স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ইসলামিক সেরা ১০ টি উপায় এবং ব্যায়াম ও খাবার সম্পর্কে জানুন
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ইসলামিক সেরা ১০ টি উপায় এবং ব্যায়াম ও খাবার সম্পর্কে জানতে হলে আপনি সঠিক জায়গাই এসেছেন প্রিয় পাঠক।আমাদের মধ্যে অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় বয়স বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে নীতি শক্তি দুর্বল হতে থাকে বা কমে যায়।সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাও কমে যেতে দেখা যায়।সেজন্য আপনার সুবিধার্থে আজকে আমার আর্টিকেলের বিষয় নির্ধারণ করেছি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ইসলামিক সেরা ১০ টি উপায় এবং ব্যায়াম ও খাবার সম্পর্কে। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি ইসলামিক সেরা ১০ টি উপায় সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই আমার আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত সাথেই থাকুন।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ইসলামিক সেরা ১০ টি উপায় এবং ব্যায়াম ও খাবার সম্পর্কে জানুন
বয়স বৃদ্ধি হওয়ার সাথে সাথে যাদের স্মৃতিশক্তি কমে যায় তাদের জন্য ইসলামিক কিছু আমল রয়েছে যেগুলো করার মাধ্যমে খুব সহজেই আমরা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে পারি এবং কিছু ব্যায়াম এবং সঠিক পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আমরা স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার সমস্যা কে আটকাতে পারি।
হালে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি গবেষকদের মাধ্যমে জানা গেছে, পৃথিবীতে এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো আমাদের স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া এবং মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগ থেকে রুখে দাঁড়াতে সাহায্য করে। আপনারা জানতে পারবেন স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার ইসলামিক কিছু আমল এবং নির্দিষ্ট কিছু খাবার ও ব্যায়াম সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাকঃ
স্মৃতি বলতে মূলত তথ্য ধারণ করে পুনরায় তা ফিরে পাওয়ার প্রক্রিয়াকে বুঝানো হয়ে থাকে। বিজ্ঞানীরা আমাদের স্মৃতিশক্তিকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করে থাকেন। যেমনঃ১ স্বল্প মেয়াদী স্মৃতি,২ দীর্ঘস্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি।আমাদের মস্তিষ্ক যে সব স্মৃতি অনেক দিন ধরে ধারণ করে রাখতে পারে সেগুলো মূলত দীর্ঘস্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি। আর যেগুলো আমরা মূলত স্বল্প সময় মনে রাখতে পারি সেগুলো হল স্বল্পমেয়াদি স্মৃতি।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ইসলামিক সেরা ১০ টি উপায়ঃ
১.সূরা ইখলাস বা আন্তরিকতা
সাধারণত আমরা যারা মুসলমান তারা ইসলামের কিছু কিছু বেসিক ধারণা সবার রয়েছে। যে কোনো কাজে আমরা যদি সফলতা অর্জন করতে চাই বা ভালো কিছু করতে চাই তাহলে তার মন চাবিকাঠি হচ্ছে সূরা ইখলাস বা আন্তরিকতা।এই সূরার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশুদ্ধ নিয়ত। এ প্রসঙ্গে ওস্তাদ খুররাম মুরাদ বলেন,” উদ্দেশ্য কিংবা নিয়ত হল আমাদের আত্মার মত অথবা বীজের ভেতরে থাকা একটি জীবন্ত প্রাণ শক্তির মত।
বেশিরভাগ বীজ দেখতে মোটামুটি একই রকম হয়ে থাকলেও লাগানোর পর যখন গাছটি বেড়ে ওঠে তখন আসল পার্থক্য বোঝা যায়। তখন বিষয়টি আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়। ঠিক একইভাবে আমাদের নিয়ত যত বিশুদ্ধ হবে তেমনি আমাদের কাজের ফলাফল তত ভালো হবে।” এজন্য সব সময় আমাদের নিয়ত এমন হতে হবে যাতে আল্লাহ তা'আলা আমাদের স্মৃতিশক্তি ইসলামের কল্যাণের জন্য বাড়িয়ে দেই।
২.দুয়া এবং জিকির করা
আমরা সকলেই জানি আল্লাহ ছাড়া আমাদের কোন উপাস্য নেই। যে কোন কাজে আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কখনোই আমরা সাফল্য অর্জন করতে পারব না। এজন্য আমাদের সর্বদা আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া এবং জিকির করা উচিত যাতে আল্লাহ তা'আলা আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেন এবং আমরা কল্যাণময় জ্ঞান অর্জন করতে পারি।এছাড়াও জিকির এবং দোয়া বেশি বেশি আমল করলে আল্লাহ তায়ালা আমাদের স্মৃতিশক্তিকে বাড়িয়ে দেয়। এজন্য সব সময় আমরা সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার এই ধরনের জিকির করতে থাকবো।
৩.পাপ কাজ থেকে দূরে থাকা
আজকাল স্মার্ট যুগে এসে প্রতিনিয়ত আমরা পাপ করে যাচ্ছি এবং সেটা যেন আমাদের কাছে খুবই সাধারণ একটি বিষয় হয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত পাপ করে যাওয়ার আরো একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া। পাপের অন্ধকার কখনোই আমাদের স্মৃতিশক্তি এবং জ্ঞানের আলো বাড়াতে পারে না। ইমাম আশ সাফি রাদিআল্লাহু তা'আলাআনহু বলেন,” আমি আমার ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলাম আমার শায়েখ এর কাছে, এবং তিনি আমাকে শিখিয়েছিলেন আমি যেন পাক কর্ম থেকে বিরত থাকে এবং আল্লাহ তায়ালার দেওয়া জ্ঞান অর্জন করি।”
অন্যদিকে আল খাতিব আল-জামি গ্রন্থে বর্ণনা করা হয়েছে যে, এক ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করেছিলেন, আমার স্মৃতিশক্তিকে শক্তিশালী করে দিতে পারে এমন কোন কিছু কি আছে? এবং তিনি উত্তরে বলেন তুমি তোমার জীবনে করা সকল পাপকর্ম ছেড়ে দাও। সে থেকে আমরা বুঝতে পারি যে যখন মানুষ কোন পাপ করে তখন সে দুঃখের দিকে ধাবিত হয় এবং তার স্মৃতিশক্তি ও লোপ পেতে থাকে। এজন্য আমাদের সবসময় ইসলামের জ্ঞান চর্চা করতে হবে তাহলে আমরা এর মাধ্যমে কল্যাণ অর্জন করতে পারব।
৪.বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা করা
আমরা একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে বা ভেবে দেখলে লক্ষ্য করব একটি বিষয় যে আমাদের সকলের মুখস্ত করার পদ্ধতি বা মনে রাখার পদ্ধতি কিন্তু একরকম নয়। একবার দেখলেই মুখস্ত হয়ে যায় আবার কারো কারো ক্ষেত্রে হাজার বার পড়ার পরেও অনুভূত হতে চায় না। আবার কারো ক্ষেত্রে শুয়ে শুয়ে পড়লে মুখস্ত হয়ে যায় আবার অনেকের দাঁড়িয়ে হাঁটতে হাঁটতে মুখস্ত করে।
আবার অন্যদিকে কারোর এমন অভ্যাস আছে যে তার নীরব জায়গার না হলে মুখস্ত হয় না। এজন্য কেউ কেউ ভোরে উঠে পড়তে পছন্দ করে। আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার জন্য আমরা প্রতিদিন সকালে ফজর নামাজের পর পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ঠিকঠাক করে আমাদের জ্ঞান চর্চা করতে পারি।
৫.মুখস্তকৃত বিষয়ের উপর আমল করা
কমবেশি আমরা সকলেই এ ব্যাপারে একমত যে কোন একটি বিষয় যদি আমরা বারবার বলি বা চর্চা করি তাহলে সেই জিনিস আমাদের মস্তিষ্কে খুব দৃঢ়ভাবে গেঁথে যায়। কিন্তু আমাদের এই ব্যস্ত জীবনে অনেকের হয়তো এই সময় সুযোগটুকু হয়ে ওঠে না।এজন্য আমরা কাজে কর্মে সব সময় কোন জিনিস মুখস্ত করলে সেটা বারবার আমল করার চেষ্টা করব কিংবা সেটা যদি হয় বাংলা কোন পড়াশোনা তাহলে সেটাও বারবার আমরা চর্চা করার চেষ্টা করব। এতে করে আমাদের পড়াশোনার ঝালাই হবে ভালো মতো।
৬.অন্যকে শেখানো
কোন কিছু নিজে ভালোভাবে শেখার একটি উত্তম উপায় হচ্ছে অন্যকে শেখানো। এজন্য আমরা একই বিষয় বারবার ভালোভাবে পড়বো এবং অন্যকে শেখানোর চেষ্টা করব। এতে করে ওই জিনিসটা আমাদের ভালোভাবে চর্চা হবে এবং অন্যরাও উপকৃত হবে।এবং পরবর্তীতে এটি আমাদের মস্তিষ্কে ভালোভাবে গেঁথে যাবে। এজন্য আমরা কোন কিছু নিজেই শিখবো এবং অন্যকে শেখানোর চেষ্টা করব।
৭.মস্তিষ্কের জন্য উপকারী খাদ্য গ্রহণ
পরিহিত পরিমানে খাদ্য গ্রহণ করা আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য যেমন উপকারী ঠিক তেমনি আমাদের মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্যের জন্যও ভীষণ উপকারী। অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ আমাদের ঘুম পাড়িয়ে দিতে পারে এবং অলস করে দিতে পারে। এই বিষয়টি অবশ্যই আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। এজন্য আমাদের এমন কিছু খাবার গ্রহণ করা উচিত যাতে করে আমাদের মস্তিষ্কের ক্রিয়া কলা আরো বেড়ে যায়।
যেসব খাবারের অধিক পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায় সেগুলো আমাদের মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ইমাম আয যুহরী বলেন, তোমরা প্রতিদিন মধু পান করার অভ্যাস কর এতে করে তোমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।এজন্য আমরা প্রতিদিন মধু খাওয়ার অভ্যাস করতে পারি। কেননা মধুর মধ্যে রয়েছে মুক্ত চিনিকোষ যা আমাদের মস্তিষ্কের গঠনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।আপনি জানলে অবাক হবেন যে মধু পান করার 6 থেকে 7 মিনিটের মধ্যে সেটি আমাদের রক্তে গিয়ে মিশে যায়। স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার হচ্ছে কিসমিস।
৮.পরিমিত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া
আমরা যখন ঘুমায় তখন মস্তিষ্ক অনেকটা ব্যস্ত অফিসের মত কাজ করে থাকে। ঘুমানোর সময় সারাদিনের সংগৃহীত তথ্যসমূহ তখন আমাদের মস্তিষ্কে প্রক্রিয়াজাদ হতে থাকে। এছাড়াও ঘুম আমাদের শরীরের জন্য এতটাই উপকারের চেয়ে ঘুমের সময় আমাদের মস্তিষ্কে কোষের পূর্ণ গঠন হতে থাকেএবং যার ফলে আমাদের ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।
আপনি খেয়াল করলে দেখতে পাবেন যে দুপুরে খাবার পরে আমরা যদি হালকা একটা ভাত ঘুম দেই তাহলে আমাদের মন মস্তিষ্ক ফুরফুরা থাকে। এটি অবশ্য সুন্নাত।এজন্য আমাদের রাত জেগে মোবাইল ল্যাপটপ না চালিয়ে সময়মতো খাওয়া-দাওয়া করে রাতে সঠিকভাবে ঘুমিয়ে আমাদের মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেওয়া উচিত।
৯.অপ্রয়োজনীয় ব্যাপারগুলো ত্যাগ করা
বর্তমানে আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া এবং স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া ও জ্ঞান অর্জনে অনীহা হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে আমরা নিজেদেরকে বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় কাজের জড়িয়ে এবং অহেতুক চিন্তাভাবনা করি সব সময়।যার কারণে আমরা কোন কাজের গভীরভাবে মনোযোগ দিতে পারি না।অহেতুক চিন্তাভাবনার মধ্যে রয়েছে নাচ গান, মুভি দেখা, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া, ফেসবুকিং করা ইত্যাদি। তাই যত সম্ভব আমাদের এসব জিনিস থেকে বিরত থেকে জ্ঞান চর্চা করা উচিত।
১০.হাল না ছেড়ে দেওয়া
অনেক সময় কোন কাজে সফলতার না আসলে আমরা হাল ছেড়ে দেই। কিন্তু এই জায়গাতেই আমরা সবচেয়ে বেশি ভুল করে থাকি।সফলতা ব্যর্থতা নিয়ে আমাদের জীবন । প্রত্যেকটি কাজে সফলতা আসবে বা প্রত্যেকটা কাজে যে ব্যর্থতা আসবে বিষয়টি কিন্তু মোটেও এরকম নয়। এজন্য কোন কাজের শুরু থেকে আমরা হাল ছেড়ে না দিয়ে আল্লাহর উপর করে আমাদের কাজের চেষ্টা চালিয়ে যাব। এতে করে আশা করা যায় আমরা প্রত্যেকটি কাজে সফলতা অর্জন করতে পারব।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার জন্য ব্যায়াম
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার জন্য ব্যায়াম করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এটা আসলেই সত্যি এবং বিজ্ঞান রিচার্জকৃত একটি বিষয় যে, ব্যায়াম করলে আমাদের মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটে। ব্যায়াম করার ফলে আমাদের মস্তিষ্কের সাইন্যাপসিস বা যে অংশে দুটি কোষের নিউরনের মধ্যে স্নায়বিক বৈদ্যুতিক স্পন্দন আদান প্রদান ঘটে সেটা বেড়ে যায়।
যার কারণে আমাদের মস্তিষ্কের যোগাযোগ আরো বেশি হয় এবং সেখানে অতিরিক্ত কোষের সৃষ্টি হয়। আপনি যদি বাসার বাইরে বা খোলা কোন একটা জায়গায় গিয়ে শরীরচর্চা করেন তাহলে সেটি আপনার জন্য আরো বেশি কার্যকর হবে।কারণ যখন আপনি বাইরের বা যাবেন তখন আপনার শরীর ভিটামিন ডি শোষণ করতে পারবে।
ব্যায়াম করার সময় নতুন পরিবেশ ঘুরে দেখুন এবং অন্যান্য মানুষের সাথে মতবিনিময় করুন। এতে করে আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন এবং এর মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্কের নতুন কোর্সগুলোর মধ্যে এক ধরনের সার্কিট তৈরি হবে। আপনার পছন্দের কোন কাজ করতে পারেন যেমন আপনি যদি ফুল পছন্দ করেন তাহলে আপনি একটি বাগান করতে পারেন।এছাড়াও আপনি যদি প্রতিদিন সাইকেল চালান কিংবা সাঁতার কাটতে পারেন তাহলে আপনার মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যাবে এবং এতে করে আমাদের মধ্যে স্বাস্থ্য উন্নতি হবে। ফলে আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত এটা আমাদের প্রত্যেকেরই জানা দরকার।স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সব সময় অনেক রাত্রি ফ্যাটি এসিড যুক্ত খাবার গ্রহণ করার চেষ্টা করতে হবে।ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড জাতীয় মাছ আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির শীর্ষে অবস্থান করছে। সামুদ্রিক মাছের সবচেয়ে বেশি ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে আপনি সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার মাধ্যমে আপনার স্মৃতিশক্তিকে বৃদ্ধি করতে পারেন।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে কফির উপাদান বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কফির মধ্যে রয়েছে ক্যাফেইন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। ক্যাফিন সেবন করার ফলে আমাদের মনোযোগ এবং সর্তকতা অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়। এমনকি এটি আমাদের মস্তিষ্কের ডোপামিনের মত ভাল নিউটোট্রান্সমিটার বৃদ্ধি করতে পারে। যা আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়ক।
- ব্লুবেরি নামক ফল আমরা সকলেই চিনে থাকবো। এই ফলের মধ্যে এমন কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আমাদের মস্তিষ্কের কোষগুলো উন্নত করতে পারে এমনকি আমাদের মস্তিষ্কের মধ্যে কোষগুলো যোগাযোগ ভালো রাখে।এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্থোসায়ানিন নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের মস্তিষ্কে প্রদাহ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- মস্তিষ্কের বৃদ্ধির পাশাপাশি আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে হলুদ। হলুদের মধ্যে রয়েছে কারকিউমিন নামক এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান। এসব উপাদান আমাদের স্মৃতিশক্তিকে বৃদ্ধি করতে পারে।এছাড়াও হলুদ আমাদের মস্তিষ্কের নতুন কোষের বৃদ্ধি ঘটাতে পারে।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে ব্রকলি। এখন শীতকালীন সময়ে এর উৎপাদন অনেক বেশি হয়। অন্যান্য সময় এটা দেখা না গেলেও শীতকালীন সময়ে এটা প্রায় দেখা যায়।ব্রকলির মধ্যে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন কে নামক এক ধরনের উপাদান যা আমাদের মস্তিষ্কে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- যে কোন ধরনের বীজ আমাদের মস্তিষ্কের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সে ক্ষেত্রে কুমড়োর বীজ এক ধরনের সুপার ফুড।যার মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, জিংক,আয়রন, কপার। এসব শক্তিশালী উপাদান আমাদের মস্তিষ্কে ফ্রি রেডিকেলের হাত থেকে রক্ষা করে আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে।
- ডার্ক চকলেট এবং কোকো পাউডার আমরা অনেকেই খেতে পছন্দ করি। এই উপাদান দুইটির মধ্যে রয়েছে ফ্লাভোনয়েড, ক্যাফেইন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। প্রতি ৯০০ জনের বেশি লোকের ওপর গবেষণা করে দেখা যায় যারা ডার্ক চকলেট খাই তাদের স্মৃতিশক্তি অন্যান্য মানুষের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে।
- গবেষণা করে দেখা গেছে নিয়মিত বাদাম খেলে আমাদের মস্তিষ্ক সবল থাকবে এবং আমরা সুস্থ হার্টের অধিকারী হব। বাদামের মধ্যে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যেমন স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য এবং মস্তিষ্কের জন্য ভীষণ উপকারী। ভিটামিন ই আমাদের মস্তিষ্কের ফ্রি রেডিক্যাল ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে। ২০১৪ সালের এক গবেষণা থেকে দেখা যায় একজন লোক বেশ কয়েক বছর ধরে নিয়মিত বাদাম খেয়ে আসছি এবং তার স্মৃতিশক্তি অন্যান্য মানুষের তুলনায় খুবই তীক্ষ্ণ।
- ভিটামিন সি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। শুধু আমাদের স্বাস্থ্য নয় বরং এটি আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য ভীষণ উপকারী।ভিটামিন সি এর সবচেয়ে বড় উৎস হচ্ছে কমলা। কমলার মধ্যে রয়েছে অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং যা আমাদের মস্তিষ্কের কোষ গুলোকে ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এজন্য আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে আমরা নিয়মিত ভিটামিন সি খেতে পারি।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে ডিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। ডিম হল এক ধরনের ফলেট এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি৬, বি১২ এবং কলিং সহ মস্তিষ্কে সুস্বাস্থ্যের সাথে জড়িত বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদানের ভালো একটি উৎস। এটি আমাদের শরীরের মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট নামক এক ধরনের উপাদান বাড়ে আমাদের মন ভালো রাখার পাশাপাশি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- স্মৃতিশক্তি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে গ্রিন টি। এর মধ্যে থাকে অ্যামিনো এসিড যা আমাদের মস্তিষ্কের রক্তের সাথে মিশে নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। যার ফলে আমাদের মস্তিষ্কে আলফা তরঙ্গের সৃষ্টি হয় এবং আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর হয়। এজন্য স্মৃতিশক্তি বাড়াতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান গ্রিন টি খেতে পারি।
পাঠকের শেষ কথা
প্রিয় বন্ধুরা এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ইসলামিক সেরা ১০ টি উপায় এবং ব্যায়াম ও খাবার সম্পর্কে।আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন।তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।আজকে এই পর্যন্তই।
দেখা হবে পরের কোন পোস্টে।আজকের এই পোস্টে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।আর এধরনের আরো আর্টিকেল পড়তে এবং বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে আমার ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url