার ফেসিয়াল দুটোটি প্রধান উপকরণ হচ্ছে মাইক্রোডার্মা ভিশন। বায়োহাইডরাতে মাইক্রোডার্মা ভেশনের সঙ্গে ওয়াটার প্যাক দেওয়া হয়। যখন স্কিন পরিষ্কার হবে তার সঙ্গে সঙ্গে স্কিনে পানির প্রবাহ যাবে।
পানির সঙ্গে দেওয়া হয় ভিটামিন এবং বিভিন্ন এসিড যা থাকে আমাদের ত্বকের ধরন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী। তবে হাইরা ফেসিয়াল করার আগে ত্বক পরীক্ষা করে নিতে হবে। অতিরিক্ত সেনসিটিভ ত্বকে এই ফেসিয়াল করা সম্ভব নয়। হাইড্রা ফেসিয়াল করার পর বেশ কিছুর সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে যেমন দুই থেকে তিন দিন ত্বকের রোদ লাগানো যাবে না।
কিংবা চুলার তাপে যাওয়া যাবেনা এমনকি ত্বকে ধুলাবালি পড়তে দেওয়া যাবে না।এই ফেসিয়াল অন্যান্য ফেসিয়ালের তুলনায় অনেক ব্যয়বহুল। তবে আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী বেছে নিয়ে আপনাকে এই ফেসিয়ালটি করতে হবে।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ঘরোয়া ফেসিয়াল
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ঘরোয়া কিছু ফেসিয়াল রয়েছে যেগুলো করার মাধ্যমে আমাদের মুখের তেল তেল ভাব দূর হয়ে যাবে। আমাদের মধ্যে যাদের তৈলাক্ত ত্বক তাদের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার লেগেই থাকে। এই তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের সমস্যা সবচেয়ে বেশি হয়। এই ত্বকের জন্য আমাদের বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
শুধু হল যত্ন নিলেই হবে না জানতে হবে সঠিক যত্ন নেওয়ার ধরন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য আপনি বেসন এবং হলুদ সাথে টক দই নিয়ে সুন্দর একটি পেস্ট বানিয়ে আপনার মুখে লাগাতে পারেন। এতে করে আপনার তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা সমাধান হবে। এছাড়াও মুলতানি মাটি মাখলেও কাজ হবে।
দুই চামচ মুলতানি মাটি নিয়ে এর মধ্যে গোলাপজল দিয়ে ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে ফেলুন। কয়েক মিনিট পরে ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দিয়ে ফেলুন। এছাড়াও আপনি ব্যবহার করতে পারেন শসা, অ্যালোভেরা জেল, টমেটো, টমেটো, মধু এবং পেঁপের ফেসপ্যাক।
পাঠকের শেষকথা-ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করার নিয়ম
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন।তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।আজকে এই পর্যন্তই।
দেখা হবে পরের কোন পোস্টে।আজকের এই পোস্টে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।এধরনের আরো আর্টিকেল পড়তে এবং বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে আমার ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।
FAQ:ঘরে বসে গোল্ড ফেসিয়াল করার নিয়ম-ফেসিয়াল ক্রিম নিয়ে পাঠকদের কিছু প্রশ্ন।
১.তৈলাক্ত ত্বকের জন্য সবচেয়ে ভালো ফেসওয়াশ কোনটি?
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বাজারে অনেক অয়েল ফি ফেসওয়াশ পাওয়া যায়। যেমন পন্ডস,গানিয়ার, ক্লিন এন্ড ক্লিয়ার ইত্যাদি।
২.তৈলাক্ত মুখ পরিষ্কার করার উপায় কি?
তৈলাক্ত মুখ পরিষ্কার করার একমাত্র উপায় হচ্ছে ক্লিনাজার ব্যবহার করা। ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা নষ্ট না করে অতিরিক্ত তেল পরিষ্কার করতে আপনি ক্লিনজার বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
৩.ফর্সা হওয়ার নাইট ক্রিমের নাম কি?
ফর্সা হওয়ার বিভিন্ন নাইট ক্রিম রয়েছে বাজারে। তবে অবশ্যই আপনার ত্বক ভিত্তিতে আপনার নাইট ক্রিম বাছাই করে নিতে হবে। তবে কিছু নাইট ক্রিম রয়েছে যেগুলো আপনার ত্বক ফর্সা করতে পারে। এরমধ্যে রয়েছে ল্যাকমি হোয়াইটনিং নাইট ক্রিম, পন্ডস গোল্ড রেডিয়েন্ট নাইট ক্রিম, লেকমি ইউথ ইনফিনিটি স্কিন নাইট ক্রিম ইত্যাদি।
৪.কি সাবান ব্যবহার করলে ত্বক ফর্সা হয়?
জাফরান সাবান ব্যবহার করলে আমাদের ত্বক ফর্সা হয়। এই সাবান ব্যবহার করার ফলে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর হয়ে যায় পাশাপাশি মেস্তাএবং সানবার্ন দূর হয়ে যায়।
৫.প্রতি রাতে নাইট ক্রিম ব্যবহার করা কি ভালো?
যদি আপনার ত্বক শুষ্ক হয়ে থাকে তাহলে আপনি প্রতিদিন নাইট ক্রিম ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের উপকারিতা দেখতে পাবেন এবং আপনার ত্বক হাইড্রেট থাকবে। অন্যদিকে যদি আপনার ত্বক অনেক বেশি তৈরি তৈলাক্ত হয় তাহলে প্রতিদিন নাইট ক্রিম ব্যবহার করার দরকার নেই এতে করে আপনার মুখে ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৬.ফর্সা হওয়ার জন্য কি ধরনের খাবার খেতে হবে?
ফর্সা হওয়ার জন্য সাধারণত ফলমূল এবং শাকসবজি জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। এছাড়াও খেতে হবে গ্রিন টি, টমেটো, গাজর, বাদাম, কলা, ফ্যাটি এসিড জাতীয় খাবার।
৭.কোন ফল খেলে ত্বক ফর্সা হয়?
ত্বক ফর্সা হওয়ার জন্য আপনি পেঁপে, পেয়ারা, কলা, নারিকেল, ডালিম এই ফলগুলো খেতে পারেন।
৮.কিসমিস খেলে কি ফর্সা হওয়া যায়?
কিসমিস নিয়মিত পানির মধ্যে ভিজিয়ে পানি পান করলে ত্বকের রঙ আরো উজ্জ্বল হয়। কেননা এর মধ্যে থাকা ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের গঠন মসৃণ করতে এবং কালো দাগ হালকা করতে সাহায্য করে।
৯.কাঁচা হলুদ খেলে কি ফর্সা হওয়া যায়?
হলুদ আমাদের গায়ের রং ফর্সা এবং লাবণ্যময় করে তুলতে সাহায্য করে। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে দুধের সাথে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে খেলে আমাদের ত্বকের রং ধীরে ধীরে উজ্জ্বল হতে থাকে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url