দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায়

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায় রয়েছে। হয়তোবা আমরা অনেকেই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার ইসলামিক উপায়ে সম্পর্কে জানিনা। দুশ্চিন্তা হচ্ছে মানুষের মন এবং মস্তিষ্কের মধ্যে এক ধরনের উচ্চচাপ। দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির শিকার হয়ে আমরা কখনো কখনো অনেক বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ি।
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায়
অতিরিক্ত বেশি দুশ্চিন্তা করার কারণে আমাদের শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়। যেমন মাথা ব্যথা, বেশি বেদনা এবং আতঙ্ক ব্যাধিসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা। প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে আমি আলোচনা করব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত। জানতে হলে আমার আর্টিকেলে শেষ পর্যন্ত সাথে থাকুন।

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায়

আমরা যারা মুসলিম তাদের জন্য দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক কিছু উপায় রয়েছে। সারা বিশ্বে দুশ্চিন্তা, ডিপ্রেশন বা বিষন্নতার নামক এক ভয়াবহ ব্যাধি বলে স্বীকৃত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন লোক বিষণ্যতা ব্যতিতে ভুগে থাকে যা তাদের অক্ষমতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে দিন দিন।

বাংলাদেশ ও বর্তমানে এই বিষন্নতার রোগী অনেক বেশি বেড়ে যাচ্ছে দিন দিন। তবে এই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি ইসলামিক কিছু উপায় রয়েছে যেগুলো ফলো করার মাধ্যমে আমরা দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে পারি। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি ইসলামিক কিছু কার্যকরী আমলের কথা বলেছেন আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা শায়েখ আহমাদুল্লাহ।

তিনি বলেছেন, দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার সর্বপ্রথম উপায় হচ্ছে আপনাকে ঈমান এবং তাকওয়া মজবুত করতে হবে। যার ঈমান যত দুর্বল সে ততো তাড়াতাড়ি মানুষ এইভাবে ভেঙে পড়বে এবং যার ঈমান যত বেশি শক্তিশালী তাকে দুশ্চিন্তা কম আঘাত করবে। অর্থাৎ দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি ইসলামিক উপায় হচ্ছে সর্বপ্রথম আপনাকে আল্লাহ তাআলার উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে।

 আল্লাহ তাআলার উপর আমাদের ভরসা রাখতে হবে এবং এর মাধ্যমে আমরা সব সমস্যার সমাধান করতে পারবো। এছাড়াও পেরেশানি থেকে মুক্তির জন্য দরুদ পাঠ করতে হবে, জিকির করতে হবে, ইস্তেগফার পাঠ করতে হবে এবং দোয়ায়ে ইউনুস আমল করতে হবে। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির সর্বোত্তম ইসলামিক উপায় হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি ইসলামিক একটি দোয়া রয়েছে। দোয়াটি হচ্ছেঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুজনি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল আজজি ওয়াল কাসালি, ওয়া আউযুবিকা মিনাল জুবনি ওয়াল বুখলি,ওয়া আউজুবিকা মিন গলাবাতিন দাইনি ওয়া কহরির রিজাল।এর অর্থ হচ্ছে হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে দুশ্চিন্তা এবং অস্থিরতা থেকে মুক্তি এবং আশ্রয় চাচ্ছি।

আমি আশ্রয় চাই অক্ষমতা এবং অলসতা থেকে। আপনার কাছে আমি আশ্রয় চাই ভীরুতা এবং কার্পণ্য থেকে, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই ঋণের বোঝা ও মানুষের রোশানল থেকে।এছাড়াও আপনি ভোর রাতে তাহাজ্জুদের সময় চোখের পানি ফেলে আল্লাহর কাছে দোয়া চাইবেন। দোয়ার মাধ্যমে অনেক কিছু পরিবর্তন করা সম্ভব।

দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা অসাধ্যকে সাধন করে দিবেন ইনশাল্লাহ। আবু সাঈদ আল খুদরি রাদিয়ালাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত রয়েছে,তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতে প্রবেশ করেন সেখানে আবু উমামা নামক এক আনসারী সাহাবীকে দেখতে পেয়ে তিনি বলেন হে আবু উমামা কি ব্যাপার!

আমি তোমাকে নামাজের ওয়াক্ত ছাড়া মসজিদে দেখছি যে? তিনি উত্তরে বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ আমার সীমাহীন দুশ্চিন্তা এবং ঋণের বোঝা থাকার কারণে।অর্থাৎ এটা থেকে বোঝা যায় যে যখন আমরা অত্যাধিক বেশি দুশ্চিন্তায় থাকব তখন আল্লাহ তাআলার কাছে বেশি বেশি দোয়া প্রার্থনা চাইতে হবে এবং দোয়া দরুদ পাঠ করতে হবে।

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক আটটি উপায়

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক কিছু উপায় রয়েছে তার মধ্যে আমার আর্টিকেলে আমি কিছু উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করব। মানব জীবনের দুশ্চিন্তা আসবে এটা খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। মানুষের সাথে দুশ্চিন্তা বিষয়টি গভীরভাবে জড়িত। দুশ্চিন্তা যেন একই মুদ্রার এই পাশ ওই পাস।

এই পৃথিবীতে পাওয়া যাবে না।এজন্য জীবনের চলতে গেলে দুঃখ দুর্দশা আসবে এবং আসাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই জন্য বেশি হতাশ হওয়া যাবে না। বরং আল্লাহ তাআলার উপর ভরসা করে প্রতিটি পরিস্থিতিতে জয় করে নিতে হবে।
  • প্রথমত তকদিরের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। একজন মুসলিম হিসেবে আমরা সকলেই জানি আমাদের জন্য যা উত্তম আল্লাহ তাআলা আমাদের সৃষ্টির পূর্ব এ সেগুলো আমাদের ভাগ্যে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এজন্য এই দুনিয়াতে আমাদের ভালো খারাপ দুটি আমাদের তকদির থেকে আসে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেছেন,” আল্লাহ তাআলা তোমাদের কষ্ট দিলে তিনি ছাড়া মোচনকারীর আর কেউ নেই।” আর আল্লাহ তাআলার যদি কারো মঙ্গল চান তাহলে সেটা পরিবর্তন করার কেউ নেই।
  • আল্লাহ তাআলার ব্যাপারে সব সময় ভুল ধারণা পোষণ করা।আল্লাহ তাআলা বলেন,” আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার উপর তাওয়াক্কুল করে তার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট।” হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন, আমি সে রকম যেরকম বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে। কাজেই আল্লাহ তাআলার উপর সবসময় আমাদের সুধারনা রাখতে হবে।
  • নামাজের ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে সর্বোচ্চ। যে কোন বিপদ কিংবা পেরেশানির সময় আমাদের নামাজের বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কঠিন সমস্যা সম্মুখীন হতেন তখন নামাজ আদায় করতেন।এজন্য আমাদের দুশ্চিন্তা মুক্ত করতে সর্বপ্রথম আগে নামাজের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।
  • ইস্তেগফার বেশি বেশি পাঠ করতে হবে।আমাদের মানসিক চাপ কমাতে ইস্তেগফার পাঠ করার কোন জুড়ি নেই। মহান আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন, অতঃপর আমি বলেছি,তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও, তিনি তো মহান ক্ষমাশীল। ফলে তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত করবেন যার কারণে তোমাদের সমৃদ্ধ করবে ধনসম্পদ এবং সমৃদ্ধ করবে সন্তানতি দিয়ে।
  • সব সময় দরুদ পাঠ করা। দরুদ পাঠ করা আল্লাহর রহমত প্রাপ্তির বিশাল মাধ্যম। একদা এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে দরুদ পাঠ করার কথা বললে তিনি বলেন, পেরেশানি দূর হওয়ার জন্য দরুদ পাঠ করায় যথেষ্ট এবং তোমরা পাপের কাফফারার জন্য দরুদ পাঠ করবে।দরুদ শরীফ পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা সেই ব্যক্তির দোয়া কবুল করেন।
  • দুশ্চিন্তায় এবং পেরেশানিতে আমাদের কখনোই উত্তেজিত হওয়া যাবে না। সব সময় আমাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে। পবিত্র কোরআন শরীফ এবং হাদিসের সব সময় ধৈর্য এবং তাওয়াক্কুলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আমাদের। এছাড়াও পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা রয়েছে,”নিশ্চয়ই আল্লাহতালা ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন”।
  • এছাড়াও ইসলাম ধর্মে পরামর্শের গুরুত্ব অনেক। আত্মকেন্দ্রিক মনোভাব পরিহার করে সবসময় অন্য কারোর সঙ্গে পরামর্শ ভিত্তিক কাজ করা ইসলামের শিক্ষা।তবে পরামর্শের সাথে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অবশ্যই নির্ভরযোগ্য মানুষের সাথে করতে হবে।কোন দিকে হাদিস শরীফে এসেছে,” যে ব্যক্তি পরামর্শ কামনা করে সে অকৃতকার্য হয় না”।
  • মানসিক চাপ কমাতে নিয়মিত দোয়া করতে হবে। দোয়া হচ্ছে আমাদের সমস্ত ইবাদতের মূল মন্ত্র। দোয়া করলে আল্লাহ তা'আলা খুশি হন। এছাড়াও আমরা সূরা ইউনুস পাঠ করতে পারি-’ লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জালিমিন।’ এর অর্থ হচ্ছে হে আল্লাহ তুমি ছাড়া আমাদের কোন উপাস্য নেই আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। এই বিশেষ দোয়াটি পড়ার জন্য নির্দেশ করেছেন।

ঘরের অশান্তি থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায়

ঘরের অশান্তি থেকে মুক্তির ইসলামিক কিছু উপায় রয়েছে।কাল পরিবারে অশান্তি এবং ঝগড়া ঝামেলা অনেক বেশি দেখা যায়। শয়তানের মূলমন্ত্রের জন্য মূলত ঘরের অশান্তি হয়ে থাকে।আর শয়তানের ধোঁকা থেকে মুক্ত থাকতে আমাদের সব সময় কিছু আমল করার কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ তা'আলা বলেও দিয়েছেন,’ নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের প্রকাশ্যে শত্রু।’

ব্যক্তি পরিবার কিংবা সমাজ জীবনের প্রত্যেকটি মানুষের সাথে শয়তান হচ্ছে চিরশত্রু।শয়তান আমাদের পরিবারের সব ধরনের সুখ-শান্তি ধ্বংস করে দেয়। এই জন্য ঘরের অশান্তি থেকে মুক্তি ইসলামিক কিছু দোয়া এবং আমল রয়েছে।সেগুলো আমল করার মাধ্যমে আমরা আমাদের পরিবারের শান্তি বজায় রাখতে পারি। সেগুলো হচ্ছেঃ
  • পরিবারের সালামের প্রচলন করা। পরিবারের যেকোনো সদস্য বাহির থেকে ঘরে প্রবেশ করতে পরে অবস্থানরত পরিবারের অন্য লোকদের সালাম দেওয়ার প্রচলন চালু করতে হবে। এটা কুরআন এবং সুন্নাহের নির্দেশ।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,’ যখন তোমরা ঘরে প্রবেশ করবে তখন সালাম দিবে তা তোমাদের জন্য এবং তোমাদের পরিবারের জন্য অবশ্যই বরকতময় হবে’।
  • অবশ্যই বাহির থেকে ঘরের প্রবেশ করার সময় সালাম দিয়ে দোয়া করে ঘরে ঢুকতে হবে। দোয়াটি হচ্ছে,’ বিসমিল্লাহি ওলাজনা ওয়া বিসমিল্লাহি খারাজনা,ওয়া আলাল্লাহি রাব্বিনা তাওয়াককালনা।বাইরে থেকে এসে ঘরে ঢোকার সময় সালাম দিয়ে ঢুকলে বাইরে যত শয়তান আর ভেতরে ঢুকতে পারে না।যার কারণে পরিবারের শান্তি বজায় থাকে।
  • পরিবারের সবাই একসাথে খেতে বসার সময় খাবারের দোয়া পড়ে খাওয়া শুরু করা। হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,’ যখন তোমরা কেউ আহার করো সে যেন বলে বিসমিল্লাহ।’এরপর ডান হাত দিয়ে খাবার খাওয়া শুরু করতে হবে। তারপর আরো একটি দোয়া পড়বেন। দোয়াটি হচ্ছেঃ’আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি হি ওয়া আতইমনা খাইরাম মিনহু।’এছাড়াও যদি কেউ খাবার শুরুতে বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে যায় তাহলে সে যেন বলে-’ বিসমিল্লাহি আওলাহু ওয়া আখিরাহু’
  • সূরা বাকারা তেলাওয়াত করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,’ সবকিছুর একটি চূড়া থাকে।আল কুরআনের চূড়া হচ্ছে সূরা আল বাকারা। শয়তান যখন সূরা আল বাকারার তেলাওয়াত শুনতে পায় তখন সে ওই ঘর থেকে বের হয়ে চলে যায়।’ অর্থাৎ এ থেকে আমরা বুঝতে পারলাম ঘরে সব সময় সূরা বাকারা তেলাওয়াত করার অভ্যাস করতে হবে।
  • অশ্লীল বিনোদন থেকে পরিবারকে হেফাজতে রাখা। নিজ নিজ ঘর এবং পরিবার পরিজনকে প্রাণবানা থেকে মুক্ত রাখতে হবে। গান-বাজনা হচ্ছে শয়তানের আওয়াজ। আল্লাহর জিকির যেমন শয়তানকে দূরে রাখতে সাহায্য করে আওয়াজ কিংবা গান বাজনার আওয়াজ ফেরেশতাগণকে দূরে রাখে।এজন্য ঘরের অশান্তি দূর করতে এবং ঘর থেকে শয়তান দূরে রাখবে ঘরে কখনো গান বাজনার আওয়াজ করা যাবে না।
  • ঘরে কুকুরের প্রবেশ থেকে সাবধান থাকতে হবে। নিজ নিজ ঘরকে কুকুরের প্রবেশ থেকে হেফাজত করতে হবে আমাদের। কেননা হাদিসে এসেছে,সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,’ যে সব ঘরে কুকুর থাকে এবং ছবি থাকে সেই ঘরে কোন ফেরেশতা প্রবেশ করতে পারে না’। এজন্য আমাদের নিজ নিজ ঘরে যে কোন ধরনের মূর্তি এবং কুকুর রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • ঘরে বিভিন্ন জীবজন্তুর মূর্তি এবং ছবি রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে হবে। মুসলমানের উচিত সবসময় মেনে জীবন যাপন করা।সুন্নাতের অনুসরণ এবং অনুকরণ করা। এতে করে আমাদের পরিবার শয়তানের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে এবং আমাদের ঘরের শান্তি বর্ষণ হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম জাতিকে উল্লিখিত বিষয়গুলো যথাযথভাবে আমল করার এবং দোয়া গুলোর মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার তৌফিক দান করুন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য আমাদের কোরআন হাদিসের উপর আমল করার তৌফিক দান করুক,আমিন।উপরিক্ত বিষয়গুলো মেনে চললে আমরা ঘরের অশান্তি দূর করতে পারবো।
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায়

মাথা থেকে খারাপ চিন্তা দূর করার দোয়া

মাথা থেকে খারাপ চিন্তা দূর করার কিছু দোয়া রয়েছে। আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো জানি না আবার অনেকেই জানে।আমাদের মাথায় খারাপ চিন্তা থেকে আসলে মানুষ বিভিন্ন ধরনের অশ্লীলতায় জড়িয়ে পড়ে। যার কারণে আমাদের নিজস্ব এবাদত বন্দেগী নষ্ট হয়ে যায় এবং চরিত্র খারাপ হয়ে যায়। অশ্লীলতার ব্যাপক প্রসার আমাদের সমাজে আস্তে আস্তে গজব নেমে আশার অন্যতম একটি কারণ।

 এজন্য মাথা থেকে খারাপ চিন্তা দূর করতে হবে। মাথা থেকে খারাপ চিন্তা দূর করার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আমাদের দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন। দোয়াটি হচ্ছেঃ’আল্লাহুম্মা ইন্নি আঊজুবিকা মিন শাররি সামঈ ওয়ামিন শাররি বাচারী ওয়া মিন শাররি লিসা-নী ওয়া মিন শাররি ক্বালবী ওয়া মিন শাররি মানিয়্যী।

এই দোয়াটির অর্থ হচ্ছে-’ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কানে মন্দ কথা এবং চোখ দিয়ে মন্দ জিনিস দেখা থেকে আশ্রয় চাই। জিহ্বা দিয়ে মন্দ কিছু বলার থেকে আশ্রয় চাই। এমনকি দেহের কামনা-বাসনার খারাপ চিন্তা থেকেও আশ্রয় চাই।’ আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে অখিলতা এবং খারাপ আসক্তি থেকে পবিত্র থাকার তৌফিক দান করুন আমীন।

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায় সম্পর্কে পাঠকের কিছু প্রশ্ন।

১.মন খারাপ থাকলে কি সূরা পড়তে হবে?

তার যখন মন খারাপ থাকবে তখন কোরআনের কয়েকটি সূরা শুনবেন এবং পড়বেন। সূরা গুলো হচ্ছেঃ সূরা ইয়াসিন, সূরা আর রাহমান,সূরা ওয়াকিয়া,সূরা মূলক।এই কয়েকটি সূরা পড়লেই আপনার মন ভালো হয়ে যাবে।

২.মনকে প্রশান্তি দিবে কোন সূরা?

আমাদের মনকে প্রশান্তি যেতে পারে কোরআনে ৯৩ নাম্বার সূরা ধুহা।এই সূরা পাঠ করার উপকারিতা হচ্ছে এটি আমাদের হৃদয়কে সুস্থ করে তোলে এবং পাঠকের মনের শান্তি দেয়। আর যখনই আপনি ভেতর থেকে মনের অশান্তি বুঝতে পারবেন এবং খুবই অসহায় বোধ করবেন তখন এই সূরাটি মনোযোগ সহকারে পাঠ করুন।

৩.কষ্টে থাকলে কি দোয়া পড়তে হবে?

কেউ যখন কষ্টে থাকে তখন আমাদের এই দোয়া পড়তে হবে-’ লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল ওয়ালা মানজা মিনাল্লাহি ইল্লা ইলাইহি’। পাঠ করার ফলে আল্লাহ আমাদের অন্তর থেকে 70 প্রকারের কষ্ট দূর করে দিবেন।

৪.ভয় পেলে কোন সূরা পাঠ করতে হবে?

ভয় পেলে আপনি এই দোয়াটি পাঠ করবেন-’ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আজিমুল হালিম। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আজিম। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল আরদি ওয়া রাব্বুল আরসিল কারিম।

৫.কোন দোয়া করলে আল্লাহতালা কবুল করেন?

সকল দোয়া আল্লাহ তায়ালা কবুল করে নেন।তবে একটি দোয়া আছে যেটা পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা আমাদের দোয়া কবুল করবেন-’ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির।সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার। ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।

পাঠকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম মোবাইলে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।এছারাও আরও জানলাম ঘরের অশান্তি থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায় এবং মাথা থেকে খারাপ চিন্তা দূর করার দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত।আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন।

তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।আজকে এই পর্যন্তই।দেখা হবে পরের কোন পোস্টে।আজকের এই পোস্টে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।

আর এধরনের আরো আর্টিকেল পড়তে এবং বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে আমার ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url